আজঃ মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪
শিরোনাম

ঈশ্বরদীতে শৈত্যপ্রবাহ ও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি

প্রকাশিত:বুধবার ২৬ জানুয়ারী ২০২২ | হালনাগাদ:বুধবার ২৬ জানুয়ারী ২০২২ | অনলাইন সংস্করণ
Image

ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি: 

পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলায় বুধবার সকাল থেকেই কুয়াশায়, তার ওপর থেকে থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। ভোগান্তিতে পড়েন কাজে বের হওয়া শ্রমজীবী মানুষ।

ঈশ্বরদীতে গত কয়েকদিন থেকেই চলছিল কুয়াশার সঙ্গে সূর্যের লুকোচুরি। সকাল থেকেই সূর্য পুরোপুরি চলে যায় ঘন কুয়াশা আর মেঘের আড়ালে।

বুধবার সকাল থেকেই মেলেনি সূর্যের দেখা। ১২ টা থেকে শুরু হয় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। সঙ্গে কনকনে হিমেল হাওয়া দুর্ভোগ আরও বাড়িয়েছে।

বৈরী আবহাওয়ার কারণে দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষেরা। দিনমজুররা বলেন, সকালে কাজের উদ্দেশ্যে বের হয়েছিলাম। কিন্তু আজ মহাজনেরা আসেননি। কাজ না পেয়ে আমার মতো আরও ৪০-৫০ জন ফিরে গেছে।

এদিকে রেলগেটে ফেরি করে সবজি বিক্রেতারা বলেন, সকালে কুয়াশায় কিছু দেখা যাচ্ছিল না। বেলা বাড়লেও কোন রোদের দেখা মেলেনি। এমন পরিস্থিতে বিক্রি কমে গেছে।

রিকশাচালকরা জানান এমনিতেই বইছে শৈত্যপ্রবাহ, তার ওপর গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হওয়ায় মানুষজন খুব একটা বের হননি। ভাড়ারজন্য বৃষ্টিতে ভিজেই রাস্তায় থাকছি।

ঈশ্বরদী আবহাওয়া দপ্তরের পর্যবেক্ষক নাজমুল হক জানান, বুধবার ভোর ৬টায় ঈশ্বরদীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।


আরও খবর



চট্টগ্রামের এয়াকুবনগর বস্তির আগুন নিয়ন্ত্রণে, পুড়ল ২০০ ঘর

প্রকাশিত:সোমবার ১৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ১৫ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
রাহুল সরকার, চট্টগ্রাম ব্যুরো

Image

চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানার ফিরিঙ্গিবাজার এলাকায় এয়াকুবনগর বস্তিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (১৫ এপ্রিল) দুপুর সোয়া ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় প্রায় দুইশ ঘর পুড়ে গেছে।

ফায়ার সার্ভিসের চট্টগ্রাম অঞ্চলের ডিএডি আব্দুর রাজ্জাক জানান, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৪টি স্টেশনের ১১টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ শুরু করে। পরে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের দেড় ঘণ্টার অক্লান্ত প্রচেষ্টায় বিকেল পৌনে ৩টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে।

ফিরিঙ্গি বাজারের মেরিনার্স রোড সংলগ্ন টেকপাড়া বস্তিতে কীভাবে আগুনের সূত্রপাত হল, তা জানাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস। আগুন লাগার পর দূর থেকেও কালো ধোঁয়া উড়তে দেখা যাচ্ছিল।

ফিরিঙ্গি বাজার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব বলেন, আগুন লাগার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ছুটে এসেছি। স্থানীয়দের সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। টেকপাড়া বস্তি আর এয়াকুব নগরের পিছনের অংশ জুড়ে কিছু ঘর আছে, সেগুলোতেও আগুন লেগেছে।

তিনি আরো জানান, মেয়র মহোদয়, জেলা প্রশাসক ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে কথা হয়েছে। কত লোক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা তালিকা করে জানাতে বলেছেন উনারা। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য রাতে খাবারের ব্যবস্থা করা হবে। তাদের ক্ষতিপূরণের বিষয়টি দেখা হবে।

কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব জানান, এখনো পূর্ণাঙ্গ তথ্য না মিললেও প্রায় দুইশ ঘর পুড়েছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, আগুনে বস্তির বেশ কয়েকটি কাঁচাঘর পুড়ে গেছে। এসব বাড়ির কোনোটির বাসিন্দারা এখনো ঈদ শেষে বাড়ি থেকে ফেরেননি। অর্থাৎ বন্ধ অবস্থায় মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে অনেকেন। আর যারা আছেন চোখের সামনে নিজের বসতি পুড়তে দেখে বিলাপ করছেন বাসিন্দারা।


