একজন দুজন নয়, ফাঁদে ফেলেছেন ৫০ জন পুরুষকে।
তাদের সঙ্গে প্রতারণা করে লুটে নিয়েছেন ৩৫ লাখ টাকা। পুরুষদের ফাঁদে ফেলে এভাবে প্রতারণার
অভিযোগে মুম্বাইয়ের মডেল নেহা ওরফে মেহরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার এসব প্রতারণার
অভিযোগ ভাবাচ্ছে পুলিশকে।
পুলিশ জানিয়েছে, পুরুষদের নানা প্রলোভন
দেখিয়ে বাড়িতে ডাকতেন নেহা। তারপর তার ও পুরুষদের ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ভিডিও গোপনে ক্যামেরায়
ধারণ করে রাখতেন। কখনো নগ্ন করে মারধরও করা হতো সেসব পুরুষদের। সেসবও ভিডিও করে রাখা
হত। আর এই ভিডিওগুলোই ছিল তার প্রধান হাতিয়ার।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দ বাজারের প্রতিবেদনে
বলা হয়েছে, টার্গেট করা ব্যক্তিদের ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপে গোপনে ধারণ করা ভিডিওগুলো
পাঠিয়ে ব্ল্যাকমেইল করতেন নেহা। আর ভুক্তভোগী পুরুষরা সম্মানের ভয়ে অর্থ দিয়ে দিতেন
তাকে।
পুলিশ জানিয়েছে, মডেল নেহা একাই এই চক্রের
সঙ্গে জড়িত নয়। তার সঙ্গে আরও অনেকে আছেন। কর্নাটকের পুলিশ সম্প্রতি এ চক্রের পর্দা
উন্মোচন করেছে। জানিয়েছে, এ পর্যন্ত ৫০ জনেরও বেশি পুরুষ তাদের এই প্রতারণার শিকার
হয়েছেন। ভুক্তভোগীদের মধ্যে একজন পুলিশে অভিযোগ করার পরই প্রকাশ্যে আসে বিষয়টি।
ভুক্তভোগী এক যুবক পুলিশকে জানিয়েছে, নেহা
প্রথমে টেলিগ্রামের মাধ্যমে যোগাযোগ করে। তার পর ফোন নম্বর নেওয়ার পর হোয়াটসঅ্যাপে
কথা চলে তাদের। মডেল ওই যুবককে জানান, তার স্বামী দুবাইয়ে কাজ করেন। তার পর নানাভাবে
তাকে যৌন সম্পর্কে জড়ানোর ইঙ্গিত দেন। হোয়াটসঅ্যাপে নিজের কিছু ছবি ও ঠিকানাও পাঠিয়েছিলেন
নেহা।
অভিযোগকারীর দাবি, গত ৩ মার্চ বিকাল সাড়ে
৩টার দিকে নেহার বাড়িতে যান তিনি। বাড়িতে যাওয়ার পর কিছুক্ষণের মধ্যে সেখানে তিন যুবক
যান। তারা ওই যুবককে মারধর করেন। তাকে নগ্ন করে রাস্তায় ঘোরানোর হুমকিও দেয়। পরে তাকে
তিন লাখ টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দেয়।
ভুক্তভোগী অভিযোগে আরও জানায়, প্রথমে একটি
ফোন নম্বরে সাড়ে ২১ হাজার টাকা পাঠান তিনি। তবুও তাকে ছেড়ে দেওয়া হয় না। বন্দি করে
রাখা হয় রাত ৮টা পর্যন্ত। পরে ক্রেডিট কার্ডের জন্য বাড়ি যাওয়ার কথা বলে বের হয়ে তাদের
থেকে রক্ষা পান।
তার অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু করে
পুলিশ। তদন্তে জানা যায়, ওই যুবকের মতো আরও অনেককে প্রতারণার ফাঁদে ফেলেছেন মডেল নেহা।
প্রতারণার মাধ্যমে ৩৫ লাখ টাকা লুট করেছেন। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেফতার করা
হয়েছে। নেহাকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। আর চক্রের সঙ্গে জড়িত বাকিদের গ্রেফতারের জন্য
খোঁজ চালানো হচ্ছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।