আজঃ বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪
শিরোনাম

ফতুল্লায় নিজের শরীরে আগুন ধরিয়ে প্রবাসীর আত্মহত্যা

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৪ অক্টোবর ২০২২ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৪ অক্টোবর ২০২২ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় নিজের শরীরে আগুন দিয়ে হানিফ (৪৫) নামে এক ইতালি প্রবাসী আত্মহত্যা করেছেন। রবিবার রাতে এঘটনা ঘটে। ওইসময় তাকে উদ্ধার করে দ্রুত শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হলে সোমবার রাতে তার মৃত্যু হয়।

নিহত হানিফ মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহজং উপজেলার ৩নং ওয়ার্ডের কাজির পাগলা এলাকার জয়নাল শেখের ছেলে। এবিষয়ে নিহতের ভাই ও নিহতের শশুরবাড়ির লোকজনসহ ঘটনাস্থলে যাওয়া পুলিশ অফিসারও তথ্য দিতে অনিহা প্রকাশ করেছেন।

তবে এলাকাবাসী জানান, পঞ্চবটি কলোনীর মোসলেহ উদ্দিনের মেয়ে তানিয়া আক্তারকে ১৪ বছর পূর্বে বিয়ে করেন হানিফ। তাদের সংসারে ৭ বছর বয়সের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর হানিফ ইতালি চলে যান। কয়েক বছর পরপর তিনি দেশে আসতেন। এবারও দেড় বছর পূর্বে হানিফ ইতালি থেকে দেশে ফেরেন। কিন্তু তার স্ত্রীর সঙ্গে দেড় বছরেও একবার সরাসরি সাক্ষাৎ হয়নি। এক পর্যায়ে তার শিশু সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে যেতে চাইলে শশুরবাড়ির লোকজন বাধা দেয়। এনিয়ে বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে হানিফ শশুরবাড়িতেই নিজের শরীরে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে তার পুরো শরীর দগ্ধ হয়। তখন আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হানিফকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

নিহতের ভাই কামাল হোসেন বলেন, আজ কিছুই বলবো না। সময় হলে বলবো বলে ফোন কেটে দেয়। এবিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার এসআই আনোয়ার হোসেন মোল্লা জানান, বিষয়টি তদন্ত করে বলতে পারবো। লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।

এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফতুল্লা মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ রিজাউল হক বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এবিষয়ে মামলা হবে।


আরও খবর



সমুদ্রপথ নিরাপদ করার লক্ষ্যে কাজ করছে বাংলাদেশ: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী

প্রকাশিত:সোমবার ১৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ১৫ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

বাণিজ্যিক জাহাজগুলো যাতে বিভিন্ন সংকটের সময়ে নিরাপদে চলাচল করতে পারে সে লক্ষ্য বাস্তবায়নে বাংলাদেশ কাজ করছে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক নৌসংস্থার (আইএমও) নির্বাচিত সি ক্যাটাগরির সদস্য। ১৭৪টি দেশ আইএমওর সদস্য। কীভাবে সমুদ্রপথ  নিরাপদ করা যায় সেলক্ষ্যে আমরা একটি প্রস্তাব তৈরির কাজ করছি।

রবিবার (১৫ এপ্রিল) ঈদের পর প্রথম কর্মদিবসে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, শিগগিরই সেটি (প্রস্তাব) আইএমওতে পাঠানো হবে। কারণ বাণিজ্যিক জাহাজগুলো যদি সংকটের সময়ে চলাচল করতে না পারে তাহলে বিশ্ব বাজারে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়, অস্থিরতা বেড়ে যায়।

ঈদ ও নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময়ের পাশাপাশি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল ২৩ জন নাবিককে নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনা। এবং সেটি সম্ভব হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবসময় এ বিষয়ে সজাগ ছিলেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, নৌপরিবহন অধিদপ্তর, আন্তর্জাতিক নৌ উইংগুলো কাজ করেছে। দ্রুত আমরা নাবিকদের মুক্ত করতে পেরেছি। এ ক্রেডিট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।

