কোরবানির ঈদের আর মাত্র বাকি দুই দিন।
ঈদ সামনে রেখে লোহার আগুনের তাপে ব্যস্ত সময় পার করছেন কামার শিল্পীরা। চট্টগ্রামে
আনোয়ারা উপজেলায় কামারপাড়া এখন ঠুং-ঠাং শব্দে
মুখরিত।
লোহাকে উত্তপ্ত আগুনে পুড়ে লাল করে হাতুড়ি
দিয়ে পিটিয়ে নানা শৈল্পিক রূপ দিচ্ছেন কামার শিল্পীরা। কোরবানি পশুর মাংস কাটায়
ব্যবহৃত দা, ছুরি, চাপাতি, বটিসহ নানা সরঞ্জাম তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছে তারা। কেউ
কেউ কাটাচ্ছেন নির্ঘুম রাত। সবমিলিয়ে আনোয়ারার কামার পল্লীতে এখন কর্মচাঞ্চল্য বিরাজ
করছে।
আরও পড়ুন: বিকেল ৫টার মধ্যে কোরবানির বর্জ্য অপসারণ করতে চায় চসিক মেয়র
উপজেলার ছত্তারহাট,বটতলী রুস্তমহাট, চাতরী
চৌমুহনী বাজার, মহাল খান বাজার, জুঁইদন্ডী, মালঘর বাজার, জয়কালী বাজার, গহিরা দোভাষীহাট
ও সরকারহাটে কামার দোকান ঘুরে দেখা যায়, কোরবানি পশু জবাইয়ের বিভিন্ন রকম সরঞ্জামে
সেজেছে দোকানগুলো। কঠিন খাটুনির মাধ্যমে জিনিসপত্র তৈরিতে একটানা কাজ করে যাচ্ছেন কামাররা।
প্রতিটি দোকানে ৩-৪ জন কামার কাজ করছেন।
মূল কারিগর আগুনের চুলায় লোহা গরমে ব্যস্ত।
অন্যান্য সহযোগীদের কেউ লোহাকে পিটিয়ে আকৃতি পরিবর্তন করছেন, কেউ রেত দিয়ে ধারালো
করছেন। আবার কেউবা মূল কারিগরের সাথে সমানতালে হাতুড়ি দিয়ে লোহা পেটাচ্ছেন।
আরও পড়ুন: অটোরিকশা-ভটভটি সংঘর্ষ, দুই বোনসহ নিহত ৩
শুধু নতুন জিনিসপত্র তৈরি নয় পুরাতন দা,
ছুরি, বটিও শাঁন দিচ্ছেন কামাররা। এরইমধ্যে কেউ আসছেন পশু জবাইয়ের নতুন চুরি বানাতে,
কেউ পুরাতন সরঞ্জাম নিয়ে হাজির হয়েছেন শাঁন দিবে বলে। তবে নতুন কাজের চেয়ে পুরাতন
কাজই বেশি বলে জানান কামাররা।
আরও পড়ুন: টানা পাঁচ দিনের ছুটির কবলে ভোমরা স্থলবন্দর
পরৈকোড়া ইউনিয়নে ছত্তারহাটের বিমল কর্মকার
আজকের দর্পণকে বলেন, এ কাজ খুবই পরিশ্রমের। প্রতিটি ছুরি বানাতে প্রায় ২ ঘন্টা সময়
লাগে। লোহা ভেদে দাম নির্ধারণ করা হয়। সবচেয়ে বেশি দামের ছুরি স্প্রিং লোহা দিয়ে
তৈরি হচ্ছে। লোহার খন্ডকে আগুনে গরম করে পানিতে ঠান্ডা করা হয়। এরপর হাতুড়ি পেটা
শুরু। নির্দিষ্ট বা কাঙ্খিত আকারে না আসা পর্যন্ত লোহাকে পেটাতে হয়। তারপর আবার রেত
দিয়ে ঘষামাজার কাজ, সর্বশেষ নোনাজলে ডুবিয়ে প্রস্তুত হয় দা, বটি কিংবা ছুরি।
তিনি আরো বলেন, বছরের এই মৌসুমে আমাদের
ব্যবসার সময়। সারা বছর তেমন কোন কাজ থাকে না। কোরবানি ঈদ আসলে আমরা ঈদের আনন্দ পাই।
একটু বেশি পয়সা আয় হয় বলে পরিবার নিয়ে সুখে থাকি। ভালো সময় কাটে।