আরও খবর



পরিকল্পিতভাবে ব্যাংকে হামলা চালায় কুকি চিন : পুলিশ

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০৪ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৪ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জেলা প্রতিনিধি

Image

কম সময়ের মধ্যে মোটা অঙ্কের টাকা জোগাড় করতে বান্দরবানে ব্যাংক তিনটিতে পরিকল্পিতভাবে কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট-কেএনএফ হামলা চালায় বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) বান্দরবানের রুমায় ব্যাংক ডাকাতির ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে চট্টগ্রাম রেঞ্জ পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) নুরে আলম মিনা এ কথা জানান।

গত মঙ্গলবার রাতে ও বুধবার দুপুরে বান্দরবানের রুমা এবং থানচি উপজেলার কৃষি ও সোনালী ব্যাংকের তিনটি শাখায় হামলা চালায় সশস্ত্র লোকজন। তারা টাকা লুট করার পাশাপাশি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মারধর করে। এছাড়া একজন ব্যাংক ব্যবস্থাপককে অপহরণ করে নিয়ে যায়। নিরাপত্তারক্ষীদের কাছ থেকে বেশ কিছু অস্ত্র ও গুলি ছিনিয়ে নেয় তারা।

রুমায় সোনালী ব্যাংকে হামলা-ডাকাতি এবং ব্যবস্থাপক নেজাম উদ্দিনকে অপহরণের ঘটনাটি মঙ্গলবার রাতে প্রথম ভাগে ঘটলেও; থানচিতে কৃষি ও সোনালী ব্যাংকে হামলা হয়েছে ভরদুপুরে।

দুটি ঘটনাতেই পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট-কেএনএফ জড়িত বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বুধবার বিকেলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালও এ ঘটনায় কেএনএফের নাম নিয়েছিলেন।

বৃহস্পতিবার সকালে রুমা উপজেলা হাসপাতালে ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় আহত দুই পুলিশ সদস্যকে দেখতে যান ডিআইজি নুরে আলম মিনা। এর আগে তিনি ডাকাতি হওয়া সোনালী ব্যাংকের রুমা শাখা কার্যালয় পরিদর্শন করেন।

ডিআইজি বলেন, রুমা ও থানচিতে ব্যাংক ডাকাতির ঘটনা একই ধরনের এবং একই চক্রের মনে হচ্ছে। ব্যাংকে ডাকাতির এ ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত। এপ্রিল মাসে কয়েকটি উৎসব থাকায় ব্যাংকে বেশি অর্থ থাকার সুযোগে সন্ত্রাসীরা ডাকাতির ঘটনা ঘটিয়েছে।

এদিকে, বুধবার থেকে নিরাপত্তাজনিত কারণে জেলা সদর ব্যতীত বান্দরবানের অন্য ৬ উপজেলার ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। পরপর তিন ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনায় জেলাজুড়েও আতঙ্ক বিরাজ করছে।

নিউজ ট্যাগ: কুকি চিন

আরও খবর



বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস আজ

প্রকাশিত:রবিবার ০৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৭ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

আজ ৭ এপ্রিল বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস। দিবসটি উপলক্ষ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং স্বাস্থ্য বিষয়ে কাজ করে এমন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাসমূহ নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত প্রতিপাদ্যের আলোকে বাংলাদেশও এবছর দিবসটি উদযাপন করছে। এবারের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে স্বাস্থ্যের অধিকার নিশ্চিতে : কাজ করি একসাথে

দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

এ বছর দিবসটি উদযাপন উপলক্ষ্যে গৃহীত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সেমিনার আয়োজন, স্যুভেনির প্রকাশ, স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রদর্শনী, জাতীয় পত্রিকায় ক্রোড়পত্র প্রকাশ, সড়কদ্বীপ সজ্জিতকরণ, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠানসহ অন্যান্য কার্যক্রম।

