ফুলবাড়ী (দিনাজপুর)
থেকে অমর চাঁদ:
আশানুরুপ লাভের
আশায় আগাম আলু চাষে ঝুঁকে পড়েছেন দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার আলু চাষিরা। আলু চাষ নিয়ে
সকাল থেকে সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত জমিতেই ব্যস্ত সময় পার হচ্ছে আলু চাষিদের।
গতকাল শনিবার সকালে সরেজমিনে উপজেলার শিবনগর ইউনিয়নের গঙ্গাপ্রসাদ, আলুর ডাঙ্গা ও নূরপুর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বেশ কয়েকজন আলু চাষি পাওয়ার টিলার দিয়ে হালের মাধ্যমে গোবর সার, পটাশ ও ফসপেট মিশিয়ে জমিতে ছিটিয়ে ক্ষেত আলু চাষের উপযোগী করছেন। জমি তৈরি করে কেউ কেউ আলু বীজ জমিতে লাইন করে বোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন। নারী ও পুরুষ কৃষি শ্রমিকরা দলঁবেধে জমিতে কাজ করছেন। এদের মধ্যে কয়েকজন আলু বীজ বোপণের জন্য লাইন টানছেন, আবার একদল লাইনে লাইনে আলু বীজ বোপন করছেন।
উপজেলার শিবনগর ইউনিয়নের গঙ্গাপ্রসাদ গ্রামের আলু চাষি তারেক রহমান বলেন, দুই বিঘা জমিতে ক্যারেট জাতের আলু চাষের জন্য আলু বীজ বোপণ করছেন। এজন্য দুইজন নারীসহ ১২ জন কৃষিশ্রমিক কাজ করছেন। এদের দিন মজুরি পুরুষদের ৫০০ টাকা এবং নারীদের ৩০০ টাকা।
এতে এক বিঘা জমিতে আলু চাষের জন্য প্রায় ১৩ থেকে ১৪ মণ আলুর বীজ প্রয়োজন হয়। বর্তমান বাজারে প্রতিমণ আলুর বীজ কিনতে হচ্ছে এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ১২০ টাকা মণ দরে। এক বিঘা জমিতে আলু চাষে খরচ হয় ২২ থেকে ২৫ হাজার টাকা। তবে প্রাকৃতিক কোন প্রকার দুর্যোগ না হলে প্রতি বিঘা জমিতে এলাকা ভেদে ৭৫ থেকে ৮০ মণ উৎপাদন হবে। এতে আগাম আলু আগামী দুই মাসের মধ্যে বাজারে উঠানো সম্ভব হবে। আগামী আগ্রহায়ণ মাস আলু চাষের মৌসুম হলেও দাম বেশি পাওয়ার আশায় চাষিরা আশ্বিন মাসেই আগাম আলু চাষে ঝুকে পড়েছেন।
একই এলাকার আলু চাষি মো. বাবু বলেন, প্রতি বছর তিন বিঘা জমিতে আগাম আলু চাষ করেন। রোপা আমন ধান কাটাই মাড়াই শেষ করেই আলু চাষ শুরু করেন। আগাম আলু চাষে উৎপাদিত আলুর দাম বেশি পাওয়া যায়। প্রথম দিকে নতুন আলু প্রকারভেদে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা যায়। আগ্রহায়ণ মাসেই আগাম জাতের আলু বাজারে তুলতে পারবেন বলে আশা করছেন। আগাম আলু চাষের বিষয়ে কৃষি বিভাগের কোন কর্মকর্তা-কর্মচারিকে মাঠে দেখা না গেলেও বীজ ও কীটনাশক কোম্পানীর লোকজন সব সময় পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে থাকছেন।
উপজেলা কৃষি
কর্মকর্তা কৃষিবিদ রুম্মান আক্তার বলেন, চলতি আলু চাষ মৌসুমে উপজেলায় এক হাজার ৯৯৪
হেক্টর জমিতে জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরমধ্যে প্রতি হেক্টরে
উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৩ মেট্রিক টন। এতে মোট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা
ধরা হয়েছে ৪৫ হাজার ৮৬২ মেট্রিক টন আলু। লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য কৃষি বিভাগ থেকে
চাষিদের সার্বিক পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।