আজঃ রবিবার ১২ মে ২০২৪
শিরোনাম

এস আলমের পোড়া চিনি-কেমিক্যালে কর্ণফুলীতে মরছে মাছ

প্রকাশিত:বুধবার ০৬ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০৬ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

Image

চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তীর ঘেঁষেই এস আলম গ্রুপের চিনি পরিশোধন কারখানা। দুদিন আগে সেখানে গুদামে আগুন লাগার পর অপরিশোধিত চিনির পোড়া-গলিত বর্জ্য কারখানার ড্রেন দিয়ে কর্ণফুলী নদীতে গিয়ে পড়ছে। এতে নদীর পানিতে বিষাক্ত কেমিক্যাল মিশে ভেসে উঠছে নদীর মাছ।

মঙ্গলবার থেকে নদীতে মারা যাচ্ছে মাছ, কাঁকড়াসহ নানা জলজ প্রাণী। স্থানীয় লোকজন নদীতে নেমে মাছ ধরছে। বুধবার সকাল থেকে নদীতে মরা মাছ ভেসে উঠতে দেখা যাচ্ছে। সেই মরা মাছ ধরার জন্য অনেকে জাল নিয়ে গেছেন কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সেতুর নিচে ব্রিজঘাট এলাকায়।

এস আলম সুগার রিফাইনারির অবস্থান নদীর দক্ষিণপাড় থেকে ৭০০ মিটার দূরত্বে। সেতু পার হয়ে মইজ্জারটেক এলাকায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশে কারখানাটি। এস আলমের নিজস্ব জেটি আছে। সাগরে বড় জাহাজে পণ্য আনার পর ছোট জাহাজে করে প্রথমে সেই ঘাটে ভেড়ানো হয়। সেই ঘাট থেকে মাটির নিচে স্থাপিত পাইপলাইনে ভোজ্যতেল এবং ট্রাকে করে অপরিশোধিত চিনি কারখানার ভেতরে নেওয়া হয়।

সোমবার বিকালে আগুন লাগে কারখানার চিনির গুদামে ১ লাখ টন চিনি পুড়ে গেছে বলে এস আলম কর্তৃপক্ষ জানায়। আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের ১৪ ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে পানি ছিটাচ্ছিল। পরে যোগ দেয় সেনাবাহিনী, নৌ বাহিনী, বিমানবাহিনীও। বুধবার সকালেও আগুন পুরোপুরি নেভানো যায়নি।

কর্ণফুলী হচ্ছে জোয়ার-ভাটার নদী। ফলে পোড়া চিনি নালা দিয়ে কর্ণফুলী নদীতে পড়লে একটি স্থানে সীমাবদ্ধ থাকছে না। জোয়ার-ভাটার সঙ্গে পুরো নদীর অন্তত দুই কিলোমিটার জুড়ে ছড়িয়েছে চিনি।

মঙ্গলবারও এস আলম গ্রুপ দাবি করেছিল যে, নদীতে মিশলেও আমরা এখন বিশেষজ্ঞ সাথে বসে একটা প্ল্যান করবো। কর্ণফুলীতে আগেও মাছ কি মরতো না। তবে এখন অপরিশোধিত চিনি গিয়ে পোড়া চিনি নদীতে ছড়ালেও মাছ মরার সম্ভাবনা কম।

কর্ণফুলী নদীতে ছোট জাহাজের শ্রমিক মো: বেলাল বুধবার জাল দিয়ে মাছ ধরছিলেন কর্ণফুলী নদীতে। তিনি বলেন, মঙ্গলবার বিকাল থেকেই দেখেছি নদীর পানি কিছুটা কালো রঙ ধারণ করেছে। জোয়ার থাকা পানি একস্থানে স্থির ছিল না। সকাল থেকেই দেখি জাহাজের পাশেই চিংড়ি, মইল্লা মাছ ভেসে উঠেছে। পরে জাহাজের পাশে থাকা ছোট ডিঙ্গিতে নেমে জাল নিয়েই মাছ ধরেছি। বেশ কিছু মাছ ধরা পড়েছে জালে।

নদী পাড়ের বাসিন্দারা বলেন, সবচেয়ে বেশি মাছ ধরা পড়েছে শিকলবাহা খালের পাশে। কারণ পোড়া চিনি সরাসরি সেখানেই নদীতে পড়েছে।

সকাল মাছ ধরা পড়ার খবর পেয়ে এলাকার সবাই নদীতে যায়। কেউ আবার জাল নিয়ে গেছে। কিন্তু বেশিরভাগ মাছ ধরা পড়েছে ।

