কাতার বিশ্বকাপে
নিজের ক্যারিয়ারের শেষ বিশ্বকাপ খেলছেন লিওনেল মেসি। নিজের পঞ্চম বিশ্বকাপে খেলতে নেমে
একের পর এক রেকর্ডে নিজের নাম লিখিয়েছেন আর্জেন্টাইন এই তারকা। কোনটাই তো সবাইকে ছাড়িয়ে
গেছেন, আবার কোনোটাই কিংবদন্তি সব ফুটবলারদের পাশে নিজেকে তুলে ধরেছেন মেসি।
মরুর বুকে বিশ্বকাপের
সোনালি ট্রফি জয়ের আক্ষেপ মেটানোর শেষ সুযোগ পাচ্ছেন রেকর্ড সাতবারের ব্যালন ডি'অরজয়ী
পিএসজির এই তারকা। লুসাইলে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের বিপক্ষে শিরোপা নির্ধারণী
ফাইনাল ম্যাচেও একগুচ্ছ রেকর্ড গড়ার হাতছানি দিচ্ছে ৩৫ বছর বয়সী মেসির সামনে।
চলুন জেনে নেওয়া
যাক ফাইনালে যে ৭টি রেকর্ড অপেক্ষা করছে মেসির সামনে-
(১) বিশ্বকাপে
এখন পর্যন্ত ২৫টি ম্যাচ খেলেছেন লিওনেল মেসি। যার ফলে তিনি ছুঁয়ে ফেলেছেন জার্মানির
বিশ্বজয়ী সাবেক অধিনায়ক লোথার ম্যাথাউসের ২৫টি ম্যাচ খেলার রেকর্ড। ফ্রান্সের বিপক্ষে
ফাইনালে মাঠে নামার সঙ্গে সঙ্গে এককভাবে বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২৬ ম্যাচ খেলে
শীর্ষস্থানে চলে আসবেন এই আর্জেন্টাইন।
(২) পঞ্চম বিশ্বকাপ
খেলতে নামা মেসি ২৫টি ম্যাচে মোট ২১৯৪ মিনিট মাঠে খেলেছেন। সময়ের হিসাবে তিনি ইতালির
সাবেক ফুটবল পাওলো মালদিনির ঠিক পরেই অবস্থান করছেন। মালদিনি বিশ্বকাপে মোট ২২১৭ মিনিট
খেলেছেন। লুসাইলের ফাইনাল ম্যাচে ২৪ মিনিট খেললেই ইতালিয়ান এই কিংবদন্তির রেকর্ডকে
ছাড়িয়ে শীর্ষে উঠে আসবেন মেসি।
(৩) বিশ্বকাপে
মাঠে নেমে ২৫টি ম্যাচের মধ্যে ১৬টি ম্যাচে জয়ের স্বাদ পেয়েছেন মেসি। ফলে তিনি রয়েছেন
সবচেয়ে জয়ী খেলোয়াডদের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে। ফ্রান্সের বিপক্ষে ফাইনাল ম্যাচে জয় পেলে
তিনি ছুঁয়ে ফেলবেন বিশ্বকাপে ১৭ ম্যাচ জেতা জার্মানির সাবেক ফুটবলার মিরোস্লাভ ক্লোসার
রেকর্ড।
(৪) বিশ্বকাপে
এখনও পর্যন্ত ১১টি গোল ও ৯টি অ্যাসিস্ট করে সরাসরি ২০টি গোলে অবদান রয়েছে মেসির। এ
ক্ষেত্রে তার সামনে রয়েছেন একমাত্র ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি ফুটবলার পেলে। তিনি বিশ্বকাপে
১২টি গোল করেন ও সতীর্থদের দিয়ে করান আরও ১০টি গোল। দলের মোট ২২টি গোলে তার অবদান ছিল।
ফাইনালে দলের ২টি গোলে অবদান রাখতে পারলে এ ক্ষেত্রেও পেলেকে ছুঁয়ে ফেলবেন মেসি।
(৫) বিশ্বকাপে
এখন পর্যন্ত ৯টি গোলে সরাসরি সহযোগিতা করেছেন মেসি। ফাইনালে আর মাত্র ২টি অ্যাসিস্ট
করাতে পারলে ভেঙে দেবেন পেলের ১০টি অ্যাসিস্টের রেকর্ড। আর একটি গোলে সাহায্য করলে
ব্রাজিলের এই কিংবদন্তিকে ছুঁয়ে ফেলবেন তিনি।
(৬) গত ২০১৪
বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা শিরোপা জিততে না পারলেও প্রতিযোগিতার সেরা ফুটবলার হিসেবে জিতেছিলেন
সোনার বল। এবার কাতারেও সোনার বল জেতার অন্যতম দাবিদার আর্জেন্টিনার এই অধিনায়ক। এবার
এই কৃতিত্ব অর্জন করতে পারলে তিনিই হবেন বিশ্বের প্রথম এবং একমাত্র ফুটবলার যিনি ২টি
বিশ্বকাপে সেরা ফুটবলার হবেন।
(৭) কাতার বিশ্বকাপে সোনার বুট জেতার দৌড়েও ৫ গোল করে ফ্রান্সের কিলিয়ান এমবাপ্পেরর সঙ্গে যৌথভাবে শীর্ষে রয়েছেন লিওনেল মেসি। সর্বোচ্চ গোলদাতা হতে পারলে জিতবেন সোনার বুট। এমবাপে এবং মেসি- দু’জনের কেউ গোল না পেলে অ্যাসিস্ট বেশি হওয়ার কারণে মেসিই জিতবেন এই পুরস্কার। তাহলে বিশ্বের সপ্তম ফুটবলার হিসাবে বিশ্বকাপে সোনার বুট এবং সোনার বল জেতার নজির গড়বেন মেসি। এখনও পর্যন্ত এই কৃতিত্ব রয়েছে ব্রাজিলের লিয়োনিডাস দ্য সিলভা, গ্যারিঞ্চা, রোনালদো নাজারিও, ইতালির পাওলো রোসি, সালভাতোর এসচিলাচি এবং আর্জেন্টিনার সাবেক ফুটবলার মারিও কেম্পেস। রোনালদো বাদে সবাই একই বিশ্বকাপেই ২টি পুরস্কার জিতেছিলেন।