জমিজমা সংক্রান্ত পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ফরিদপুরে মাজেদা পারভীন (৪৮) নামে এক গৃহবধূ দেবরের হাতে খুন হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) বিকেলে শহরের কমলাপুর লালের মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত মাজেদা পারভীন ওই এলাকার রাজা মিয়ার স্ত্রী। ঘটনার পর থেকে ঘাতক দেবর আব্দুর রব পলতাক রয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আব্দুর রবের স্ত্রী ও সন্তান ঢাকায় থাকেন। শহরের কমলাপুর লালের মোড় এলাকায় মাজেদা পারভীন ও স্বামী রাজা মিয়া বসবাস করেন। বাসার কেয়ার টেকারের কাজের সুবাদে একই বাড়িতে ভাই ও ভাবীর সাথে থাকতেন আব্দুর রব (৭০)।
কিন্ত জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে তাদের দুটি পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিন বিরোধ চলছিল। সংসার মাঝে কোন ধরণের কলহর সৃষ্টি না হয় সেই জন্য আব্দুর রবকে জমি বাবদ বেশ কিছু টাকা কয়েক দফায় পরিশোধ করেন মাজেদা পারভিন পরিবারে। মঙ্গলবার মাজেদা পারভিনের কাছে আরও কিছু টাকা চায় আব্দুর রব। এসময় মাজেদা পারভিন জানায় কয়েক দফায় তোমাকে টাকা দেওয়া হয়েছে। হিসেব কষে দেখ-তোমার সব টাকা পরিশোধ হয়ে গেছে। আবার কিসের টাকা তুমি দাবী করতেছো? ভাবীর মুখ থেকে একথা শুনতেই আব্দুর রব চরম ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। সঙ্গে সঙ্গে কাল বিলম্ব না করে একটি চাপাতি দিয়ে ভাইর স্ত্রীকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করার পরে পালিয়ে যায়। গুরুত্বর আহত অবস্থায় বাড়ির লোকজন তাকে উদ্ধার করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
রুহুল আমিন (নিহতের ছেলে) বলেন, জমিজমা বলতে যা কিছু ছিল আব্দুর রব চাচা আগেই বিক্রি করে দিয়ে ছিলেন। তার স্ত্রী ও সন্তান ঢাকায় থাকায় বাড়ির কেয়ারটেকার হিসেবে আমাদের বাসায় থাকতেন। আমার আব্বা তাকে দুই শতাংশ জমি দিয়েছিল। আর্থিক অস্বচ্ছলতায় চাচা আমাদের কাছে ওই জমিও বিক্রি করে দেয়। কিছুদিন আগে টাকাও পরিশোধ করে দেই আমার বাবা। কিন্তু মঙ্গলবার বিকেলে মায়ের কাছে টাকা চাইতে গেলে মা তাকে টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। ঠিক তখন ক্ষিপ্ত হয়ে চাচা মায়ের মাথায় চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে।
ফরিদপুরের কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমএ জলিল বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। দেবর আব্দুর রব পলাতক পুলিশের গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।