চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
(চবি) ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে পদবঞ্চিতদের মূল্যায়নের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের
অবরোধের ডাক দিয়েছে ছাত্রলীগের একাংশ। আজ সোমবার ভোর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে
তালা দিয়ে অবরোধ শুরু করেন তারা।
এ কারণে চট্টগ্রামমুখী
কোনো শিক্ষক বাস ক্যাম্পাস থেকে ছেড়ে যেতে পারেনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন দপ্তরের
প্রশাসক এস এম মোয়াজ্জম হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে, শাটল
ট্রেন ষোলোশহর রেলওয়ে স্টেশনে আটকে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্টেশন মাস্টার অভি সেন।
তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে আন্দোলনের জন্য ট্রেন চলাচল বন্ধ
রয়েছে।
শাখা ছাত্রলীগের
সহ-সভাপতি রাকিবুল হাসান দিনার বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের দাবিগুলো জানিয়ে আসছিলাম অনেক দিন ধরে।
আমাদের কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য না করতে অনুরোধ করেছি। কোনো লাভ হয়নি। পদবঞ্চিতদের
আন্দোলনে সমর্থন রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ নষ্টের এ দায়ভার শাখা ছাত্রলীগের
শীর্ষ দুই নেতাকেই নিতে হবে।’
এর আগে একই
দাবিতে গত ১ আগস্ট ভোররাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে ও টায়ারে আগুন
দিয়ে বিক্ষোভ করেছিলেন ছাত্রলীগের কমিটিতে পদবঞ্চিতরা। বিক্ষোভে কার্যত অচল হয়ে পড়েছিল
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম।
ওই সময় পদবঞ্চিতদের
কমিটিতে স্থান দেওয়াসহ তিন দফা দাবি তুলে আলটিমেটাম দিয়ে অবরোধ স্থগিত করেন বিক্ষোভরত
ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।
তাদের দাবিগুলো
হলো- পদবঞ্চিত ত্যাগী ও পরিশ্রমী কর্মীদের মূল্যায়ন করে কমিটিতে অর্ন্তভুক্তকরণ, কমিটিতে
স্থান পাওয়া নেতাদের যোগ্যতা অনুসারে পদগুলোর পুনঃমূল্যায়ন, কমিটিতে পদপ্রাপ্ত বিবাহিত,
চাকরিজীবী ও দীর্ঘদিন রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা
গ্রহণ এবং দাবি মেনে নেওয়া না হলে পরবর্তী সময়ে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা।
২০১৯ সালের
১৪ জুলাই রেজাউল হককে সভাপতি ও ইকবাল হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয়
ছাত্রলীগ। এর পর তিন বছর পেরিয়ে গেলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা সম্ভব হয়নি। সব জল্পনার
অবসান ঘটিয়ে চলতি বছরের ৩১ জুলাই রাতে ৩৮০ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়। মূলত এর পরই
আন্দোলন শুরু করেন কমিটিতে পদবঞ্চিতরা।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতি দুটি গ্রুপে বিভক্ত। এক পক্ষ সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির
উদ্দীনের অনুসারী এবং আরেকটি পক্ষ শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে
ক্যাম্পাসে পরিচিত। এই দুটি গ্রুপের রয়েছে ১১টি উপগ্রুপ।