
দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে স্বামীর বাড়ি থেকে নিখোঁজ
হন সাগরী খাতুন (২৩)। চারদিন পর বুধবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরে শিশুটির
সন্ধান পাওয়া যায়। কিন্তু পাঁচ দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছে সাগরী খাতুন। তার ভাগ্যে কি ঘটেছে
সেটি এখন নিশ্চিত নয় কেউ।
সাগরী খাতুন যশোরের চৌগাছা উপজেলার পাতিবিলা গ্রামের
আক্তারুল ইসলামের স্ত্রী। উদ্ধার দুই শিশুর নাম সাগর হোসেন সাফিন (৫) ও মোহনা আক্তার
জুলেখা (২০ মাস)। তাদেরকে পরিবারে হস্তান্তর করেছে পুলিশ।
হাসপাতালের সাইকেল গ্যারেজের দায়িত্বে থাকা মফিজুর
রহমান জানান, সকালে এসে বাচ্চা দুটিকে বসে থাকতে দেখি। ভেবেছিলাম তাঁদের মা হয়ত বসিয়ে
রেখে ডাক্তার দেখাতে গেছেন। প্রায় একঘণ্টা পরে সাড়ে ৯টার দিকে বাচ্চা দুটি খুব কান্নাকাটি
করতে দেখে ম্যাডামকে (উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা) জানাই। এ সময় ওদেরকে স্থানীয় কয়েকজন
জিজ্ঞেস করলে ছেলেটি তার বাবার নাম আক্তারুল আর বাড়ি হায়াতপুর বলতে পারে। তখন তারা
পরিচিতজনদের মাধ্যমে পরিবারকে খবর দেয়।
সাগরীর স্বামী আক্তারুল ইসলাম জানান, রবিবার দুই
সন্তান নিয়ে বাড়ি থেকে সাগরী সবার অগোচরে কোথাও চলে যায়। তিনদিন ধরে সাগরীর বাবার বাড়িসহ
(উপজেলার চুটারহুদা গ্রাম) বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও না পেয়ে মঙ্গলবার চৌগাছা
থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করি। এরপর স্থানীয়দের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে হাসপাতালে এসে
তার দুই সন্তানকে পুলিশ হেফাজতে পান। তাদের ধারণা সাগরীর অন্য কোনো ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক
আছে। সেই সূত্রেই হয়ত সে চলে গেছে।
আক্তারুল ইসলাম আরও জানান, একটা নাম্বারে মাঝে মধ্যে
কথা বলতো। আমি এ নিয়ে তাকে বকাঝকাও করেছি। একদিন মেরেছিও। তবে গত কোরবানির ঈদে ওর বাপের
বাড়ি থেকে ঘুরে আসার পর হুমকিও দেয় আমার কাছ থেকে চলে যাবে। যাওয়ার সময় বাড়ি থেকে নগদ ২০ হাজার টাকাসহ ভালো কাপড় চোপড় সব নিয়ে
গেলেও বাচ্চাদের যে পোশাকে নিয়ে গিয়েছিলো সেই পোশাকেই আছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.
লুৎফুন্নাহার বলেন, বুধবার সকাল নয়টার দিকে সাইকেল গ্যারেজের দায়িত্বে থাকা মফিজুর
জানায় সেখানে দুটি বাচ্চাকে তার মা রেখে চলে গেছে। তারা খুব কান্নাকাটি করছে। তখন বিষয়টি
সাংবাদিক ও থানা পুলিশকে জানাই। শিশু দুটি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
চৌগাছা থানার এসআই রাজেশ কুমার বলেন, স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কাছ থেকে মোবাইল ফোনে সংবাদ পেয়ে হাসপাতালে এসে শিশু দুজনকে উদ্ধার করি। প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে থানার সাধারণ ডায়েরির (জিডি) ভিত্তিতে স্থানীয় ইউপি সদস্যের উপস্থিতিতে শিশুদেরকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে