প্রসব ছাড়াই প্রতিদিন দেড় থেকে দুই লিটার
দুধ দিচ্ছে ১৪ মাস বয়সের একটি বকনা বাছুর। দশদিন ধরে দুধ দিচ্ছে বাছুরটি। বকনা বাছুরের দুধ নিতে
ভীড় করছে মানুষ। সম্প্রতি এমনি এক ঘটনা ঘটেছে পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার করমজা ইউনিয়নের
৬নং ওযার্ডের পুন্ডুরিয়া গ্রামে।
বকনা বাছুরটির মালিক পুন্ডুরিয়া মধ্যপাড়ার
শ্রী রবি শীল। তিনি নিজেই প্রতিদিন দুধ সংগ্রহ করেন। এ দৃশ্য দেখতে উৎসুক জনতা বাড়িতে
ভিড় জমাচ্ছেন। এবং দুরদূরান্ত থেকে এই দুধ নিতে আসছেন অনেকেই। বকনা বাছুর দুধ দেওয়া
নিয়ে চিন্তায় পরে গেছেন গরুর মালিক। বাছুরটির খাওয়া কমিয়ে দিয়েছেন তিনি। সকালে ও বিকেল
মিলিয়ে প্রায় দেড় থেকে দুই লিটার করে দুধ সংগ্রহ করেন। একদিন দুধ সংগ্রহ না করলে ওলান
থেকে দুধ ঝরে পড়ে বলেও জানান রবিশীল।
রবিশীল জানান, ৬-৭ মাস আগে সিরাজগঞ্জ জেলার
তালগাছি গ্রাম থেকে ৫০ হাজার টাকায় বাছুরটি কিনে লালন-পালন করছিলেন। বাছুরটি দশদিন
আগে থেকে হঠাৎ করেই দুধ দিতে শুরু করে। প্রথমদিকে আধা লিটার দুধ হলেও দিনে দিনে দুধ
বেশি হচ্ছে।
তিনি বলেন, দশদিন আগে সকালে বাছুরটির ওলান
দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা দুধ পরতে দেখে ধারণা করি ওলানে দুধ জমেছে। আমি তাৎক্ষণিক বাছুরটির
ওলান থেকে দুধ সংগ্রহ করি। বকনা বাছুরটি প্রসব ছাড়া দুধ দেওয়ার বিষয়টি দেখে আমি অবাক
হয়েছি। শুরুতে দুধের পরিমাণ কম হলেও এখন দুধের পরিমাণ বেড়ে দুই লিটারের মত হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আমি ভয়ে বাছুরটির খাবার
কমিয়ে দিয়েছি যাতে করে দুধ শুকিয়ে যায়। কিন্তু এই দুধ নিতে মানুষের ভির জমে যায়। প্রথম
দু-তিন দিন বাছুরের দুধ নদীতে ফেলে দিয়েছি এখন অনেকেই ওই দুধ নিয়ে পান করছেন। প্রতিবেশী
ও দূরের মানুষকে এই দুধ বিনামূল্যে দেই।
প্রতিবেশী জানিক শেখ জানান, সাধারণত যে
গাভী বাচ্চা জন্ম দেয়, সেই গাভীই দুধ দিয়ে থাকে। অল্প বয়সী যে বাছুরটি প্রসব ছাড়া দুধ
দিচ্ছে এটা একটা বিরল ও ব্যতিক্রমী ঘটনা। বিষয়টি শুনে প্রথম বিশ্বাস করছিলাম না। পরে
রবি দাদার বাড়িতে গিয়ে দেখেছি ঘটনাটি সত্যি।
বেড়া উপজেলার কাজিরহাট গ্রাম থেকে এই দুধ
নিতে আশা আনোয়ার কে দুধের বিষয়ে জিঞ্জাসা করলে তিনি বলেন, আমি লোকমুখে শুনেছি এই দুধ
খেলে নাকি অনেক অসুখ ভালো হয়। সে কারণেই আমার স্ত্রীর জন্য আমি একটু দুধ নিতে এসেছি।
এবিষয়ে সাঁথিয়া উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মো. ফারুক
মিয়া বলেন, হরমোনজনিত কারণে অনেক সময় এমন হয়ে থাকে। ওই দুধ পুরোপুরি স্বাস্থ্যসম্মত।
দুধ পান করা যাবে। তবে এটি অস্বাভাবিক কোন ঘটনা না। এটা চিকিৎসার মাধ্যমে অনেক সময়
ঠিক হয়।