১৯৪৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘ অর্থনীতি ও সমাজ পরিষদ আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের সম্মেলন ডাকার সিদ্ধান্ত নেয়। একই বছরের জুন ও জুলাই মাসে আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাংগঠনিক আইন গৃহীত হয়, ১৯৪৮ সালের ৭ এপ্রিল এই সংগঠন আইন আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হয়। এইদিন বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস বলে নির্ধারিত হয়। প্রতিবছর সংস্থাটি এমন একটি স্বাস্থ্য ইস্যু বেছে নেয়, যা বিশেষ করে সারা পৃথিবীর জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। এদিন স্থানীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে পালিত হয় এ দিবসটি।


আরও খবর



বদলা নেওয়ার ‘ঘোষণা দিয়েই’ বান্দরবানে হামলা চালালো কেএনএফ

প্রকাশিত:বুধবার ০৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০৩ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

বান্দরবানের রুমায় সোনালী ব্যাংকে হামলা ও লুটের ১৬ ঘণ্টার মাথায় থানচি উপজেলার দুটি ব্যাংক থেকে টাকা লুটের ঘটনা ঘটেছে। ধারণা করা হচ্ছে এ হামলার পেছনে বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) হাত রয়েছে। ব্যাংকে হামলার তিন সপ্তাহ আগে এক ফেসবুক পেজ থেকে বদলা নেওয়ার’ ঘোষণা দেয় পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী এ সংগঠন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক তাদের দুই সদস্যকে আটকের ফিডব্যাক’ হিসেবে তারা এ ঘোষণা দিয়েছিল।

‘কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মি- কেএনএফ’ নামের এক ফেসবুক পেজ থেকে গত ১২ মার্চ এক পোস্ট করা হয়। ওই পোস্টে বলা হয়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী চুক্তি ভঙ্গ করে বম সম্প্রদায়ের নিরীহ জনগণ লালমুয়ানওম বম (গিলগাল বা অবচলিত পাড়া) এবং রামনুয়াম বমকে (দুনিবার পাড়া) আটক করেছে। এর ফল খুব সুন্দরভাবে ফিডব্যাক দেওয়া হবে। নিরীহ জনগণকে হয়রানি বন্ধ করা না হলে।’

সংগঠনটির ইনফরমেশন অ্যান্ড ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চের দায়িত্বে থাকা ক্যাপ্টেন ফ্লেমিংয়ের বরাতে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী সংগঠনটির এ ঘোষণার ২১ দিনের মাথায় গতকাল বান্দরবানের রুমা উপজেলা সদরে সোনালী ব্যাংকে হামলার ঘটনা ঘটে।

এদিকে, বুধবার (৩ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টায় থানচিতে সোনালী ও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের শাখায় হামলা চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। এসময় ব্যাংক দুটি থেকে নগদ টাকা লুট করা হয়। তবে এখন পর্যন্ত হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

থানচির শাহজাহানপুরের দিক থেকে তিনটি চাঁদের গাড়িতে করে সন্ত্রাসীরা গুলি করতে করতে বাজার এলাকায় প্রবেশ করে। এরপর থানচি উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন দুটি ব্যাংকে লুটতরাজ চালিয়ে আবার ওই তিন গাড়িতে করে শাহজাহানপুরের দিকে চলে যায়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বান্দরবানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) আবদুল করিম বলেন, থানচি সদরের সোনালী ব্যাংক ও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের শাখায় হামলার ঘটনা ঘটে। এসময় সন্ত্রাসীরা ব্যাংকে ঢুকে কর্মকর্তাদের জিম্মি করে নগদ টাকা নিয়ে গেছে।’

স্থানীয় সূত্র জানায়, থানচির শাহজাহানপুরের দিক থেকে তিনটি চাঁদের গাড়িতে করে সন্ত্রাসীরা গুলি করতে করতে বাজার এলাকায় প্রবেশ করে। এরপর থানচি উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন দুটি ব্যাংকে লুটতরাজ চালিয়ে আবার ওই তিন গাড়িতে শাহজাহানপুরের দিকে চলে যায়।

টানা দুদিনের হামলায় বান্দরবানজুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। বিভিন্ন উপজেলায় সেনাবাহিনী এবং পুলিশের টহল বাড়িয়ে নিরাপত্তা জোড়দার করা হয়েছে।

বিচ্ছিন্নতাবাদী এ সংগঠনটির সামরিক শাখা কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মি বা কেএনএফ নামে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে।

