গাজীপুরে নকল, ভেজাল শিশু খাদ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করায় দশ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এসময় বিপুল পরিমাণ শিশু খাদ্য, কাঁচামালসহ বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল জব্দ করা হয়।
বুধবার (২৯ মার্চ) দুপুরে গাজীপুরের নলজানি এলাকায় বিআরটি মাঠে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি, মিডিয়া) মোহাম্মদ ইব্রাহিম খান। এসময় গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মোঃ মাহবুবুজ্জামান, সহকারী উপ-পুলিশ কমিশনার মো. ফয়েজুর রহমান, গাছা থানার ওসি ইব্রাহিম হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলো, মোঃ ইসমাইল হোসেন (৩১), মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান কুদ্দুস (৪৭), মোঃ খাইরুল ইসলাম বুলবুল (৪০), মোঃ মোশারফ হোসেন (২৫), মোঃ রবিউল (৪৮), মোঃ মাসুদ রানা (২৫), মোঃ রফিকুল ইসলাম (৪০), মোঃ খবির উদ্দিন (৪৫), মোঃ জীবন রহমান (৪০), মোঃ হাফিজুর রহমান (৩২)।
গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার ইব্রাহিম খান জানান, জুস খেয়ে শিশুদের পেটের ব্যাথা ও বমি হয় এ ধরনের তথ্য পেয়ে গাজীপুর মহানগরের কামারজুড়ি এলাকার একটি দোকান থেকে বিএসটিআই’র অনুমোদনহীন ফ্রুটিনা জুস, লিচি ড্রিংক, অরেঞ্জ ড্রিংক ও আইস ললি উদ্ধার করে গাছা থানা পুলিশ। পরে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিদের্শনায় ডিপোর মালিক ইসমাইলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সে জানায়, মোস্তাফিজ নামের এক ব্যক্তি অনুমোদনহীন এই সমস্ত পণ্যের বিতরণকারী ও উৎপাদনকারী। পরে মোস্তাফিজকে ডেকে আনে ইসমাইল এবং তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে মোস্তাফিজের দেয়া তথ্যমতে তার সহযোগী খাইরুলকে তার বাসা থেকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, সাভারের আশুলিয়ায় আটক মোস্তাফিজের একটি কারখানা রয়েছে এবং এই সব নকল ও ভেজাল শিশুখাদ্য পানীয় নিজেই সেখানে উৎপাদন ও বাজারজাত করে।
এছাড়াও ঢাকার বসিলা, বেরাইদ ও শনির আখড়ায় আরও তিনটি কারখানার সন্ধান পায় পুলিশ। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও স্থানীয় পুলিশের সহায়তায় ওই সব জায়গা থেকে ভেজাল ও নকল পণ্য জব্দ করা হয়। এসময় মালিক, কেমিস্ট, ম্যানেজার ও কর্মচারীসহ সর্বমোট দশ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
এসময় ৭ হাজার ৪৮২লিটার ম্যাংগো জুস, ৪হাজার ৯৬৯লিটার অরেঞ্জ ও লিচি ড্রিংক, ৩৯৫বয়াম ক্যান্ডি, ২হাজার ৫০০ পিস আচার ক্যান্ডি, আইস ললি, বিভিন্ন ধরনের প্যাকেজিং লেভেল, খালি বয়াম, জুস কন্টেইনার, মেশিনারিজ, কেমিকেল, প্রির্জাভেটিব, কৃত্রিম রং, ফ্লেভার ও খালি পলিপ্যাক জব্দ করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, এবিষয়ে গাছা থানায় পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) উত্তম কুমার সূত্রধর বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। আসামীদের আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।