গত বছরের ১০ জুলাই প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছিল রায়হান রাফি পরিচালিত ‘পরাণ’। ছবিটি মুক্তি পাওয়ার ১৯ দিন পর মুক্তি পায় মেজবাউর রহমান সুমন পরিচালিত ছবি ‘হাওয়া’। দুটি সিনেমাই মুক্তির পর মাসের পর মাস ধরে প্রদর্শিত হচ্ছে। হলমালিকরা জানিয়েছেন, নতুন মুক্তি পাওয়া ছবির তুলনায় এই দুটি ছবিতেই দর্শক হচ্ছে। স্টার সিনেপ্লেক্সে চলছে ‘হাওয়া’ সিনেমার চারটি শো, ‘পরাণ’ সিনেমার তিনটি। আর কেরানীগঞ্জের লায়নস সিনেমাসে চলছে ‘পরাণ’ সিনেমার একটি শো।
হলমালিকরা জানিয়েছেন, ‘পরাণ’ সিনেমাটি মুক্তির পর আট মাসেরও বেশি সময় ধরে চলছে। অন্যদিকে ‘হাওয়া’ সিনেমাও চলছে আট মাসের কাছাকাছি। দর্শক কেমন থাকছে এই দুই ছবির শোতে? লায়নস সিনেমাসে চলছে ‘পরাণ’ সিনেমার একটি শো। নতুন মুক্তিপ্রাপ্ত ছবিগুলোর তুলনায় এই ছবির দর্শক বেশি হচ্ছে বলে জানান লায়নস সিনেমার মালিক মির্জা আব্দুল খালেক। তিনি বলেন, ‘পরাণ’ সিনেমার একটি-দুটি শো আমরা রাখি। সেখানে কিছু দর্শক হয়। বিশাল পরিমাণে না হলেও নতুন ছবিগুলোর তুলনায় এই ছবির টিকিট ভালো বিক্রি হয়। যদি দুটি শো রাখি, তাতে ৩০ বা ৪০ জনের মতো দর্শক হয়। আবার কখনো একটি শো রাখলে সেখানে ২০ বা ২৫টি টিকিট বিক্রি হয়। কিন্তু সেই তুলনায় নতুন ছবিতে ১০-১৫ জন দর্শকও হয় না। তাই ‘পরাণ’ ছবি নতুন ছবির তুলনায় ভালো যাচ্ছে।
স্টার সিনেপ্লেক্সে ‘পরাণ’ ও ‘হাওয়া’ দুটি ছবিই চলছে। এর জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, বেশ ভালোই দর্শক হচ্ছে। এগুলো এখনো নতুন ছবির চেয়ে ভালো চলছে। মাঝে কয়েক দিন গ্যাপ ছিল, যখন অন্যান্য বাংলা ছবি চলেছে। এ সপ্তাহে যেহেতু নতুন একটি ছবি মুক্তি পেয়েছে, সেই সুযোগে আমরা ‘হাওয়া’ ও ‘পরাণ’ চালাচ্ছি। তবু ৩০ বা ৪০ শতাংশ দর্শক ছবি দুটিতে হচ্ছে। এ বছর বেশ কয়েকটি ছবি মুক্তি পেয়েছে, কোনো সিনেমাই ব্যবসাসফল হয়নি। আমার এখানে বিদেশি ছবিগুলো মোটামুটি চলছে।
গত জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি এবং মার্চের প্রথম সপ্তাহে ১২টি নতুন সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। সিনেমাগুলো হলো ‘ব্ল্যাক ওয়ার’, ‘অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবন’, ‘সাঁতাও’, ‘বীরকন্যা প্রীতিলতা’, ‘ভাগ্য’, ‘কথা দিলাম’, ‘মন দিয়েছি তারে’, ‘বুবুজান’, ‘মায়ার জঞ্জাল’, ‘ওরা সাতজন’, ‘জেকে ৭১’, ‘একটি না বলা গল্প’। এই এক ডজন সিনেমার কোনোটিই সেভাবে ব্যবসা করতে পারেনি। হলমালিকদের প্রত্যাশার কাছেও পৌঁছাতে পারেনি সিনেমাগুলো। এমনটিই জানান হলমালিকরা।
‘মধুমিতা’ সিনেমা হলের কর্ণধার ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ বলেন, তিন মাসে ১২টি সিনেমা মুক্তি পেলেও আমার হল কিন্তু চলেনি। মাঝখানে দুবার হল বন্ধ করে দিয়েছি। এখনো হল বন্ধ। কারণ যত সিনেমা চালিয়েছি, সবই ব্যবসায়িকভাবে ফ্লপ গেছে। প্রতি সপ্তাহে সিনেমা মুক্তি পায়। সেই ছবির দু-চারজন দর্শক থাকে। দু-চারজনে আমার হল চলে না। শেষ ছবি চালিয়েছি ‘ওরা সাতজন’। এক সপ্তাহ চালিয়ে হল বন্ধ। ঈদের সময় আবার খোলা হবে।