গত ৫ মার্চ কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির দ্বিতীয় দফায় মুখোমুখি সংলাপ হয়। রুমা উপজেলার বেথেলপাড়া কমিউনিটি সেন্টারে এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। চলতি (এপ্রিল) মাসের মাঝামাঝি আবারও বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দ্বিতীয় সেই সংলাপের এক মাসের মাথায় গতকাল মঙ্গলবার বান্দরবানের রুমা উপজেলা সদরে সোনালী ব্যাংকে হামলার ঘটনা ঘটে। হামলার স্থান রুমা উপজেলার বেথেলপাড়া থেকে একেবারে হাঁটা দূরত্বে।

বেথেলপাড়ায় গত ৫ মার্চ কেএনএফের সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠা’ কমিটির বৈঠকে আর সন্ত্রাসী তৎপরতা না চালানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল কেএনএফ। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই বৈঠকের পরও রুমা উপজেলা সদরসংলগ্ন বম জনগোষ্ঠীর বেথেলপাড়া, মুনলাইপাড়া, এডেনপাড়াসহ বিভিন্ন পাড়ায় কেএনএফ সদস্যরা আশ্রয় নিয়েছিল।

কেএনএফের সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির দ্বিতীয় দফায় সংলাপের এক মাসের মাথায় গতকাল মঙ্গলবার রুমা উপজেলা সদরে সোনালী ব্যাংকে হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় ব্যাংকের কর্মকর্তা, নিরাপত্তা রক্ষীসহ অন্তত ২০ জনকে মারধর করা হয়। অপহরণ করা হয় ওই শাখার ব্যবস্থাপক নেজাম উদ্দিনকে। লুট করা হয় ৮টি চায়নিজ রাইফেল, দুটি এসএমজি, চারটি শটগান, ৪১৫টি গুলি এবং ব্যাংকের নগদ অর্থ।

বান্দরবানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) আবদুল করিম বলেন, গতকাল রাত ৯টার দিকে কেএনএফের প্রায় ১০০ অস্ত্রধারী সদস্য এই হামলায় অংশ নিয়েছে। হামলাকারী অনেকের গায়ে কেএনএফের লোগোসহ পোশাক ছিল। হামলার শুরুতে সন্ত্রাসীরা উপজেলা পরিষদের দায়িত্বে থাকা পুলিশ ও আনসার সদস্যদের মারধর করে অস্ত্র ও মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়।’

তিনি বলেন, সোনালী ব্যাংকের ওই শাখার ম্যানেজার মো. নিজাম উদ্দিনকে অপহরণ করা হয়েছে। গত ১৬ ঘণ্টা ধরে অভিযান পরিচালনা করেও তাকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।’

পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন বলেন, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সাধারণ জনগণের নিরাপত্তায় পুলিশ সদস্য সংখ্যা বাড়িয়ে সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’

রুমা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈ বং মারমা বলেন, ব্যাংককর্মীরা যখন নামাজ পড়ছিলেন, ঠিক তখনই হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় ম্যানেজারকে অপহরণের পাশাপাশি নিরাপত্তার কাজে ব্যবহৃত বেশ কিছু অস্ত্র ও মোবাইল ফোন সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা নিয়ে গেছে।’

ওই ঘটনার বর্ণনা দিয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ দিদারুল আলম বলেন, সন্ত্রাসীরা উপজেলা কমপ্লেক্সের বাউন্ডারির ভেতরে থাকা মসজিদে ঢুকে প্রথমে দরজা বন্ধ করে দেয়। তখন তারাবি নামাজের জন্য অনেক কর্মকর্তা সেখানে ছিলেন। শুরুতেই নামাজরত সবাইকে বন্দি করে সন্ত্রাসীরা প্রচণ্ড মারধর করে। সঙ্গে থাকা টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। পরে তারা অস্ত্র হাতে ব্যাংক ম্যানেজারকে জিম্মি করে ব্যাংকে নিয়ে যায় এবং লকার খুলে ব্যাংক লুট করে।’

অপহৃত ব্যাংক ম্যানেজার নিজাম উদ্দিনের বাড়ি কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় বলে জানা গেছে।

সন্ত্রাসীরা উপজেলা কমপ্লেক্সের বাউন্ডারির ভেতরে থাকা মসজিদে ঢুকে প্রথমে দরজা বন্ধ করে দেয়। তখন তারাবি নামাজের জন্য অনেক কর্মকর্তা সেখানে ছিলেন। শুরুতেই নামাজরত সবাইকে বন্দি করে সন্ত্রাসীরা প্রচণ্ড মারধর করে। সঙ্গে থাকা টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়।

