বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে
বিশ্ব সিওপিডি দিবস ২০২৩ পালিত হয়েছে। বুধবার (১৫ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টায় দিবসটি উপলক্ষে
একটি শোভাযাত্রা ও সেমিনারের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বক্ষব্যাধি বিভাগ।
শোভাযাত্রাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল
ফুয়ারা থেকে শুরু হয়ে এ-ব্লক অতিক্রম করে টিএসসি হয়ে ডি-ব্লক গিয়ে শেষ হয়েছে। শোভাযাত্রা
শেষে বক্ষব্যাধি বিভাগে একটি বৈজ্ঞানিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
এসব অনুষ্ঠানে প্রধান অথিতি হিসেবে বঙ্গবন্ধু
শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ। সভাপতিত্ব
করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) ও বক্ষব্যাধি
বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন।
উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ
বলেন, শ্বাসতন্ত্রের জটিল রোগ ক্রনিক অবস্ট্রাক্টিভ পালমানারি ডিজিজ সিওপিডি। অসংক্রামক
রোগগুলোর মধ্যেও সিওপিডি একটি অন্যতম শীর্ষস্থানীয় রোগ। পৃথিবীব্যাপী মৃত্যুর সকল কারণের
মধ্যে এই রোগটির অবস্থান তৃতীয়। তাই ভয়ংকর এই রোগ সম্পর্কে আমাদের ভালোভাবে জানতে হবে
এবং প্রতিরোধে সচেষ্ট হতে হবে। দিবসটি উপলক্ষে জনসচেতনতামূলক র্যালিসহ বৈজ্ঞানিক সেমিনার
ও গাইড লাইন উদ্বোধন ইত্যাদি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এবারে দিবসটির প্রতিপাদ্য
হলো ‘ব্রিথিং ইজ লাইফ-এ্যাক্ট
আরলিয়ার।’ বিশ্ব সিওপিডি
দিবস পালন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। মুখে মাস্ক অবশ্যই পড়তে হবে। ধুমপান পরিহার ও দুষণমুক্ত
পরিবেশ গড়ে তোলার মাধ্যমে সিওপিডি রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। কলকারখানা ধোঁয়াসহ সকল
ধরণের ধোঁয়া থেকে দূরে থাকা, তামাক চাষ বন্ধ করা এবং তামাক জাতীয় দ্রব্য বিক্রয় নিষিদ্ধ
করার মাধ্যমে সিওপিডিও রোগ অনেকটাই বিনাস করা সম্ভব। ধুমপানই সিওপিডির প্রধানতম কারণ।
তাই এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে সতর্ক করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও
এই রোগে ভোগা রোগীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতি বছর এই রোগে বিশ্বে কমপক্ষে
৩০ লক্ষ মানুষ মারা যায় এবং কমপক্ষে ৩০ কোটি মানুষ আক্রান্ত হয়। তবে অভ্যন্তরীণ বায়ু
দূষণ হ্রাস করা, জৈব জ্বালানির ক্ষতিকর দিক থেকে মানুষকে রক্ষা করা এবং ধূমপানে মানুষকে
নিরুৎসাহিত করার মাধ্যমে এই রোগটি সহজেই প্রতিরোধ করা সম্ভব।
সভাপতির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য
(একাডেমিক) ও বক্ষব্যাধি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন বলেন,
এই রোগে দীর্ঘমেয়াদী কাশি, কফ নিংসরণ ও শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি সমস্যাগুলো ধীরে ধীরে প্রছন্ন
হয়ে উঠে। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে সমস্যাগুলো প্রকট হয় এবং একসময় এমন অবস্থায় পৌঁছায় যে
তখন রোগী নিজের দৈনন্দিন কাজকর্ম করতেও শ্বাসকষ্টে ভোগেন। একই সাথে দানা বাঁধে সিওপিডি
জনিত অন্যান্য জটিলতা যেমন হৃদরোগ, মাংসপেশির দুর্বলতা, ওজন হ্রাস, বিষন্নতা, ফুসফুসের
ক্যান্সার ইত্যাদি নানা ধরণের সমস্যা। তাই রোগ প্রতিরোধে গুরুত্ব দিতে হবে। সিওপিডি
থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য আগে ভাগেই গুরুত্ব দিতে হবে। এখনই ধূপমান প্রতিরোধে কার্যকর
ব্যবস্থা নিতে হবে। আগে ভাগে এই রোগটি চিহ্নিত করতে পারলে এবং চিকিৎসা শুরু করতে পারলে
এই রোগের কারণে স্বাস্থ্যখাতের উপর যে বাড়তি চাপের সৃষ্টি হয়েছে তা দূর হবে।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক
ডা. মোঃ হাবিবুর রহমান দুলাল, বক্ষব্যাধি বিভাগের অধ্যাপক ডা. রাজাশীষ চক্রবর্তী, সহযোগী
অধ্যাপক ডা. সম্প্রীতি ইসলাম প্রমুখসহ বক্ষব্যাধি বিভাগের বিভিন্ন স্তরের শিক্ষক, চিকিৎসক,
রেসিডেন্ট শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।