কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি:
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার ঢাকা-টাঙ্গাইল ও টাঙ্গাইল-গাজীপুর মহাসড়কে ফুটপাত ও সার্ভিস লাইন দখল করে চলছে রমরমা বাণিজ্য। পায়ে হাটা রাস্তা ফুটপাতে বিভিন্ন ধরনের দোকান ও বাজার বসানোর ফলে মানুষ বাধ্য হয়ে মহাসড়কে চলাচল করছেন।
অপরদিকে সার্ভিস লাইনগুলোতে ছোট আকারের যানবাহন চলার কথা থাকলেও বিভিন্ন ধরনের গাড়ি পার্কিং এবং দখল করে দোকানপাটসহ বাজার বসানোর কারণে বাধ্য হয়ে মোটরসাইকেল, বাইসাইকেল, সিএনজি ও অটো রিক্সার মত ছোট ছোট যানবাহনগুলো মহাসড়কে উঠে যাতায়াত করছে। এতে হর হামেশাই দুর্ঘটনার স্বীকার হচ্ছে পথচারী ও অসহায় মানুষ। এতে সন্তান হারাচ্ছে তার বাবাকে, স্ত্রী হারাচ্ছে তার স্বামীকে ও অনেক মায়ের কোল হচ্ছে শূন্য। সচেতন মহল বলছেন, এই দুর্ঘটনার দায় কে নিবে, প্রশাসন না দখলদাররা?
বারবার মহাসড়ক দখল ও সার্ভিস লাইনে গাড়ি পার্কিং নিয়ে কথা উঠলেও এ ব্যাপারে উল্লেখযোগ্য কোন ভূমিকা নেই প্রশাসনের, নেই কোন নজরদারি। সুধীজনরা বিভিন্ন প্রশ্ন করে বলেন, এ ব্যাপারে কেন প্রশাসনের এত উদাসীনতা? এসব দখলের নেপথ্যে কারা? মহাসড়ক দখল ও সার্ভিস লাইনে গাড়ি পার্কিং নিষেধাজ্ঞায় স্থায়ী কোনো সমাধান হচ্ছে না কেন?
কালিয়াকৈর একটি শিল্প অদ্যুষিত এলাকা হওয়ায় এই উপজেলা ছাড়াও বাহিরের অনেক লোকের বসবাস এখানে। নিয়ম অনুযায়ী বিভিন্ন কোম্পানি ও দপ্তরসহ কারখানাগুলোর বেতন প্রায় প্রতি মাসের ১ থেকে ১৫ তারিখের মধ্যে প্রদান করা হয়। এ জন্য মাসের ১ থেকে ১৫ তারিখের মধ্যে ফুটপাতের এসব দোকানে উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। এসময় পথচারীদের বিরক্তি আরো বেড়ে যায়।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় উপজেলার মহাসড়কে বোর্ডঘর, সূত্রাপুর, চন্দ্রা, পল্লী বিদ্যুৎ, হরিণহাটি, এপেক্স গেট, সফিপুর ও মৌচাক সহ বিভিন্ন পয়েন্টে ফুটপাত ও সার্ভিস লাইন দখল করে বাজার, দোকানপাট ও গাড়ি পার্কিং করতে দেখা গেছে।
ফুটপাত দখল করে দোকান ও বাজার বসানোর বিষয়ে জানতে চাইলে এক কাপড় বিক্রেতা দোকানদার জানান, স্থানীয় নেতাকর্মী ও প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই এখানে দোকানপাট করা হয়েছে। প্রতিদিন আমাদের প্রতি দোকান হতে ৫০-২০০ টাকা চাঁদা দিতে হয়।
এ ব্যাপারে অটোরিক্সা চালক আবুল হোসেন বলেন সার্ভিস লাইন বন্ধ থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমাদের বাধ্য হয়ে মহাসড়কে উঠতে হয়। আর মহাসড়কে উঠলে মাঝে মাঝেই বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটছে মারা যাচ্ছে অনেক মানুষ। আর অনেক সময় আমাদের মহাসড়কের উপর দেখলে পুলিশ কেস করে দেয় সেক্ষেত্রে আমাদের একটি কেস ভাঙ্গতে ২৬০০ করে টাকা লাগে। যা আমাদের প্রায় পাঁচ দিনের উপার্জন। এ ব্যাপারে যদি প্রশাসন নজর দিত সেক্ষেত্রে আমাদের মহাসড়কে যেতে হতো না এবং দুর্ঘটনার কবলেও পড়তাম না জরিমানাও গুনতে হতো না।
পথচারী পোশাক শ্রমিক নাজমুল হোসেন বলেন, ফুটপাত দখল করে যেভাবে বাণিজ্য করছে এতে আমাদের রাস্তায় চলাচল অনেক অসুবিধা হয়। বাধ্য হয়ে আমাদের মহাসড়কে হেঁটে চলাচল করতে হয়। এতে অনেক সময় যানবাহনের সাথে মুখোমুখি হয়ে বড় বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। এমনকি মানুষের জীবনও চলে যাচ্ছে। ফুটপাতে বাজার ও দোকানপাট বন্ধ করে নির্দিষ্ট একটি জায়গায় এদের ব্যবস্থা করে দিলে বড় ধরনের কোন দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকবে না।
এ ব্যাপারে সালনা হাইওয়ে থানার ওসি মো. আতিকুর রহমান জানান, আমি এখানে নতুন যোগদান করেছি। যাই হোক ফুটপাতে কোন ধরনের দখল বা চাদাবাজি হতে দেয়া হবে না। আমরা এ ব্যপারে কঠোর ভূমিকায় থাকবো। কিছু দিনের মধ্যে আমরা ফুটপাত দখল মুক্ত করতে অভিযান পরিচালনা করবো এবং এ অভিযান অব্যহত থাকবে।