দুস্থ, ছিন্নমূল
ও নিম্ন আয়ের মানুষের সঙ্গে বসে ফুটপাতে ইফতার করলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ
ম রেজাউল করিম এমপি।
গত বৃহস্পতিবার
রাজধানীর ব্যস্ততম এলাকা ‘সাংবাদিক পাড়া’ নামে খ্যাত কাওরান বাজারে এটিএন নিউজের
সামনে দেখা যায় এমন দৃশ্য। বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের সহায়তায় এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছেন
জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও এটিএন নিউজের প্রধান নির্বাহী সম্পাদক মুন্নী সাহা।
প্রোটোকলের পুলিশ আর ব্যক্তিগত সহকারির বহর বাদ দিয়ে ইফতারের কিছু আগেই তিনি সেখানে হাজির হয়ে ব্যতিক্রমী এই ইফতার আয়োজনে যোগ দেন তিনি। নিজ হাতে ইফতারের প্লেট সাজান, শরবত পরিবেশন করেন এবং সবশেষে এসব মানুষের সঙ্গে পথে বসে ইফতার করেন।
নিজেদের এ আয়োজনে
মন্ত্রীকে পেয়ে খুশি বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন।
বিদ্যানন্দের
ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ নিয়ে একটি পোস্ট দিয়েছে সংগঠনটি। এতে বলা হয়, ‘মাননীয় মন্ত্রীকে
স্বেচ্ছাশ্রম দিতে অনুরোধ করেছিলাম, ফুটপাতে আমাদের সাথে ইফতার করতে।’
প্রোটোকলের পুলিশ
আর ব্যক্তিগত সহকারীর বহর বাদ দিয়ে কে আসবেন? এসেছেন শ ম রেজাউল করিম, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ
মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী, কাজ করছেন বিদ্যানন্দের কর্মীদের সাথে।
শ্রমজীবী মানুষেরা
মাছ-মাংসের দাম নিয়ে হতাশা জানাবেন জেনেও তিনি এগিয়ে যাচ্ছেন তাদের কাছে।
“লোক দেখানো” বলবেন কেউ, তবুও তো কর্তাব্যক্তিদের সাধারণ
মানুষের সামনে এনে দিতে পারছি নিজেদের কষ্টের কথা বলতে, অনুভব করতে হতাশার গল্প।
এছাড়া সংগঠনটির
‘এক টাকার আহার’ এর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ নিয়ে দেয়া
আপরেকটি পোস্টে বলা হয়, আপনি কি সত্যই মন্ত্রী। হ্যাঁ, উনি মাছ-মাংসের ফলন দেখভাল করার
মন্ত্রী।
স্যার, এসব তো
কিনতেই পারি না। বাজারে বিক্রির পর পচাগুলোই ভাগা করে কিনে খাইতে হয়। ইফতারে মন্ত্রীর
একপাশে বসেছেন বাসাবাড়িতে কাজ করেন জমিলা বুবু; অন্যপাশে বসেছেন ফেলে দেয়া সবজী কুড়িয়ে
বেঁচে থাকা রত্না খালা।
ফুটপাতে ইফতার করতে বসা হাজার শ্রমজীবী মানুষের ভিড়ে বসে ইফতার করার এই মুহুর্তটা কিছুটা হলে মন্ত্রীর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় প্রভাব ফেলবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের
হেড অফ কমিউনিকেশন সালমান খান ইয়াসির আজকের দর্পণকে বলেন, ‘আসলে উনার মতো
একজন মন্ত্রী আসবেন আমরা বা যারা ইফতারে অংশ নিয়েছিল কেউ ভাবিনি। দুস্থ, ছিন্নমূল ও
নিম্ন আয়ের মানুষরা খুবই অবাক হয়েছেন। তিনি সঙ্গে কোনো পুলিশের গাড়ি বা প্রটোকলও আনেননি।
সাধারণ মানুষের মতোই ইফতার করতে এসেছিলেন।
‘আমরা উনাকে চেয়ার-টেবিলে খাবার ব্যবস্থা
করতে চাইলেও তিনি তা বারণ করেন। সবার সঙ্গে বসেই ইফতার করেন। সবার খোঁজ-খবর ও সুখ-দুঃখ
জানতে চান। মানুষজনও মন্ত্রীকে পেয়ে প্রাণখুলে কথা বলেছের।’
সালমান জানান,
প্রতি বছরের মতো এবারও গরিব মানুষের জন্য ইফতারের আয়োজন করছে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন।
শ ম রেজাউল করিম তার অনুভূতি ব্যক্ত করে নিজস্ব ফেসবুক আইডিতে লিখেছেন, ‘ওরা-ও মানুষ, আছে ওদের প্রান। সবাই মিলে বাংলাদেশ। ভিক্ষুক, কাজের বুয়া, ঝাড়ুদার, উচ্ছিষ্ট কুড়ানী, রিক্সা চালক, মুটে-মজুর সবার সাথে কিছুক্ষণ এবং ইফতার। চমৎকার অভিজ্ঞতা। এবং আলাদা একটা অনুভুতি। ভাবিয়ে তুলেছে সমাজের ব্যাবধানের স্তর গুলির দুরত্বের সীমাহীন দিগন্তের কথা’