রংপুর নগরীর মধ্য
গণেশপুর এলাকায় দুই বোনকে হত্যার দায়ে মাহফুজার রহমান রিফাত (২২) নামে এক যুবকের মৃত্যুদণ্ডের
আদেশ দিয়েছেন রংপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মোস্তফা কামাল
এ রায় দেন আদালত। একই সঙ্গে এক লাখ টাকা জরিমানা আদায়ের নির্দেশ দেওয়া হয়। একই মামলায়
অপর আসামি রিফাতের সহযোগী আরিফুল ইসলাম আরিফের (২৭) সাত বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার
দুপুরে রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মোস্তফা কামাল এ
রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডপ্রাপ্ত রিফাত নগরীর বাবুখা মধ্যপাড়া এলাকার এমদাদুল হকের ছেলে
এবং আরিফ রংপুর সদর উপজেলার শাহাবাজপুর কলার খামার এলাকার মহুবুল ইসলামের ছেলে।
আদালত ও পুলিশ
সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর রাতে বাড়িতে কেউ না থাকার কারণে মধ্যগণেশপুর
এলাকার মমিনুল ইসলামের মেয়ে সুমাইয়া আক্তার মীম তার চাচাতো বোন জান্নাতুল মাওয়াকে নিজের
কাছে থাকার জন্য নিয়ে আসেন। প্রেমের সম্পর্ক থাকায় সে রাতে সুমাইয়া আক্তার মীমের বাড়িতে
যান রিফাত।
এ সময় মীমের সঙ্গে
শারীরিক সম্পর্ক হয় রিফাতের। পরে কথা কাটাকাটির জেরে তাকে হত্যা করেন রিফাত। এ ঘটনা
ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে ঘরের সিলিং ফ্যানে ওড়না দিয়ে মরদেহ ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যার
নাটক সাজান তারা। মীমের চাচাত বোন জান্নাতুল মাওয়া ঘটনা টের পেলে তাকেও শ্বাসরোধে হত্যার
পর মরদেহ মেঝেতে ফেলে পালিয়ে যান রিফাত। তদন্ত শেষে রিফাত ও আরিফের বিরুদ্ধে ২০২১ সালের
৩০ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) মজনু মিয়া
ও আল-আমিন। ২৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বৃহস্পতিবার আদালতের বিচারক এ রায় ঘোষণা
করেন।
এ ঘটনায় ১৮ সেপ্টেম্বর
ঘটনাস্থল থেকে দুই বোনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন মেট্রোপলিটন কোতয়াালি থানায়
মীমের বাবা মমিনুল ইসলাম মামলা করেন। ২০ সেপ্টেম্বর রিফাতকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। রিফাত
আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে দায় স্বীকার করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের
আইনজীবী সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট খন্দকার রফিক হাসনাইন জানান,
মামলার আসামি মাহফুজার রহমান রিফাতের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ হওয়ায়
মৃত্যুদণ্ড এবং অপর আসামি আরিফুল ইসলাম ওরফে আরিফ মামলার আলামত নিজ দখলে রেখে ও প্রধান
আসামিকে আলামত গোপনে সহযোগিতার অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন
বিচারক। এ ছাড়া আরিফের ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরো ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড
দেন। আমি ন্যায়বিচার পেয়েছি। এ রায়ে সন্তুষ্ট প্রকাশ করছি।
রংপুর মেট্রোপলিটন
পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার (অপরাধ)আবু মারুফ হোসেন জানান, দুই বোনকে হত্যার সাথে জড়িতদের
বিরুদ্ধে আদালত সঠিক রায় প্রদান করেছেন। তবে দোষীদের শান্তি হবে আইনের হাত থেকে ছাড়
পাবে না।