ব্যাগে করে মুক্তিপণ দেওয়ার ছবি দেখা গেছে-দৃষ্টি আকর্ষণ করলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এটা কোন সিনেমার ছবি আমি তো জানি না। ‌ এমন ছবি তো আমরা অনেক চলচ্চিত্রে দেখি। কোন ছবি কোথায় গিয়ে কিভাবে যুক্ত হয়েছে, কোনটার সঙ্গে কোনটা এডিট হয়েছে আমি জানি না।

তিনি বলেন, জানতাম পরিত্যক্ত জিনিস পানিতে ফেলে। এত দামি জিনিস পানিতে ফেলে জানা ছিল না।

জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া জাহাজটি এখন দুবাইয়ের উদ্দশে যাচ্ছে জানিয়ে নৌপ্রতিমন্ত্রী বলেন, সেটি ১৯ বা ২০ এপ্রিল দুবাইয়ে পৌঁছাবে। এরপরের পুরো বিষয়টি জাহাজ এবং নাবিকদের সঙ্গে সমঝোতার বিষয়। নাবিকরা কত দিনের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়ে গেছে, সেই চুক্তি তারা বহাল রাখবে, না কি তারা ফিরে আসবে।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী আরও বলেন, তবে মালিকরা গতকালকে খুব ভালো একটি কথা বলেছে। আমি শুনেছি, তারা যদি চায় বাংলাদেশে ফিরে আসবে। তাদেরকে বিমানযোগে বাংলাদেশের নিয়ে আসা হবে। সেখানে তাদের রিপ্লেস যারা হবে। সেটা নিয়েও হয়তো তারা কাজ করছে।

ঈদের দিন ঢাকার সদরঘাট লঞ্চের রশি ছিঁড়ে পাঁচজন নিহত হওয়ার বিষয় নিয়ে কথা বলেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, এ ঘটনায় সার্ভেয়ারদের দুর্বলতা থাকলে তাদেরও শাস্তির আওতায় আনা হবে।  অভ্যন্তরীণ নৌপথে যতগুলো ঘটনা ঘটেছে, সেটা সদরঘাট হোক, ভোলায় হোক, চাঁদপুরে হোক, বরিশালে হোক, মাঝ নদীতেই হোক না কেন- প্রত্যেকটার আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। বিভিন্ন ধরনের পানিশমেন্টগুলো হয়।

তিনি বলেন, ঈদের দিন আমরা উৎসবমুখর ছিলাম। ‌ সেখানে এই ধরনের একটি ঘটনা ঈদের আনন্দকে ম্লান করে দিয়েছে। জাহাজের সঙ্গে যুক্ত ছিল অনেকে কিন্তু পালিয়ে গেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে। একটা মামলা হয়েছে। তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা এই জায়গাটায় খুবই শক্ত আছি। যারা দোষী তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতিমধ্যে রুট পারমিট বাতিল করা হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, অনেক লঞ্চ গতি ও শক্তি নিয়ে সেখানে ঢোকার চেষ্টা করে। এটা সব লঞ্চ করে, ব্যাপারটা তা নয়। বিশেষ বিশেষ কিছু লঞ্চ করে, শক্তিশালী কোন মালিক থাকলে তাহলে এটা করে। আমরা সেটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। এই জায়গাটায় আমাদের জিরো টলারেন্স।


আরও খবর



তাপমাত্রা বাড়তে পারে তিন বিভাগে

প্রকাশিত:বুধবার ০৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০৩ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

দেশের তিন বিভাগে তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তর। আজ বুধবার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, তাপপ্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেড়েছে। এতে রাজশাহী, ঢাকা ও খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এই তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে।

গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় চুয়াডাঙ্গায়, ৩৮ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন সোমবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল মোংলা ও ঈশ্বরদীতে ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন সোমবার রাজধানীর তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশীদ গতকাল জানান, বুধবার তাপমাত্রা মঙ্গলবারের মতোই থাকতে পারে। তবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার তাপমাত্রা আবার বাড়তে পারে।


আরও খবর



দুপুরের মধ্যে ঝড়ের আশঙ্কা, নদীবন্দরে সতর্ক সংকেত

প্রকাশিত:সোমবার ০১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ০১ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

