চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে
এমরান হোসেন নামের এক বাবার দুই বছর আগে তার দুই মেয়েকে বিক্রি করে দিয়েছিলেন। দুই
বছর পর তাদের উদ্ধার করে মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে পুলিশ।
এমরান ৮০ হাজার
টাকায় তার দুই সন্তানকে বিক্রি করার বিষয়টি দুই বছর ধরে গোপন রাখেন। সম্প্রতি বিষয়টি
জানাজানি হলে মঙ্গলবার রাতে পুলিশ দুই মেয়েকে উদ্ধার করেন।
স্থানীয়রা জানান,
বেকারিতে শ্রমিকের কাজ করা এমরান দুই বিয়ে করে অভাবের তাড়নায় মেয়েদের বিক্রি করে দিয়েছেন।
হাজীগঞ্জ ৭ নং বড়কুল পশ্চিম ইউনিয়নের নাটেহরা গ্রামে এমরানের বাড়ি।
স্থানীয়দের সাথে
কথা বলে জানা যায়, এমরান প্রথম স্ত্রী জান্নাতকে নিয়ে নাটেহরা গ্রামের বাড়িতে বসবাস
করেন। দ্বিতীয় স্ত্রী থাকেন চট্টগ্রামে। এমরান প্রায় দেড় বছর আগে প্রথম স্ত্রীর তিন
সন্তানের মধ্যে বড় মেয়ে ইভাকে (৫) ৪০ হাজার টাকায় ফরিদগঞ্জ এবং ছোট মেয়ে রিয়াকে (১৮
মাস) চাঁদপুর সদর উপজেলায় ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন।
গ্রামে থাকলে
খাবারে কষ্ট পাবে, তাই ছোট স্ত্রীর কাছে ভালো থাকবে এমনটি বুঝিয়ে প্রথম স্ত্রীর কাছ
থেকে তার দুই মেয়েকে নিয়ে গোপনে বিক্রি করে দেন এমরান। মেয়েদের বিক্রি করেছেন, এমন
খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ইভা ও রিয়াকে উদ্ধার করে।
আজ বুধবার থানা
কমপ্লেক্সে শিশুদের লালন-পালনকারী দুই মাকেও নিয়ে আসা হয়। তারা বলেন, স্ট্যাম্পে লিখিত’র মাধ্যমে শিশুদের বাবার কাছ থেকে তারা
দত্তক নিয়ে দুই বছর লালন-পালন করেছেন। তারা আরো বলেন, ওই সময় বলা হয়েছে শিশুদের মা
মারা গেছেন। তাই তারা প্রয়োজনে ও মানবিক দিক বিবেচনা করে দত্তক নিয়েছেন।
বাবা এমরান হোসেন
বলেন, আমার ভুল হয়েছে। ওই সময়ে টাকার বিনিময়ে মেয়েদের দত্তক দিয়েছি। এই ভুল আর হবে
না। এখন আমি আমার মেয়েদের লালন-পালন করবো।
হাজীগঞ্জ থানার
ওসি মোহাম্মদ জোবাইর সৈয়দ জানান, তারা যে প্রক্রিয়ায় শিশুদের দত্তক নিয়েছেন, তা বিধিসম্মত
নয়। তাই বুধবার বিকেলে দুই শিশু কন্যাকে মা জান্নাত বেগম ও বাবা এমরান হোসেন এর হাতে
তুলে দেওয়া হয়েছে।