ব্যাংকে সন্ত্রাসী হামলা ও লুটপাটের ঘটনা তদন্তে কক্সবাজার থেকে পিবিআইয়ের পাঁচ সদস্যের একটি টিম আজ দুপুরে রুমা পরিদর্শন করেছে। সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মাহফুজুর রহমান এবং বান্দরবানের পুলিশ সুপার মো. সৈকত শাহীন। তারা সোনালী ব্যাংকের ভল্ট দেখেন। তবে কোনো টাকা খোয়া গেছে কি না- এ বিষয়ে এখনো বিস্তারিত কিছু জানাননি তারা।

জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, পিবিআই ও ব্যাংকের তদন্ত টিমের কাজ শেষে বলা যাবে ভল্ট থেকে টাকা খোয়া গেছে কি না। অপহৃত ব্যাংক ম্যানেজার নিজাম উদ্দিনকে উদ্ধারে নিরাপত্তা বাহিনীর বেশ কয়েকটি টিম অভিযান পরিচালনা করছে।’

এদিকে, নিরাপত্তার কারণে সদর উপজেলা বাদে জেলার ছয় উপজেলার সব ব্যাংকের কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বুধবার বান্দরবান সোনালী ব্যাংকের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার ওসমান গণি বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

একই সঙ্গে পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটিতে সোনালী ব্যাংকের ১৯টি এবং খাগড়াছড়ির ৯টি শাখায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় সতর্কভাবে লেনদেন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বান্দরবানে নতুন সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফ ২০২২ সালের মাঝামাঝি থেকে তৎপরতা শুরু করে। পাহাড়ে তাদের আস্তানায় সমতলের নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার সদস্যরা সশস্ত্র প্রশিক্ষণ নিয়েছিল বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এর আগে গণমাধ্যমকে জানিয়েছিল।

ওই আস্তানায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গত বছর অভিযান চালিয়ে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া ও কেএনএফের বেশ কয়েকজন সদস্যকে গ্রেফতার করে।

কেএনএফ সদস্যদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা মারমার নেতৃত্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা’ কমিটি গঠন করা হয় গত বছরের মে মাসে। এরপর থেকে কমিটি কেএনএফের সদস্যদের সঙ্গে সংলাপ চালিয়ে আসছে।


আরও খবর
চতুর্থ ধাপের উপজেলা নির্বাচন ৫ জুন

মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪




বুলেট-বোমা, ক্ষুধায় বিষণ্ন ঈদ গাজায়

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৯ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

পবিত্র ঈদুল ফিতর। মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব। দীর্ঘ এক মাস সিয়াম পালনের পর ধর্মীয় এ উৎসবকে সামনে রেখে চারদিকে আনন্দ-উল্লাস। তবে বিশ্বে এমনো এক প্রান্ত রয়েছে যেখানে শুধুই স্বজন হারানোর হাহাকার। বাতাসে লাশের গন্ধ। বিধ্বস্ত কংক্রিটের ভাঁজে ভাঁজে রক্তের ছাপ। ধূলিসাৎ হয়ে গেছে মসজিদ, পার্ক, ঐতিহাসিক ভবনসহ প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। বুলেট-বোমা, ক্ষুধায় এবার বিষণ্ন ঈদ গাজায়। বাড়িতে খাবার নেই। নতুন পোশাক নেই। জীবনেরও কোনো নিয়শ্চয়তা নেই। ইসরাইলের অমানবীয় অত্যাচারে আনন্দহীন ঈদ কাটাবে গাজাবাসী। আলজাজিরা।

গাজা উপত্যকায় যা ঘটছে তা প্রত্যক্ষ করা হৃদয়বিদারক। ইহুদিবাদীরা তাদের পৈশাচিক আচরণ এবং ঘৃণ্য পেশা দিয়ে শোক ও বেদনাকে ছড়িয়ে দিয়েছে গাজায়। অবরুদ্ধ অঞ্চলটিতে শুধুই দুর্ভিক্ষ। অনেকেই স্বজন হারিয়ে একাকী ঈদের দিনটি কাটাবে। তবুও অসংখ্য গাজাবাসীর আশায় দিন কাটাচ্ছে তাদের দুঃখের অবসান হবে। তাদের মতে, শহিদদের রক্ত ইসরাইলের বর্বর সামরিক দখলদারিত্ব থেকে মুক্তির পথকে উন্মুক্ত করে দেবে।

