
চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার পরৈকোড়া ইউনিয়নের কৈখাইন চামুদরিয়া শাহ্ আলী রজা (রহঃ) সংযোগ সড়কের ২১ বছরও হয়নি সংস্কার। এতে কাদাপানি জমে দীর্ঘদিন ধরে সড়কটি যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সংস্কার না করায় সড়কটিতে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
সড়কটির দুরবস্থার কারণে প্রায় এক কিলোমিটারের এ সড়কে ওষখাইন শাহ্ আলী রজা (রহঃ)আলিম মাদ্রাসা, ওষখাইন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাহাতা পাঠনীকোঠা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দারা দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় আলাদা হয়ে গেছে ইটের খোয়া। কোথাও কোথাও রাস্তার দুপাশ থেকে ভেঙে সামন্য চান্দি টিকলেও বেশির ভাগ জায়গায় পুরো ইট উঠে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় খানাখন্দ। একদিকে সামান্য বৃষ্টি হলেই এসব খানাখন্দে পানি জমে ছোটখাটো ডোবার রূপ ধারণ করে। অপরদিকে রৌদ্রজ্জ্বল দিনে এসব খানাখন্দ পথচারিদের দুর্ঘটনার ফাঁদ হয়ে ওঠে।
শিক্ষার্থীরা জানান, গত এপ্রিল মাসে বৃষ্টি শুরু হওয়ার পর থেকে সড়কটির অবস্থা খুবই খারাপ। সড়ক জুড়ে কাদাপানি আর বিভিন্ন অংশ গর্তে ভরে গেছে। ওই অংশ এখন একেবারেই যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এছাড়াও বৃষ্টি হলেই হাঁটু সমান কাঁদা-পানির সৃষ্টি হয়। বৃষ্টির পানি ও মাটি মিশে কাদায় একাকার হয়ে যায় পুরো রাস্তা। এতে বিপাকে পড়েন ওই এলাকার শত শত মানুষ।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় ওই সড়কটির অনেক স্থানে ইট উঠে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তার ইট বালি আলাদা হয়ে আগের কাঁচা রাস্তার মাটিও বের হয়ে গেছে। বিভিন্ন স্থানে সড়কের ইটের খোয়া বের হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। একটু বৃষ্টি হলে এ সব গর্তে কাঁদাপানি জমে। বিশেষ করে বৃষ্টি- কাদার দিনে জুতা স্যান্ডেল হাতে নিয়ে এক কিলোমিটার কাদা মাড়িয়ে যাতায়াত করতে হয়। দীর্ঘ ২১বছর পর থেকে আর কোনোদিন হয়নি সড়ক সংস্কারের কাজ। আর কত কাল এ কষ্ট করতে বছরের প্রায় ৫/৬ মাস ভোগান্তির শিকার হতে হয় গ্রামবাসীদের। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে এ রাস্তা দিয়ে চলতে গিয়ে সীমাহীন কষ্ট পোহাতে হয় তাদের। এই এলাকার মানুষের আতঙ্ক ও ভয়ের আরেক নাম হবে কে জানে বৃষ্টি। বৃষ্টি হলেই রাস্তায় জমে হাঁটু সমান কাদা।
কাদার জন্য এ রাস্তায় কোনো অ্যাম্বুলেন্স, মাইক্রোবাস, ভ্যান-রিকশা ঢোকে না। মোটরসাইকেল, বাইসাইকেলে তো দূরে থাক, খালি পায়ে হেঁটে চলাচল করাও দায়। বৃষ্টির দিনে গ্রামের কেউ অসুস্থ হলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য কোনো যানবাহন ও অ্যাম্বুলেন্সও এখানে ঢুকতে পারে না। অনেক সময় কেউ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে কাঁধে করে কর্দমাক্ত রাস্তা পার করা হয় বলেও স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান।
স্থানীয় বাসিন্দা জিকু বড়ূয়া বলেন, আমাদের দুঃখ-কষ্ট, দুর্ভোগের কথা কেউ শুনে না। আমাদের ভোগান্তির কথা বলে বোঝানো যাবে না। নিজ চোখে দেখতে হবে। আমরা ঠিকমতো হাটবাজারে যেতে পারি না। রাস্তার বেহাল দশার কারণে কৃষকরা সময়মতো পণ্য বাজারজাত করতে পারেন না। ফলে ফসলের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হতে হয়। এমন পরিস্থিতিতে কি করে চলাচল করব আমরা কিছুই বুঝেতে পারি না। জনপ্রতিনিধিদের কাছে অনুরোধ আমাদের এই রাস্তার দিকে একটু নজর দেয়ার জন্য।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুল হক চৌধুরী বাবুল বলেন, রাস্তাটি দীর্ঘ দিন ধরে জরাজীর্ণ খানা-খন্দের সৃষ্টি হয়েছে। যার কারণে যাতায়াতে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। সড়কটি টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আশা করি খুব শীগ্রই কাজ শুরু করা হবে।