চলতি বছরের
ডিসেম্বরের শেষে অথবা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দেশের দ্বাদশ জাতীয়
সংসদ নির্বাচন। আসন্ন নির্বাচন ও আসনভিত্তিক সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে দেশজুড়ে চলছে
নানা আলোচনা। আসন্ন ভোটের হাওয়া লেগেছে খোদ রাজধানীতেও।
পাঁচটি থানার
(রমনা-মতিঝিল-শাহবাগ-পল্টন-শাহজাহানপুর) আওতাধীন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিসিসি)
এর অর্ন্তগত ৮, ৯, ১০, ১১, ১২, ১৩, ১৯, ২০ ও ২১ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত ঢাকা-৮ সংসদীয়
আসন। মহাজোটের প্রার্থীর পরিবর্তে এই আসনের সাংসদ পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর মনোনয়ন
চান দলটির তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা।
জানা গেছে,
এই আসনের সাংসদ পদে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী হিসেবে সকলের পছন্দ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ
আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য মাসুদ সেরনিয়াবাত (সাইফুল ইসলাম)। নেতা-কর্মী ও ভোটারদের
পাশাপাশি দলের জরিপ এবং সরকারের বিভিন্ন সংস্থার জরিপেও আওয়ামী লীগের প্রার্থী হওয়ার
দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন শহীদ পরিবারের সন্তান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এর কৃতি শিক্ষার্থী মাসুদ সেরনিয়াবাত।
ঢাকা-৮ আসনের
বর্তমান সাংসদ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। ২০০৮ সালে মহাজোটের প্রার্থী
হয়ে প্রথমবার এ আসনের সাংসদ হয়েছিলেন। এরপর ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে প্রায়
১৫ বছর ধরে সাংসদের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
নেতা-কর্মীরা
জানান, মাসুদ সেরনিয়াবাত দীর্ঘদিন ধরে এই আসনের নেতা-কর্মীদের পাশে থেকে কাজ করছেন।
তার (মাসুদ সেরনিয়াবাত) সাংগঠনিক দক্ষতার জন্যই এই আসনের নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে
বিএনপি-জামাতকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করে যাচ্ছে দৃঢ়তার সঙ্গে।
পল্টন থানা
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন শফিউল আজম শাহীন। এর আগে তিনি
একই থানাধীন ১৩ নম্বর ওয়ার্ড (সাবেক ৩৬) এর আওয়ামী লীগের সাবেক শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক
সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। আসন্ন নির্বাচন ও মাসুদ সেরনিয়াবাতের সম্ভাব্য প্রার্থিতার
বিষয়ে তিনি বলেন, জনবান্ধব ও কর্মীবান্ধব একজন নেতা। ওয়ান ইলেভেনের সময় দেখেছি, জীবনের
ঝুঁকি নিয়ে কিভাবে দলের জন্য কাজ করে গেছেন। আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে এই আসনে
মাসুদ ভাইয়ের বিকল্প নেই।
১৩ নম্বর ওয়ার্ডের
সাবেক সহসভাপতি ও বর্তমানে এই ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রার্থী শাহ আলম আরজু বলেন,
নৌকার প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে এই আসনে মাসুদ ভাই সবার চেয়ে এগিয়ে। তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের
কাছে তিনি ভীষন জনপ্রিয়।
বাংলাদেশ দোকান
মালিক ও ব্যবসায়ি সমিতির সহ-সভাপতি এডভোকেট মো: ঈমান হোসেন বলেন, এলাকার সাধারণে ভোটারের
সঙ্গে বর্তমান সাংসদের কোন সম্পৃক্ততা নেই। দলীয় প্রার্থীর মনোনয়ন তাই এখন সময়ের দাবি।
নয়াপল্টন সমাজকল্যাণ
উন্নয়ন সমিতির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম বাবু বলেন, এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী
হিসেবে মাসুদ সেরনিয়াবাত সবদিক থেকে যোগ্য।
শাহবাগ থানাধীন
২১ নম্বর ওয়ার্ডের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো: জাকির হোসেন বলেন, ঢাকা-৮
আসন দলীয়ভাবে অভিভাবকহীন। এই আসনের সাংসদ (অভিভাবক) পদে মাসুদ সেরনিয়াবাতকে দেখতে চাই।
শাহজাহানপুর
থানাধীন ১১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি পদ প্রার্থী ম.খালিদ বলেন, আমরা যারা
দল করি তারা চাই মাসুদ ভাই মনোনয়ন পাক।
একই ওয়ার্ডের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী জাহিদুজ্জামান সোহেল বলেন, এলাকার উন্নয়ন ও
রাজনৈতিক স্থবিরতা কাটাতে এই আসনে মাসুদ ভাইয়ের বিকল্প নেই।
বৃহত্তর মতিঝিল
থানা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি ও শাহজাহানপুর থানাধীন ১২ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের
সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী মঈনুল হাসনাত রানা বলেন, এলাকায় দলীয় সাংসদ না থাকায় বর্তমান
সাংসদের সঙ্গে নেতা-কর্মীদের ‘গ্যাপ’ রয়েছে। এই গ্যাপ পূরণে মাসুদ ভাই যোগ্যতম প্রার্থী।
আসন্ন নির্বাচনে
প্রার্থিতার বিষয়ে মাসুদ সেরনিয়াবাত বলেন, একজন দলীয় কর্মীর দায়বদ্ধতা নিয়ে মানুষের
জন্য কাজ করে যাচ্ছি। বৈশ্বিক করোনা মহামারির সময়েও মানুষের পাশে ছিলাম, এখনো আছি আগামীতেও
থাকবো ইনশাআল্লাহ।
জন্মস্থান বরিশাল,
তবে তিন যুগেরও বেশি সময় ধরে উত্তর শাহজাহানপুরের বাসিন্দা হিসেবে রাজনৈতিক কর্মকান্ডে
জড়িত মাসুদ সেরনিয়াবাত। মুক্তিযুদ্ধে শহীদ পরিবারের সন্তান এই যুবনেতার আপন চারভাই
বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট ঘাতকের হাতে জাতির
পিতার সঙ্গে নির্মমভাবে নিহত হন তার পরিবার ও আত্মীয়স্বজনসহ ১৮জন। নিহতদের মধ্যে ছিলেন
মাসুদ সেরনিয়াবাতের চাচা আব্দুর রব সেরনিয়াবাত, বড় ভাই শহীদ সেরনিয়াবাত, চাচাতো বোন
আরজু মনি ও তার স্বামী শেখ ফজলুল হক মনি (জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে), বেবি সেরনিয়াবাত,
আরিফ সেরনিয়াবাত ও সুকান্ত সেরনিয়াবাত।
রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রে
অবস্থিত ঢাকা-৮ সংসদীয় নানা কারণেই অনেক গুরুত্বপূর্ণ দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই
আসনের সাংসদ পদে মাসুদ সেরনিয়াবাত মনোনয়ন পাবেন এমন প্রত্যশা সবার।