এদিকে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিস শহরে ফিরতে শুরু করেছেন সেখানকার বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা। সোমবার দলে দলে ফিলিস্তিনিরা বিধ্বস্ত শহরে ফিরছেন। দক্ষিণাঞ্চল থেকে ইসরাইলি সেনাবাহিনী আংশিক সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণার পর এই ফিরে আসা শুরু হয়েছে। মার্কিন বার্তা সংস্থা এপি এ খবর জানিয়েছে। খান ইউনিসে অনেকেই নিজের শহরকে চিনতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন।

ইসরাইলি আগ্রাসনে গাজার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহরটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। অসংখ্য ভবন, অ্যাপার্টমেন্ট ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব হারিয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে স্কুল ও হাসপাতাল। সড়কগুলোতে বুলডোজার চালিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। বাস্তুচ্যুত হওয়া নাজওয়া আয়াশ নামের আরেকজন বলেছেন, তার পরিবারের অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের তৃতীয়তলায় তিনি যেতে পারছেন না। কারণ সিঁড়ি নেই। ধ্বংসস্তূপ বেয়ে উপরে ওঠে তার ভাই সন্তানদের জন্য কিছু জিনিসপত্র নিয়ে এসেছেন। বাসেল আবু নাসের আরেক বাসিন্দা বলেছেন, শহরটি ধ্বংসনগরী হয়ে গেছে। জীবনের কোনো স্পন্দন নেই। তারা কিছুই অবশিষ্ট রাখেনি।

যুদ্ধবিধ্বস্ত অবরুদ্ধ ভূখণ্ড গাজাতে ফিলিস্তিনি জনগণের সমর্থনে এক কোটি লিটার জ্বালানি পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে ইরাক সরকার। এছাড়া গাজার আহত ফিলিস্তিনিদের গ্রহণ এবং তাদের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার বিষয়েও সিদ্ধান্ত নিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি।

রোববার ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শিয়া আল-সুদানি এ ঘোষণা দেন। এক বিবৃতিতে ইরাকের প্রধানমন্ত্রী জানান, তার দেশ গাজার বাসিন্দাদের জন্য এক কোটি লিটার জ্বালানি পাঠাবে। ছয় মাসের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে জ্বালানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে গাজা উপত্যকায়। জ্বালানির অভাবে সেখানকার হাসপাতাল, পানি ব্যবস্থাপনা, বেকারি ও ত্রাণ কার্যক্রম প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। তাই ফিলিস্তিনি নাগরিকদের সুবিধার্থে এই সহায়তা দিচ্ছে ইরাক।

অন্যদিকে অবরুদ্ধ গাজায় ৩০০টিরও বেশি ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করেছে। সোমবার এই ঘোষণা দিয়েছে ইসরাইল। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে প্রতিদিন ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশের সর্বোচ্চ সংখ্যা এটি। দুর্ভিক্ষগ্রস্ত অঞ্চলটিতে খাদ্য সহায়তা প্রবেশের জন্য ইসরাইলকে ক্রমবর্ধমানভাবে চাপ দিয়ে আসছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। এরই মধ্যে দেশটি সোমবার ফিলিস্তিনি এই ভখণ্ডে ৩২২টি ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করানোর কথা জানিয়েছে। তবে অঞ্চলটির অনাহারে ভোগা লাখ লাখ ফিলিস্তিনির জন্য গাজায় সোমবার প্রবেশ করা এই সংখ্যক ট্রাক যথেষ্ট নয়।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া একটি বিবৃতিতে ইসরাইলের কোঅর্ডিনেটর অব গভর্নমেন্ট অ্যাক্টিভিটিস ইন দ্য টেরিটরি (সিওজিএটি) বলেছে, ত্রাণবাহী গাড়িবহরের ২২৮টি ট্রাকে খাদ্যপণ্য ছিল। এই ট্রাকগুলো মোট সংখ্যার ৭০ শতাংশ। রাফাহ থেকে আলজাজিরার প্রতিবেদক তারেক আবু আজউম জানিয়েছেন, অন্য ট্রাকগুলোও কারেম আবু সালেম সীমান্ত দিয়ে গিয়েছিল। এই সীমান্তটি ইসরাইলিদের কাছে কেরেম শালোম নামে পরিচিত। তিনি বলেন, মানবিক সহায়তা বহনকারী গাড়ি বহরের অধিকাংশ গাড়িই পানি, চিনি, আটা ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস বোঝাই ছিল।


আরও খবর