নদীতে মাছের মরার খবর দেখেছেন বলে জানান চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ। তিনি বলেন, নদীর পাশেই কারখানা গড়ার আগে দূষণ ঠেকানোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন ছিল।

কর্ণফুলী নদীর পাড়ে গিয়ে দেখা যায়, আগুনে পুড়ে যাওয়া কেমিক্যাল মিশ্রিত অপরিশোধিত চিনির বিষাক্ত পানি সোজা কর্ণফুলী নদীতে পড়ছে। এরপর নদীতে কেমিক্যাল মিশে পানি দূষিত হচ্ছে। এতে নদীর মাছ মারা যাচ্ছে। নদী থেকে স্থানীয়রা হাত দিয়ে টেংরা, পোয়া ও চিংড়িসহ ভেসে ওঠা নানা ধরনের মাছ ধরছেন। এছাড়া স্থানীয়রা হাত জাল ফেলেও মাছ ধরছেন। প্রায় ৫ থেকে ৬ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এভাবে মাছ ধরতে দেখা গেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কর্ণফুলীর ইছানগর এলাকার সুগার মিলে পুড়ে যাওয়া চিনি ও কেমিক্যাল নদীতে গিয়ে পড়ায় মাছ মারা যাচ্ছে। অপরিশোধিত চিনি আগুনে পুড়ে গিয়ে বর্জ্য হিসেবে কর্ণফুলী নদীতে পড়েছে। নালার মাধ্যমে সরাসরি নদীতে পড়ায় পরিবেশগত প্রভাব পড়বে। পানির মাত্রা মান কমে গিয়ে ইকোলজিক্যাল অসামঞ্জস্যতা তৈরি হয়েছে। আর পানিতে অক্সিজেন লেভেল কমে যাওয়ায় মাছগুলো মারা পড়ছে। চিনির দাহ্য পদার্থ যখন ৩৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে থাকে তখন বিষাক্ত কেমিক্যালে রূপ নেয়। আর সেখানে পানি ছাড়া হলে অক্সিজেন ও হাইড্রোজেন কার্বন তৈরি হয়। যার কারণে কারখানায় আগুন দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে। সেই আগুনে অপরিশোধিত চিনি গলে সেই লাভা নদীতে এসে পড়েছে। এতেই পানি দূষিত হয়ে মাছ মরছে। চিনির কেমিক্যালে নদী দূষণ তো হয়েছে। এছাড়া নদী দূষণের অন্যতম কারণ হলো ১৭টি খালের বর্জ্য।

স্থানীয় ইছানগর এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, আগুনে পোড়া চিনিতে কারখানার পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। ফায়ার সার্ভিসের ছিটানো পানি চিনির সঙ্গে মিশে নদীতে পড়েছে।

এস আলম গ্রুপের মানবসম্পদ কর্মকর্তা মো: হোসেন বলেন, আগুনে পোড়া চিনি কর্ণফুলীতে কিছুটা গেছে। এসব নিজস্ব জমিতে ডাম্পিং করা হচ্ছে। নদীতে গেলেও জীব-বৈচিত্র্যের কোনও ক্ষতি হবে না। এখানে কোনও ক্ষতিকর রাসায়নিক নেই।

এ প্রসঙ্গে পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের পরিচালক ফেরদৌস আনোয়ার বলেন, সুগার মিলের পোড়া চিনি কর্ণফুলী নদীতে পড়ছে এমন তথ্য পেয়ে মঙ্গলবার আমাদের ল্যাব থেকে লোকজন গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বিভিন্ন স্থান থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ল্যাবের রিপোর্ট পাওয়ার পর বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে। পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যাওয়ার কারণে মাছসহ অন্যান্য জীববৈচিত্র্য মারা যাচ্ছে বা দুর্বল হয়ে পড়ছে। অবশ্যই এটি নদীর জন্য ক্ষতির কারণ।

চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক এম ডি আবদুল মালেক বলেন, চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে সুগার মিলের আগুন ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে ব্যবহার করা হচ্ছে অগ্নিনির্বাপক রোবট লুফ-৬০। এ রোবট দিয়ে মিনিটে এক হাজার লিটার স্পিডে পানি ছিটানো হচ্ছে। চিনির কাঁচামালে দাহ্য পদার্থ থাকায় গুদামের ভেতরের আগুন নেভাতে বেগ পেতে হচ্ছে। সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনতে আরো ৭২ ঘণ্টা লাগতে পারে।

