বকেয়া বেতন, রেশন,
চিকিৎসা ও স্থায়ী বাসস্থান নিশ্চিতকরণসহ পাঁচ দফা দাবিতে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায়
ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন চা-শ্রমিকেরা।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে
উপজেলার পানিউমদা ইউনিয়নের রোকনপুর বাজারে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেন ইমাম
ও বাওয়ানী চা-বাগানের ২ হাজার শ্রমিক। পরে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
শ্রমিকদের অভিযোগ,
উপজেলার পানিউমদা ইউনিয়নের ইমাম ও বাওয়ানী চা-বাগানের ২ হাজার নারী ও পুরুষ চা-শ্রমিক
কাজ করেন। দীর্ঘদিন ধরে দুটি বাগানে ম্যানেজার ছাড়াই চলছে কার্যক্রম। গত পাঁচ সপ্তাহ
ধরে ইমাম ও বাওয়ানী চা-বাগানের ২ হাজার শ্রমিকের মজুরি, রেশন, ২০১৯-২০২০ সালের শ্রমিকদের
এরিয়া বোনাস, ২০২২ সালের এরিয়া বোনাসসহ মোট ৬৯ লাখ ৮০ হাজার টাকা পরিশোধ করেনি মালিকপক্ষ।
বিষয়টি বাংলাদেশ চা-বোর্ড ও জেলা প্রশাসনকে লিখিতভাবে জানান চা-শ্রমিকেরা। কিন্তু এতেও
মেলেনি সমাধান।
এদিকে অবরোধের
কারণে আধা ঘণ্টা মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে। পরে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা
(ইউএনও) ইমরান শাহরীয়ার, সহকারী পুলিশ সুপার আবুল খয়ের, সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহীন
দেলোয়ার, নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ডালিম আহমেদসহ পুলিশ ঘটনাস্থলে
পৌঁছে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন।
বর্তমান মালিকপক্ষের
বাগান বন্দোবস্ত বাতিলের করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখিত প্রতিবেদন দিয়েছে
উপজেলা প্রশাসন।বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নিপেন পাল জানান,
গত পাঁচ সপ্তাহ ধরে চা-শ্রমিকদের বেতন ও রেশন দিচ্ছে না মালিকপক্ষ। এতে চা-শ্রমিকেরা
মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
নিপেন পাল বলেন,
প্রশাসনের লোকজন এসেছিলেন, তাঁরা আশ্বাস দিয়েছেন দ্রুত বর্তমান মালিকপক্ষের বাগানের
বন্দোবস্ত বাতিল হবে। বাগানে থাকা প্রায় ৩৯ হাজার কেজি চা-পাতা নিলামের মাধ্যমে বিক্রির
ব্যবস্থা করবেন। দ্রুত বিষয়টি সমাধান না হলে বড় আকারে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে ইমাম
ও বাওয়ানী চা-বাগানের মালিক জিকে মাইনুদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ
করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি। ইউএনও ইমরান শাহরীয়ার বলেন, চা-বাগানের ইজারা বাতিলের
জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন দিয়েছি।
হবিগঞ্জের জেলা
প্রশাসক ইশরাত জাহান বলেন, মালিকপক্ষ বেতন-রেশন বকেয়া পরিশোধ না করায় চা-শ্রমিকেরা
আজ মহাসড়ক অবরোধ করেছিলেন। পরে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি
স্বাভাবিক করে। জেলা প্রশাসক বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে চা-শ্রমিকদের
এ সমস্যার দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করব।