মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব
রাজাকের স্ত্রী রসমাহ মানসুরকে দুর্নীতির দায়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির আদালত।
গতকাল বৃহস্পতিবার কুয়ালালামপুরের আদালত তিনটি মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে এই রায় ঘোষণা
করেন। নাজিব রাজাকও বর্তমানে কারাগারে আছেন। খবর বিবিসি।
মালয়েশিয়ায় বহুল আলোচিত ওয়ান এমডিবি দুর্নীতি
মামলায় ২৩ আগস্ট আপিলে হেরে যান নাজিব রাজাক। সেই সময় তার ১২ বছরের কারাদ- বহাল রাখেন
সুপ্রিমকোর্ট। তাৎক্ষণিক সাজা কার্যকর হওয়ায় সেদিনই তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। কারাদণ্ডের
পাশাপাশি নাজিবকে ২১ কোটি রিংগিত (বাংলাদেশি টাকায় ৪৪৭ কোটি ৭২ লাখ টাকা) জরিমানা করা
হয়। খবরে বলা হয়, নাজিবের স্ত্রীর বিরুদ্ধে সরকারি কাজ পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে ঘুষ চাওয়া
ও ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ প্রমাণ হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের নির্বাচনে নাজিবের
পরাজয়ের পর থেকে একের পর এক দুর্নীতির খবর বের হতে থাকে। ধারণা করা হয়- আলোচিত ওয়ান
এমডিবি কেলেঙ্কারির কারণে ভোটাররা নাজিবের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন। বিলাসবহুল জীবনযাপন
আর কোটি টাকা মূল্যের হার্মিস বার্কিন ব্যাগের প্রতি আসক্তির কারণে দেশটিতে ব্যাপক
সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন নাজিবের স্ত্রী রসমাহ। এ ছাড়া সরকারি বিভিন্ন বিষয়ে প্রভাব
খাটানো নিয়ে বারবার প্রশ্নের সম্মুখীনও হয়েছিলেন তিনি।
এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণার সময়
কুয়ালালামপুর হাইকোর্টের বিচারক মোহাম্মদ জাইনি মাজলান বলেন, কারাদণ্ডের পাশাপাশি রসমাহকে
৯৭০ মিলিয়ন মালয়েশিয়ান রিংগিত জরিমানা করা হয়েছে। দুর্নীতির তিন মামলায় অভিযুক্ত রসমাহকে
করা এই জরিমানা মালয়েশিয়ার ইতিহাসে রেকর্ড সর্বোচ্চ বলে জানিয়েছেন তিনি। বিচারক আরও
জানান, আদালতের বিচারকরা রসমাহ মানসুরের বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে
প্রমাণ করেছেন। তবে উচ্চ আদালতে আপিল বিচারাধীন থাকায় তিনি জামিনে মুক্ত থাকবেন। রায়
ঘোষণার পর বিচারকের সামনে কান্নাজড়িত কণ্ঠে রসমাহ বলেন- আমাকে অবশ্যই স্বীকার করতে
হবে যে, আজ যা ঘটেছে তাতে আমি মর্মাহত। কেউ আমাকে অর্থ গ্রহণ করতে দেখেনি। কেউ আমাকে
অর্থ গণনা করতেও দেখেনি... কিন্তু তারপরও যদি এটাই হয়, তা হলে আমি এটা ঈশ্বরের কাছে
ছেড়ে দিচ্ছি।’
৭০ বছর বয়সী রসমাহ ২০১৬ থেকে ২০১৭ সালের
মধ্যে একটি কোম্পানিকে নাজিবের সরকারের কাছ থেকে ২৭৯ মিলিয়ন ডলারের সৌরবিদ্যুৎ সরবরাহ
প্রকল্পের কাজ পেতে সহায়তার জন্য ঘুষ চাওয়া এবং গ্রহণের তিনটি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত
হয়েছেন।