উল্লেখ্য, গত সোমবার বিকেল ৪টার দিকে কর্ণফুলীর ইছাপুর এলাকার একটি মিলে আগুন লাগে। আগুন নিয়ন্ত্রণে প্রথমদিকে কাজ করে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি স্টেশনের ১৫টি ইউনিট। পরে তাদের সঙ্গে আগুন নেভাতে যোগ দেয় বিমান, নৌ, সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহনীর সদস্যরা।

নিউজ ট্যাগ: কর্ণফুলী নদী

আরও খবর



ইরানের হামলা থেকে ইসরায়েলকে বাঁচাতে মার্কিন রণতরী প্রেরণ

প্রকাশিত:শনিবার ১৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ১৩ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

ইরানের সম্ভাব্য হামলা থেকে ইসরায়েলকে বাঁচাতে অবস্থান পরিবর্তন করেছে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন রণতরী প্রস্তুতির অংশ হিসেবে অবস্থান পরিবর্তন করতে শুরু করেছে।

মার্কিন বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস আইজেনহাওয়ার সহ নৌবাহিনীর আরও যুদ্ধযান বর্তমানে লোহিত সাগর ও ভূমধ্যসাগরে অবস্থান করছে।

হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন কিরবি বলেন, মিত্র ইসরাইলের ওপর ইরানের যেকোনো হামলা রুখে দিতে পুরোপুরি প্রস্তুত মার্কিন বাহিনী। আর তা জানান দিতে মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থানরত মার্কিন রণতরী স্থান পরিবর্তন করেছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, আমরা ইসরায়েলের প্রতিরক্ষায় নিবেদিত। আমরা ইসরায়েলকে সমর্থন করব। আমরা ইসরায়েলকে রক্ষা করতে সাহায্য করব। ইরান হামলা চালিয়ে সফল হতে পারবে না।


আরও খবর



দিনাজপুরে বাঁশের ফুল থেকে চাল, হচ্ছে ভাত-পোলাও পায়েস

প্রকাশিত:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ | অনলাইন সংস্করণ
দিনাজপুর প্রতিনিধি

Image

নানা ধরনের সুগন্ধি চাল উৎপাদনের জন্য দিনাজপুরের নামডাক দেশজুড়ে। এ জেলায় উৎপাদিত ধান-চাল দেশের বিভিন্ন স্থানে বাজারজাত হয়ে থাকে। এবার দিনাজপুরেই পাওয়া যাচ্ছে বাঁশফুলের চাল (দানা)। শুনতে অবাক মনে হলেও এই চাল থেকেই তৈরি হচ্ছে ভাত, পোলাও, পায়েস। এমনকি চালের আটা দিয়ে মুখরোচক পিঠাপুলিও বানানো হচ্ছে।

প্রতিবেশী এক বৃদ্ধের কাছে গল্প শুনে বাঁশফুলের বীজ থেকে এই দানা (চাল) সংগ্রহ করে এলাকায় তাক লাগিয়ে দিয়েছেন দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার এলুয়াড়ী ইউনিয়নের পাকাপান গ্রামের যুবক সাঞ্জু রায়।

ধান থেকে উৎপাদিত চালের মতোই দেখতে বাঁশফুলের এই চাল। তুলনামূলক কম উৎপাদন আর চাহিদা বেশি থাকায় গ্রাহকদের চাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন সাঞ্জু রায়।

সাঞ্জু রায় জানান, স্থানীয় এক বৃদ্ধের কাছ থেকে বাঁশফুল থেকে চাল উৎপাদনের ধারণা পান তিনি। যুদ্ধের সময় যখন চাল কিংবা ভাত অপ্রতুল ছিল, তখন স্থানীয়রা এই বাঁশের ফুল থেকে চাল ফলিয়ে রান্না করে খেতেন। সম্প্রতি এক বৃদ্ধ সাঞ্জু রায়ের এলাকায় বাঁশ ফুল দেখে চাল উৎপাদনের কথা বলেন। তার প্রেরণায়ই সাঞ্জু চাল উৎপাদনের পরিকল্পনা করেন।

প্রথমে বাঁশফুল সংগ্রহ করেন সাঞ্জু। লম্বা হওয়ায় বাঁশের ওপরের অংশ থেকে ফুল সংগ্রহ করা বেশ কষ্টকর। সংগৃহীত ফুল পানিতে ধুয়ে পরিষ্কার করে নেওয়া হয়। সেই ফুল রোদে শুকিয়ে মেশিনের সাহায্যে ছোট-ছোট করে চালের মতো ভাঙানো হয়।

