
ফরিদপুরে আফরোজা আলম নামে জনৈকা স্কুল শিক্ষিকাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার দায়ে তার স্বামী রবিউল ইসলাম রবিকে (৪২) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। এছাড়াও আদালত ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও তিনমাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেছে আসামি রবিউল ইসলামকে।
মঙ্গলবার (৩০ মে) দুপুর একটার দিকে ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালতের বিচারক শিহাবুল ইসলাম এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় রবিউল ইসলাম রবি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায়দানের পরে পুলিশ পাহারায় তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়। স্কুল শিক্ষিকা পরিবারের নয় বছরের বাক প্রতিবন্ধী একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, জেলার আলফাডাঙ্গা উপজেলার শিয়ালদী গ্রামের মৃত নুরুল হক মোল্লার ছেলের সাথে রবিউল ইসলাম রবির সাথে ১৪ বছর আগে একই উপজেলার উত্তর মালা গ্রামের শামচুল আলমের মেয়ে আফরোজা আলমের সঙ্গে বিবাহ হয়। আফরোজা শিয়ালদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। কিন্তু বিবিধ কারণে শ্বশুর বাড়ির লোকজনের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় স্ত্রী আফরোজকে নিয়ে আলম উপজেলার গড়ানিয়া এলাকার একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। কিন্তু এরপরেও স্বামী ও স্ত্রী দুজনের মধ্যে তেমন বনিবনা না হওয়ায় ২০২০ সালের ৩ আগস্ট ভাড়া বাড়িতে স্ত্রী আফরোজা আলমকে স্বামী রবিউল ইসলাম রবি শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। ঘটনার পর ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা থানায় নিহত শিক্ষিকার বাবার বাড়ির পক্ষ একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার দীর্ঘ তদন্ত শেষে একই বছরের ১২ সেপ্টেম্বর আলফাডাঙ্গা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ফয়সাল আহমেদ রবিউল ইসলাম রবিকে একমাত্র আসামি করে আদালতে চুড়ান্ত চার্জশিট প্রদান করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সানোয়ার হোসেন বলেন, আদালত ৩০২/ ২০১ ধারায় স্ত্রী আফরোজা আলমকে শ্বাসরোধ করে হত্যার দায়ে স্বামী রবিউল ইসলাম রবিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও সেই সঙ্গে পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও তিনমাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ মনে করেন আইনের সুশাসন প্রতিষ্ঠায় মামলার বাদীপক্ষ ন্যায় বিচার পেয়েছেন।