তাসকিন রহমান, ঢাকা:
ঈদ মুসলমানদের
প্রধান ধর্মীয় উৎসব। আরও বেশ কিছু ধর্মীয় উৎসব থাকলেও বছরে দুটি ঈদ বয়ে আনে বিশেষ কিছু,
বিশেষ আনন্দ। সারা বছর ধরে বিশ্বের সব মুসলিম জাতি অপেক্ষায় থাকে ঈদ উৎসবের। প্রস্তুতি
চলে বছরজুড়ে। এর মধ্যে বাঙালির ঈদ একটু হলেও ব্যতিক্রম। এই উৎসব শুধু মুসলমানদের মধ্যে
সীমাবদ্ধ থাকে না, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সমগ্র বাঙালি জাতি যোগ দেয় এই উৎসব আনন্দে।
এই বৈশিষ্ট্যই বাঙালির ঈদকে মহিমান্বিত করে তোলে।
ইতিহাস বলছে,
নবাবি আমলে ঢাকায় ঢোল পিটিয়ে ঈদের ঘোষণা করা হতো। রাজপথ পদদলিত হতো ঈদের মিছিলে। বিভিন্ন
স্থানে মেলা, রেসকোর্সে ঘোড়দৌড় আর মুখরোচক খাবারের গন্ধে মৌ মৌ করত চারপাশ।
অতীতের মতো জাঁকজমকপূর্ণ
ঈদ আয়োজন আর চোখে পড়ে না। অনেকেই বলেন, এ যুগে ঢাকার ঈদ পানসে। চোখ ধাঁধানো, মন জুড়ানো
সেই সব আয়োজন এখন আর দেখা যায় না। নগরায়ণের কুঠারাঘাতে কমেছে মানুষের সঙ্গে মানুষের
যোগাযোগ। ঈদ সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে ব্যক্তি ও পরিবারের মধ্যে।
এবারও ভাবগাম্ভির্যের
মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে ঈদ উল আযাহা। গরু, মহিষ, ছাগল, দুম্বা, উটসহ চার পায়ী যেকোন
হালাল প্রানীকেই কোরবান দিয়ে আসছেন ইসলাম ধর্মের অনুসারীরা। তাই বাজার ও খামার থেকে
পছন্দসই পশু কিনে থাকেন ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা। তবে অতীতের ন্যায় এখনও বাজারের সেরা গরু
কিনে ভিন্ন আঙ্গিকে সাজিয়ে গরুকে বাড়ী এনে আড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কোরবানী দেয়াই
পুরান ঢাকার একটি ঐতিহ্য। ঢাকা ৭ আসনের এমপি হাজী সেলিম, পুরান ঢাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক দানবীর হাজী রাশেদ, হাজী সাঈদ
হোসাইন প্রকাশ ময়না হাজী, একসময়ের খ্যাতনামা রাজনীতিবিদ ও বিশিষ্ট সমাজ সেবক তনাই মোল্লা,
বেলাল হাজীসহ আরও অনেকেই বংশ পরম্পরায় এই রীতিটি অনুসরন করে আসছে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ
আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি সরফুদ্দীন সেন্টু ঢাকা মহানগর দঃ আওয়ামীলীগের সকল নেতা কর্মীসহ
সবাইকে ঈদ উল আযাহার শুভেচ্ছা জানান। তিনি বলেন, দেশের মানুষ বিভিন্ন পেশায় দায়িত্বশীল
ভূমিকা রেখে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে আর জাতীর জনকের কন্যা তাদের জন্য উন্নত দেশ গড়ার
লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর শাসনামলে বেশ কয়েকটি মেগাপ্রজেক্ট বাস্তবায়ন করেছেন এবং চলমান অন্যান্য
মেগাপ্রজেক্ট গুলোও বাস্তবায়ন করবেন এটা জনগন বিশ্বাস করেন। তাই এই ঈদের দিনে ১৫ আগস্টে
নিহত বঙ্গবন্ধুসহ সকলের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই, জাতীয় চার নেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।
এছাড়াও দেশের ক্রান্তিলগ্নে বিভিন্ন শহীদদের প্রতিও গভীর শ্রদ্ধা জানাই। আমাদের জননেত্রী
ও প্রধানমন্ত্রীকে আমার শ্রদ্ধা ও সুস্থতাসহ দীর্ঘ জীবন কামনা করছি।
দাদার আমল থেকেই
বিশাল আকৃতির গরু কিনে গরুকে সাজিয়ে গুছিয়ে কোরবানী দেয়ার ঐতিহ্য ধরে রাখতে এবছরও বিশাল
আকৃতির ৫টি গরু কিনে ঈদের ২য় দিনে এলাকার মেহনতি মানুষের মাঝে বিলিয়ে দিবেন হাজী রাশেদ।
তিনি বলেন, দেশের সকল মুসলিম উম্মাহর প্রতি আমার ঈদ উল আযাহার শুভেচ্ছা। সবার জীবনে
শান্তি বয়ে আনুক এটাই আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে দোয়া করি। তিনি বলেন, প্রতিবছরের
ন্যায় এবারও এলাকার সকল পরিবারের কাছে কোরবানীর গোস্ত দিবেন।
৫৫ নং ওয়ার্ড
কাউন্সিলর হাজী নুর ই আলম চৌধুরীও ঈদের ২য় দিনে বিশাল আকৃতির ২টি গরু কিনে এলাকাবাসীর
মাঝে বিলিয়ে দেন। এলাকাবাসীর কাছে তিনি দোয়া চান তিনি যেন সুস্থ থাকেন। আর তিনিও উনার
৫৫নং ওয়ার্ডের জনগনকে ঈদ উল আযাহার শুভেচ্ছা জানান।
কাউন্সিলির হিসেবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে তিনি কি কি উদ্যোগ নিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাননীয় মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপসের নির্দেশনায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনার যেন কমতি না হয় সেই ব্যাপারে পরিচ্ছন্ন কর্মীদের কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে এবং তা সঠিকভাবে পালন করবেন বলে জানিয়েছে ঢাকা দঃ সিটি কর্পোরেশনে নিয়োজিত পরিচ্ছন্ন কর্মীরা। তিনি দাবী করেন ঈদের ৩য় দিন পর্যন্ত পরিচ্ছন্ন কর্মীরা মাঠে থাকবেন আর ১২ ঘন্টার মধ্যে পুরো এলাকা পরিস্কার করে দিবেন।