স্থানীয়রা জানান, বাঁশফুল থেকে চাল উৎপাদনের বিষয়টি সাঞ্জু রায়ের কাছ থেকে প্রথম দিকে শুনে বিশ্বাস হচ্ছিল না। তবে যখন সত্যিই তিনি চাল উৎপাদন করলেন, তখন সবাই অবাক হয়েছেন।

৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে বাঁশফুলের চাল। অনেকে চালের বিনিময়েও বাঁশফুলের চাল কিনছেন। এই চাল থেকে তৈরি পোলাও, ভাত কিংবা পায়েস বেশ সুস্বাদু বলেও জানান তারা।

বেড়ুয়া বাঁশ বা কাটা বাঁশের ফুল থেকে এই চাল উৎপাদন করা হচ্ছে। এসব বাঁশের বয়স ৬০ থেকে ৭০ বছর বলে জানা গেছে।


আরও খবর



পশ্চিমের সাথে সরাসরি সংঘাতের হুঁশিয়ারি রাশিয়ার

প্রকাশিত:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

ইউক্রেনের জন্য মার্কিন, ব্রিটিশ এবং ফরাসি সামরিক সহায়তা বিশ্বকে বৃহত্তম পারমাণবিক শক্তিধর দেশগুলোর মাঝে সরাসরি সংঘর্ষের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিয়েছে। আর এই সংঘাতের অবসান ঘটতে পারে বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে। সোমবার রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ মস্কোতে এক সম্মেলনে এই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

রুশ ও মার্কিন কূটনীতিকদের মতে, ১৯৬২ সালের কিউবান ক্ষেপণাস্ত্র সংকটের পর ২০২২ সালে ইউক্রেনে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের আক্রমণ রাশিয়ার সাথে পশ্চিমের সম্পর্ককে একেবারে তলানিতে নিয়ে গেছে।

মার্কিন আইনপ্রণেতারা ইউক্রেনে বিলিয়ন ডলারের অতিরিক্ত সামরিক সহায়তা বিলে অনুমোদন দেওয়ার দুদিন পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, রাশিয়ার ‘‘কৌশলগত পরাজয়’’ ঘটানোর ধারণা নিয়ে মগ্ন রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র এবং ন্যাটো।

তিনি বলেছেন, ইউক্রেনের প্রতি পশ্চিমাদের সমর্থন রাশিয়াকে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের সাথে সরাসরি সামরিক সংঘর্ষের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে। রাশিয়ার এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পশ্চিমারা বিপজ্জনকভাবে পারমাণবিক শক্তিধর দেশগুলোর মাঝে সরাসরি সামরিক সংঘর্ষের বিষয়ে উসকানি দিচ্ছে; যা বিপর্যয়কর পরিণতিতে পরিপূর্ণ।

ল্যাভরভ বলেন, বিশেষ উদ্বেগের বিষয় হলো, পশ্চিমা পারমাণবিক শক্তিধর ট্রোইকা। যারা বিভিন্ন ধরনের উস্কানিমূলক পদক্ষেপের প্রধান উদ্যোক্তা। আর ট্রোইকাই অপরাধী কিয়েভের শাসকগোষ্ঠীর মূল পৃষ্ঠপোষক।’’ ট্রোইকা বলতে পশ্চিমা সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেওয়া তিন দেশ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সকে বোঝানো হয়। আমরা তাদের এই ধরনের কার্যক্রমে গুরুতর কৌশলগত ঝুঁকি দেখতে পাই। যার ফলে পারমাণবিক বিপদের মাত্রা বাড়ছে।

ইউক্রেনের সাথে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে রাশিয়া বারবার ক্রমবর্ধমান পারমাণবিক ঝুঁকি সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়ে আসছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, মস্কোর এই সতর্কতাকে গুরুত্ব সহকারে নিতে হবে। মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা রাশিয়ার পারমাণবিক হুমকিতে কোনও পরিবর্তন দেখতে পায়নি।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পশ্চিমের ক্ষয়িষ্ণু পশ্চিমের সাথে শতাব্দীর পুরোনো যুদ্ধের অংশ হিসাবে ইউক্রেনে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বলেছেন, ১৯৮৯ সালে বার্লিন প্রাচীর পতনের পর ন্যাটোর বিস্তার রাশিয়ার ঐতিহাসিক প্রভাব বলয় গুঁড়িয়ে দিয়ে মস্কোকে অপমানিত করেছে।

নিউজ ট্যাগ: ভ্লাদিমির পুতিন

আরও খবর



চাকরি হারাচ্ছেন প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক, বেতন ফেরত দিতে হবে সুদসহ