দেশের পাঁচ জেলায় সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের আশঙ্কা করছে আবহাওয়া অফিস। সেই সঙ্গে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। সোমবার (০১ এপ্রিল) দুপুর ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য দেওয়া এক পূর্বাভাসে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ খো. হাফিজুর রহমানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ এবং সিলেট জেলার ওপর দিয়ে পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এ সময় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। তাই এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এদিকে, আবহাওয়া অফিসের অপর এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তার কাছাকাছি এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। এ অবস্থায় আগামী কয়েক দিন দেশের বিভিন্ন স্থানে অস্থায়ী দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে।


আরও খবর



মর্গ থেকে মরদেহ বাড়িতে নেওয়ার টাকাও নেই ইকবালের পরিবারের

প্রকাশিত:বুধবার ০৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০৩ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জেলা প্রতিনিধি

Image

একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে ষাটোর্ধ্ব মা সুফিয়া বেগম এখন নির্বাক। ঢাকায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া শ্রমিক ইকবাল হোসেনের মৃত্যুতে শুধু কাঁদছেন আর বুক চাপড়াচ্ছেন মা। মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) ঘটনাটি জানার পর থেকেই কোনো দানাপানি মুখে নেননি তিনি। ছেলে যে আর ফিরবে না এটা বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না তিনি। কথা ছিল ঈদের ছুটিতে ছেলে বাড়িতে আসবে। সেই আসা আসবেই। কিন্তু জীবিত নয়, লাশ হয়ে।

সাভারে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে ইউটার্ন নির্মাণের জন্য সড়কে রাখা সিমেন্টের পিলারের সঙ্গে ধাক্কা লাগায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায় একটি তেলবোঝাই লরি। এ সময় তেল বোঝাই লরিটিতে আগুন জ্বলে উঠে। এ সময় পাশে এবং পেছনে থাকা একটি প্রাইভেটকারসহ আরও চারটি গাড়িতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান সিমেন্টবোঝাই ট্রাকের লেবার ইকবাল হোসেন। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় ৮ জনকে উদ্ধার করে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়।

নিহত ইকবালের বাড়ি যশোরের চৌগাছা উপজেলার সুখপুকুরিয়া ইউনিয়নের বর্ণি গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে। বর্তমানের ইকবালের নিথর দেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গের হিমঘরে রাখা হয়েছে।

হতদরিদ্র পরিবারের ইকবাল বাবা-মায়ের একমাত্র ছেলে। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। গ্রামে দীর্ঘদিন ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন তিনি। কিন্তু ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ায় বছর খানেক আগে বৃদ্ধ মা, স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে পাড়ি দেন রাজধানী ঢাকার সাভারে। সেখানে বিভিন্ন পরিবহনে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। স্ত্রী মঞ্জুয়ারাও স্থানীয় একটি গার্মেন্টসে চাকরি করতেন।

১০ দিন আগে পাঁচ বছর বয়সী ইকবালের ছোট মেয়েকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি চৌগাছায় আসেন মা সুফিয়া বেগম। কথা ছিল ঈদের দুইদিন আগে ছুটি নিয়ে স্ত্রী ও বড় মেয়েকে নিয়ে গ্রামে আসবেন। কিন্তু ঈদের ছুটিতে নয়, জীবনের মতো ছুটি নিয়ে ফিরছে ইকবালের নিথর দেহ।

ইকবালের মা সুফিয়া বেগম আহাজারি করতে করতে বলেন, আমার ছেলেটা জন্ম থেকেই কষ্ট করেছে। অনেক দেনাদায়ে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল। তাই বছর খানিক আগে তার উপার্জনের ভ্যানটা বিক্রি করে সবাইরে নিয়ে ঢাকায় গেছিল। সেখানে একটা বস্তিতে বাসা ভাড়া নিয়ে সবাই একসঙ্গে থাকছিলাম। আমিও সেখানে থাকি। ঈদে আমাদের সবার গ্রামে আসার কথা ছিল, কিন্তু ঈদের সময় গাড়ি পাওয়া যায় না। তাই ইকবালের ছোট মেয়েডারে নিয়ে আমি ১০ দিন আগে গ্রামে এসেছি। ঈদের দুইদিন আগে ইকবাল তার বউ মেয়েরে নিয়ে গ্রামে আসার কথা ছিল।

ইকবালের ছোট মেয়েকে কোলে নিয়ে বুক চাপড়াতে চাপড়াতে তিনি বলেন, ও আল্লাহ আমরা ইকবালরে কই নিয়ে গেলা। ইকবালের বদলে আমারে নিতে পারতা। এখন আমাদের কী হবে। তার বউ বাচ্চাদের কী হবে। এই তোমার বিচার?

