মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় দুটি গ্রামের
পাঁচ শতাধিক বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে সেনা সদস্যরা। এদিকে দেশটির ক্ষমতাচ্যুত ও কারাবন্দী
নেত্রী অং সান সু চির বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের আরো একটি অভিযোগ এনেছে জান্তা সরকার।
এ নিয়ে তার বিরুদ্ধে ঘুষ, জালিয়াতিসহ ১১টি অভিযোগ আনা হলো। এর আগে বৃহস্পতিবার অসুস্থ
হয়ে পড়ায় আদালতের শুনানিতে উপস্থিত হতে পারেননি তিনি।
সোমবার সাগাইং অঞ্চলের একটি গ্রাম পুরোপুরি
জ্বালিয়ে দেয় এবং অন্যটির অর্ধেক ধ্বংস করে দেওয়ার দাবি করে স্থানীয়রা। এর মধ্য দিয়ে
বেসামরিকদের ওপর সামরিক সরকারের দমন-পীড়নের নতুন চিত্র সামনে এলো। জান্তা সরকারের
এমন কাণ্ডে প্রাণভয়ে গ্রাম ছেড়ে জঙ্গলে আশ্রয় নিয়েছেন গ্রামগুলোর হাজারও বাসিন্দা।
এদিন মওয়ে টোন গ্রামকে টার্গেট করে সেনারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেখানকার এক বাসিন্দা
বলেন, দুটি হেলিকপ্টারে করে অবতরণ করে প্রায় ১৫০ সেনা সদস্য। এরপরই শুরু হয় তাদের তাণ্ডব।
হঠাৎ অভিযানের কারণে ঐ গ্রামের ২৫০টি বাড়ির বাসিন্দারা খাবারসহ প্রয়োজনীয় কিছু না
নিয়েই পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম মিয়ানমার নাওকে ৪৮
বছর বয়সী এক ব্যক্তি বলেন, ‘সেনাবাহিনীর আক্রমণের মধ্যেই আমরা
অন্য দিকে চলে যেতে শুরু করি। তারা গ্রামে ঢুকেই গুলি চালাতে শুরু করে। আমরা আর পেছনে
তাকানোর সাহস পাইনি, শুধু সামনের দিকেই দৌড়েছি।’
২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি নির্বাচিত সরকারকে
উৎখাত করে ক্ষমতায় বসে সামরিক বাহিনী। এর বিরোধিতায় সাধারণ মানুষ সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে
প্রবল আন্দোলন গড়ে তুললে দমন-পীড়ন শুরু করে নিরাপত্তা বাহিনী। এতে এখন পর্যন্ত ১
হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
এদিকে দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সু চির
বিরুদ্ধে নতুন করে আনা অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। মিয়ানমার সামরিক বাহিনী এক
বিবৃতিতে বলেছে, সু চি তার মায়ের নামে একটি দাতব্য ফাউন্ডেশনের জন্য অনুদান হিসাবে
৫ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার গ্রহণ করেছেন। তবে এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের
কার্যক্রম কখন শুরু হবে সে বিষয়ে বিবৃতিতে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। অসুস্থ হয়ে
পড়ায় আদালতের শুনানিতে উপস্থিত হতে পারেননি মিয়ানমারের গৃহবন্দি নেত্রী অং সান সু
চি।