বরিশাল নদী বন্দরে ঘাট টিকিট কাটাকে কেন্দ্র করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বন্দর টোল গার্ডদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ শিক্ষার্থীকে মারধর করে কান ধরে উঠবস করানোর অভিযোগে পাওয়া গেছে। আহতরা হলেন- ম্যানজমেন্ট ডিপার্টমেন্টের ইমরান হোসেন, ইতিহাস বিভাগের ইমরান, আরিফ ও ঢাকা তিতুমীর কলেজের ছাত্র রাকিবুল ইসলাম।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ছাত্রদের জড়ো করে রাত ১১টা পর্যন্ত নদী বন্দরে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগান দিতে থাকে। খবর পেয়ে কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আহত ইমরান হোসেন বলেন, আমাদের বন্ধু রাকিবুল ইসলামকে বিদায় দিতে রাত ৮টার দিকে নদী বন্দরে আসি। এ সময় ইতিহাস ও সভ্যতা বিভাগের ছাত্র আরিফুর রহমান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের ইমরান ছিল। ঢাকায় যে যাবে তার জন্য প্রবেশ টিকিট ক্রয় করি। তবে কাউন্টারে থাকা টোল গার্ড মাইনুলসহ চারজনের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয়। এ ঘটনায় তারা আমাদের মারধর করতে করতে বন্দর ভবনের দ্বিতীয় তলায় নিয়ে যায়। সেখানে একটি রুমে আটকে রেখে মারধর ও কানে ধরে উঠবস করায়। বিষয়টি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা টের পেয়ে রাত ৯টার দিকে নদী বন্দরে এসে প্রতিবাদ জানায়। মারধরে আহত তিতুমীর কলেজের ছাত্র রাকিব বলেন, আমি ঢাকায় যাওয়ার জন্য বরিশাল নদী বন্দরে এসেছিলাম। আমাকে এগিয়ে দিতে আমার তিন বন্ধু এসেছিলে। এসময় কাউন্টারের লোকজন টিকিট না ছিঁড়ে তা পকেটে ঢুকাচ্ছিল। এ নিয়ে প্রতিবাদ করলে আমাদের মারধর করে ও কান ধরে উঠবস করায়। বিষয়টি সহপাঠীদের জানালে তারা এসে এর প্রতিবাদ জানায়।
অভিযুক্ত টোল গার্ড মাইনুল ইসলাম বলেন, আমি গিয়ে দেখি কাউন্টারের স্টাফ জাকিরের সঙ্গে ছাত্রদের মারামারি চলছে। এরপর সবাইকে নিয়ে ওপরে যাই। পরে তাদের বুঝিয়ে আমি পাঠিয়ে দিয়েছি। আমার সঙ্গে কারও ঝামেলা হয়নি। তারপরও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ছাত্রদের কাছে হাতজোড় করে মাফ চেয়েছি। বরিশাল নদী বন্দর কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিষয়টি শুনেছি, ঘটনাস্থলে এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছি। যারা অপরাধ করেছে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে। শিক্ষার্থীরা যখন বন্দরে যাতায়াত করবে তখন তারা আইডি কার্ড দেখিয়ে টোল ছাড়াই চলাফেরা করতে পারবে।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. খোরশেদ আলম বলেন, ঘটনা শুনে আমি তাৎক্ষণিক বন্দরে গিয়ে সেখানকার কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি বলেছেন- ‘শিক্ষার্থীরা বন্দরে প্রবেশ করার সময় আইডি কার্ড দেখালে তারা ফ্রিতে ঢুকতে পারবেন। হামলার ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, নদী বন্দরের স্টাফরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছে। এছাড়া তারা বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কেও কটুক্তি করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার ফজলুল করিম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বন্দর গার্ডদের অনাকাঙ্ক্ষিত একটি ঘটনা ঘটেছে। সেখানে উত্তেজনাকর পরিস্থিত সৃষ্টি হয়েছিল। বিষয়টি এখন সমাধান হয়েছে।