মঙ্গলবার বিকেলে ইকবালের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে আত্মীয়-স্বজনের মাতম চলছে। তাদের কান্নায় প্রতিবেশী ও উপস্থিত কেউই কান্না ধরে রাখতে পারছিলেন না। সবাই তার ছোট মেয়েটার দিকে তাকিয়ে আছেন। তাকে ঘিরেই নানা সান্ত্বনা দিচ্ছিলেন ইকবালের প্রতিবেশী স্বজনেরা।

ইকবালের প্রতিবেশী স্থানীয় স্কুলশিক্ষক আরিফুজ্জান বলেন, ইকবালরা দুই ভাইবোন। তার একটা বোন, বিয়ে হয়ে গেছে। হতদরিদ্র পরিবারে ইকবালই উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন। দেনার কারণে সপরিবারে ঢাকায় গেছিলেন। কিন্তু তার সেই দেনা পরিশোধ হওয়ার আগেই মৃত্যু হলো। এখন তার পরিবারের কী হবে?

তিনি জানান, ইকবালের মরদেহ বর্তমানে ঢাকা মেডিকেলের মর্গে রয়েছে। বুধবার ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ চৌগাছায় আসবে। তার মরদেহ আসার প্রেক্ষিতে জানাজার সময় চূড়ান্ত হবে। তবে এত টাকা খরচ করে ইকবালের মরদেহ গ্রামে আনার সক্ষমতাও নেই তার পরিবারের।

স্থানীয় সুখপুকুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম বলেন, পরিবারটি নিঃসন্দেহে অসহায়। একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলে ছিল ইকবাল। এখন পরিবারটি আরও অসহায় হয়ে পড়লো। পরিবারের খোঁজ খবর নিয়েছি। আমরা তাদের পরিবারের পাশে থাকবো। স্থানীয় বিত্তবান মানুষদের ইকবালের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ করছি।


আরও খবর



শুরু হলো শবে কদর তালাশের দশক

প্রকাশিত:রবিবার ৩১ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ৩১ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

পবিত্র রমজান শুরুর পর ইতোমধ্যে প্রথম দুই দশক অর্থাৎ, রহমত ও মাগফিরাত শেষ হয়েছে। আজ থেকে শুরু হয়েছে নাজাতের দশক। এই নাজাতের দশকে এমন একটি রাতের কথা বলা হয়েছে, যেই রাতের ইবাদত হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও উত্তম। কারণ, এ রাতেই প্রথম পবিত্র মক্কার হেরা পর্বতের গুহায় মহান আল্লাহ মুহাম্মাদ (সা.)-এর কাছে পবিত্র কোরআন নাজিল করেন।

আল্লাহ তাআলা বলেন, আমি একে (কোরআন) নাজিল করেছি কদরের রাতে। আপনি কি জানেন মহিমাময় কদর রজনী কী? মহিমান্বিত কদর রজনী হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। (সুরা কদর: ১-৩)

সাধারণত কদর রজনী শেষ দশকে হওয়াই বিশুদ্ধ অভিমত। হজরত আবু সালামা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আবু সায়িদকে জিজ্ঞেস করেছি, সে আমার বন্ধু ছিল। তিনি বলেন, আমরা নবী করিম (সা.) এর সঙ্গে রমজানের মধ্য ১০ দিন ইতিকাফে ছিলাম। তিনি ২০ তারিখ সকালে বের হন এবং আমাদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। ভাষণে বলেন, আমাকে কদরের রজনী দেখানো হয়েছিল, অতঃপর ভুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাই তোমরা তা শেষ ১০ দিনের বেজোড় রাতগুলোতে তালাশ করো। আমি নিজেকে মাটি ও পানিতে সিজদা করতে দেখেছি। তাই যারা রাসুলের সঙ্গে ইতিকাফে ছিল, তারা যেন ফিরে আসে। তখন আমরা ফিরে এসেছি। আমরা আকাশে কোনো মেঘ দেখিনি। হঠাৎ একরাতে মেঘ এলো, বৃষ্টি হলো, মসজিদের ছাদ ভেসে গেল। তা ছিল খেজুরগাছের ঢালের এবং নামাজ শুরু হলো, তখন আমি রাসুল (সা.) কে দেখেছি, তিনি পানি ও মাটিতে সিজদা করছেন। এমনকি তার কপালে মাটির চিহ্ন ছিল। (বুখারি, হাদিস : ২০১৬)