প্রকাশিত:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

পশ্চিমবঙ্গের ২৫ হাজার শিক্ষক চাকরি হারাচ্ছেন। কলকাতা হাইকোর্টের এক আদেশ অনুযায়ী ২০১৬ সালে নিয়োগ পাওয়া ২৫ হাজার ৭৫৩ জন শিক্ষককে চাকরি ছাড়তে হবে। একইসঙ্গে এই সময়ে তারা যে বেতন তুলেছেন তা ১২ শতাংশ সুদসহ ফেরত দিতে হবে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সরকারের জন্য এই আদেশ বড় এক ধাক্কাই। সোমবার (২২ এপ্রিল) বিচারপতি দেবাংশু বাসাক ও মো. শাব্বার রশিদির সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ জানান, স্কুলশিক্ষকদের নিয়োগ প্রক্রিয়া অবৈধ ছিল। তারা খালি ওএমআর শিট জমা দিয়ে শিক্ষক হয়েছেন।

নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুরও আদেশ দেওয়া হয়েছে ওয়েস্ট বেঙ্গল স্কুল সার্ভিস কমিশনকে।

আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে ছাটাইকৃত শিক্ষকদের বেতন ফেরত দেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়। বেতন সংগ্রহের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটদের। ২০১৬ সালে নিয়োগ পাওয়া শুধুমাত্র একজন শিক্ষককে চাকরিতে বহাল রাখা হয়েছে। সোমা দাস নামে ওই শিক্ষিকার ক্যানসারের চিকিৎসা চলছে।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী এই বেঞ্চ গঠিত হয়েছে। বেঞ্চটি সিবিআইকে নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে আরও তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী তিন মাসের মধ্যে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে হবে।


আরও খবর



রাফায় ইসরায়েলি বিমান হামলা, ১৩ ফিলিস্তিনি নিহত

প্রকাশিত:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের রাফাহতে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে কমপক্ষে ১৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। হামলায় আহত হয়েছেন আরও অনেকে। সোমবার (২৯ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

অবশ্য রাফাহতে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা আরও বেশি বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনের সরকারি বার্তাসংস্থা ওয়াফা।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফাহ শহরের তিনটি বাড়িতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ১৩ জন নিহত এবং আরও অনেকে আহত হয়েছেন বলে সোমবার চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। অবশ্য গাজার মিডিয়া আউটলেট মৃতের সংখ্যা ১৫ বলে জানিয়েছে।

অন্যদিকে গাজা উপত্যকার উত্তরে অবস্থিত গাজা শহরে ইসরায়েলি বিমান দুটি বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। এতে বেশ কয়েকজন নিহত ও আহত হয়েছেন বলে স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

মূলত হামাস ও দখলদার ইসরায়েলের মধ্যে গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে যুদ্ধ শুরু হয়। ওই সময় এক জায়গা থেকে আরেক জায়গা করে ১৩ লাখ মানুষ রাফাহতে এসে আশ্রয় নেন। এখন সেই রাফাহতে হামলার পরিকল্পনা করছে ইসরায়েলিরা।

এছাড়া রাফাহতে এই হামলা এমন এক সময়ে হলো যখন ইসরায়েলের সাথে যুদ্ধবিরতি চুক্তির সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করার জন্য হামাসের নেতাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে মিসর।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলের আক্রমণের ফলে এখন পর্যন্ত ৩৪ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও ৭৭ হাজারের বেশি মানুষ।

মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।

এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। হাজার হাজার মানুষ কোনও ধরনের আশ্রয় ছাড়াই বসবাস করছে এবং প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম ত্রাণবাহী ট্রাক এই অঞ্চলে প্রবেশ করছে।

রবিবার হামাস কর্মকর্তারা বলেছেন, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র এই গোষ্ঠীর গাজার উপ-প্রধান খলিল আল-হাইয়ার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল হামাসের পক্ষ থেকে কাতার এবং মিসরের মধ্যস্থতাকারীদের কাছে হস্তান্তর করা যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের পাশাপাশি ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করবেন।

ইসরায়েল রাফাহ আক্রমণের হুমকি দেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থিত মধ্যস্থতাকারীরা একটি চুক্তি সম্পাদনের জন্য তাদের প্রচেষ্টা আরও জোরদার করেছে।

রয়টার্সের সাথে কথা বলা হামাসের দুই কর্মকর্তা সর্বশেষ প্রস্তাবের বিষয়ে বিশদ তথ্য প্রকাশ করেননি। তবে আলোচনার বিষয়ে অবগত একটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, হামাস শনিবার ইসরায়েলের সর্বশেষ যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে সাড়া দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।


আরও খবর