আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুনরায় শ ম রেজাউল করিম আওয়ামী লীগের প্রার্থী হওয়ায় এ আসনের শান্তিপ্রিয় জনগণ উল্লাস প্রকাশ করে এবং তার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।
পাঁচ বছর আগেও চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, দুর্নীতি, নিয়োগ বাণিজ্য, টেন্ডারবাজিসহ নানা অপরাধের অভয়ারণ্য ছিলো পিরোজপুর। মানুষের কাছে সন্ত্রাসের জনপদ হিসেবে পরিচিত ছিলো অঞ্চলটি। সেখানে বইছে এখন শান্তির সুবাতাস। ২০১৮ অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পিরোজপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির তৎকালীন আইন বিষয়ক সম্পাদক শ ম রেজাউল করিম। ওই নির্বাচনে তিনি বিপুল ভোটের ব্যবধানে সাঈদীপুত্র শামীম সাঈদীকে পরাজিত করে এমপি হন।
এমপি নির্বাচিত হয়ে প্রথমে গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী পরে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
বিগত পাঁচ বছরে তিনি নিজ নির্বাচনী এলাকার গ্রামীণ রাস্তা সংস্কার, সম্প্রসারণ ও মজবুতকরণ, ব্রিজ-কালভার্ট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মন্দির-মসজিদের অবকাঠামগত উন্নয়ন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ, অসহায় মানুষকে সরকারি উদ্যোগে ঘর করে দেয়া, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির বিভিন্ন পর্যায়ে ভাতা প্রদান করা, শতভাগ বিদ্যুতায়িত করাসহ অসংখ্য উন্নয়নের পাশাপাশি চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, দুর্নীতি, নিয়োগ বাণিজ্য, টেন্ডার-সন্ত্রাস বন্ধ করে সন্ত্রাসের জনপদকে শান্তি ও উন্নয়নের জনপদে পরিণত করেছেন।
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুনরায় শ ম রেজাউল করিম আওয়ামী লীগের প্রার্থী হওয়ায় এ আসনের শান্তিপ্রিয় জনগণ উল্লাস প্রকাশ করে এবং তার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।
পিরোজপুর সদর-নাজিরপুর-ইন্দুরকানী এই তিন উপজেলা নিয়ে গঠিত পিরোজপুর-১ আসনটিতে এবার মনোনয়নপত্র দাখিল করেন নয় প্রার্থী। যাচাই-বাছাইয়ে চারজনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। বৈধ প্রার্থীরা হলেন- মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম (আওয়ামী লীগ), একেএমএ আউয়াল (স্বতন্ত্র), মো. নজরুল ইসলাম (জাতীয় পার্টি), মো. সাইদুল ইসলাম ডালিম (জাসদ) এবং মো. ফরহাদ আহম্মেদ (জাকের পার্টি)।
এখনো প্রতীক বরাদ্দ না হলেও ৭ জানুয়ারির ভোটকে সামনে রেখে জমজমাট হয়ে উঠেছে পিরোজপুর। চলছে চায়ের আড্ডা, গ্রামে-গঞ্জে, শহর-বন্দরে নির্বাচনী অফিস নির্মাণ, ওয়ার্ড-পৌরসভা-ইউনিয়নভিত্তিক নির্বাচনী পরিচালনা কমিটি গঠন এবং প্রার্থীদের সঙ্গে চলছে মতবিনিময়।
দলীয় নেতা-কর্মীসহ একাধিক সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমান এমপি এলাকায় উন্নয়ন ও চাঁদাবাজি বন্ধ করায় তার প্রতি খুশি তারা। যিনি উন্নয়ন করতে পারবেন, সেই প্রার্থীকেই তারা ভোট দেবেন। এর আগে ১০ বছর যিনি এমপি ছিলেন, তিনি এমপি হয়েও তেমন কোনো কাজ করেননি ও সাধারণ মানুষেকে হামলা-মামলা ও জেল-জুলুম, অত্যাচার ও নির্যাতন করেছে, এবারের নির্বাচনে তিনি বিদ্রোহী প্রার্থী হলেও জনগণ তাকে ভোট দেবেন না।
আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, পিরোজপুর-১ আসনে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনসহ অভাবনীয় উন্নয়ন হয়েছে। চাঁদাবাজি বন্ধ করা, ঘুষ-দুর্নীতিমুক্ত করা, নিয়োগ বাণিজ্য বন্ধ করা, উন্নয়ন প্রকল্প থেকে কমিশন নেয়া বন্ধ করা, সন্ত্রাস বন্ধ করা, মাদকের ছোবল থেকে রক্ষা করাসহ নানামুখী কর্মসূচির মাধ্যমে শান্তি ও উন্নয়নের জনপদে পরিণত করেছি পিরোজপুরকে। সঙ্গত কারণেই মানুষ চায় এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে শেখ হাসিনার মনোনীত প্রার্থীকে ভোট দিতে। স্বতন্ত্র প্রার্থী একেএমএ আউয়াল তার ভাই এবং তাদের অনুগত কিছু কর্মী, নৌকার কর্মী-সমর্থকদের জীবননাশের হুমকি দিয়ে নির্বাচনের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। তাদের সন্ত্রাসী বাহিনীর নৈরাজ্য সৃষ্টির প্রচেষ্টা জনগণ রুখে দেবে। তবে আইনের কঠোর প্রয়োগ আশা করি।
জেলা মৎস্যজীবী লীগের আহ্বায়ক সিকদার চাঁন বলেছেন, আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে যেতে পারছেন না। স্বতন্ত্র প্রার্থী একেএমএ আউয়ালের পক্ষে সেখানে নির্বাচন কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। জেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে দুঃসময়ের নেতাকর্মীদের কমিটিতে না রেখে এই স্বতন্ত্র প্রার্থী তার ব্যক্তিগত লোকজন দিয়ে কমিটি করেছেন।