শবে কদর অনুসন্ধান ও আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ লাভে প্রত্যেক পাড়া-মহল্লার মসজিদে ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা ইতোমধ্যে ইতিকাফে বসেছেন।

ইতিকাফ হচ্ছে আল্লাহতায়ালার নৈকট্য ও ক্ষমা লাভের এক অনন্য সুযোগ। রমজানের ইতিকাফ শুরু করতে হয় ২০ তারিখের সূর্যাস্তের আগ থেকে। আর তা শেষ হয় রমজান শেষ হলে। অর্থাৎ ২৯ তারিখে চাঁদ দেখা গেলে বা ৩০ তারিখ পূর্ণ হলে। সুতরাং যারা রমজানের শেষ দশকে আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ, অনুকম্পা, ক্ষমা ও করুণার আশায় মসজিদে ইতিকাফ পালন করবেন, তারা আজ সন্ধ্যার মধ্যে মসজিদে যেয়ে অবস্থান নেবেন।

ইতিকাফের উদ্দেশ্য সম্পর্কে আল্লামা হাফেজ ইবনে রজব বলেছেন, ইতিকাফের উদ্দেশ্য হলো- সৃষ্টির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা এবং স্রষ্টার সঙ্গে সম্পর্ক কায়েম করা। আল্লাহর সঙ্গে পরিচয় যতো গভীর হবে, সম্পর্ক ও ভালোবাসা ততো নিবিড় হবে এবং তা বান্দাকে পুরোপুরি আল্লাহর কাছে নিয়ে যাবে।

শবে কদর তালাশ করতে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি রমজানে ইতিকাফে বসতেন। এক হাদিসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আমি কদরের রাতের সন্ধানে (রমজানের) প্রথম ১০ দিন ইতিকাফ করলাম। এরপর ইতিকাফ করলাম মধ্যবর্তী ১০ দিন। তারপর আমার প্রতি ওহি নাজিল করে জানানো হলো যে, তা শেষ ১০ দিনে রয়েছে। সুতরাং তোমাদের যে ইতিকাফ পছন্দ করবে, সে যেন ইতিকাফ করে। তারপর মানুষ (সাহাবায়ে কেরাম) তার সঙ্গে ইতেকাফে শরিক হয়। (মুসলিম শরীফ)

মুহাক্কিক ইমামগণ বলেছেন, আরবিতে লাইলাতুল কদর শব্দদ্বয়ে ৯টি হরফ বা বর্ণ রয়েছে; আর সুরা কদরে লাইলাতুল কদর শব্দদ্বয় তিনবার রয়েছে; নয়কে তিন দিয়ে গুণ করলে সাতাশ হয়, তাই (ছাব্বিশ দিবাগত) সাতাশ রমজানের রাতে শবে কদর হওয়ার সম্ভাবনা প্রবলভাবে বিদ্যমান রয়েছে। (তাফসিরে মাজহারি)।

শবে কদরে নির্ধারিত ফরজ ইবাদতগুলো সযত্নে পালনপূর্বক সামর্থ্যমতো সর্বাধিক নফল ইবাদতের মাধ্যমে রাত্রি জাগরণ করা সুন্নত। রাসুল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে সওয়াবের উদ্দেশ্যে আত্মমূল্যায়নসহ কদরের রাত জেগে ইবাদত করবে, তার অতীতের সকল গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে। (বুখারি শরিফ, প্রথম খণ্ড, পৃষ্ঠা: ৩০, হাদিস : ৩৪)।


আরও খবর
কুরবানি ঈদ কবে, জানাল আরব আমিরাত

মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪

শুক্রবারের বিশেষ ৪ আমল

শুক্রবার ১২ এপ্রিল ২০২৪