আজঃ শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪
শিরোনাম

ডোমিনিকান পরিবেশমন্ত্রীকে গুলি করে হত্যা

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৭ জুন ২০২২ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৭ জুন ২০২২ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

ডোমিনিকান রিপাবলিকের পরিবেশমন্ত্রী অরলান্ডো জর্জ মেরা নিজের কার্যালয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সোমবারের এ ঘটনায় মিগুয়েল ক্রুজ নামে সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। আটক ক্রুজ নিহত মন্ত্রীর বাল্যবন্ধু বলে টুইটারে দেওয়া এক ভিডিও পোস্টে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের মুখপাত্র হোমেরো ফিগুয়েরো। তবে সোমবারের এ হামলার পেছনে সম্ভাব্য কী কারণ থাকতে পারে তা তিনি বলেননি বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

ডোমিনিকান রিপাবলিকের পরিবেশ ও প্রাকৃতিক সম্পদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মীরা সাংবাদিকদের জানান, ভবনের ভেতর থেকে সাতটি গুলির শব্দ শুনতে পান তারা। এর কিছুক্ষণ পরই পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে।

৫৫ বছর বয়সি আইনজীবী মেরা দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট সালভাদর জর্জ ব্লাঙ্কোর ছেলে। ব্লাঙ্কো ২০০২ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে ছিলেন। মেরার ছেলে অরলান্ডো জর্জ ভিলেজাস কেন্দ্রীয় আইনপ্রণেতা এবং মডার্ন রেভ্যুলেশনারি পার্টির সদস্য।


আরও খবর



ঢাকাসহ ৪ বিভাগে তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০৪ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৪ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

ঢাকাসহ দেশের চার বিভাগের ওপর দিয়ে গত কয়েকদিন ধরে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বইছে। এসব এলাকায় আগামী দুই-তিন দিন তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে। তাই এসব এলাকায় তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা বা হিট অ্যালার্ট জারি করেছে সংস্থাটি।

বুধবার (৩ এপ্রিল) আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশীদের স্বাক্ষর করা বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ সতকর্বাতা জারি করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া চলমান তাপপ্রবাহ আজ (৩ এপ্রিল) থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে এবং আরো বিস্তার লাভ করতে পারে।

জলীয়বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বৃদ্ধি পেতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, তাপমাত্রা যদি ৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়, তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ বলে। ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বলা হয়। তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয়। আর অতি তীব্র হয় ৪২ ডিগ্রি বা এর বেশি হলে।

বুধবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ঈশ্বরদী ও চুয়াডাঙ্গায় ৩৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় রেকর্ড করা হয় ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।


আরও খবর
আজ ঢাকায় কখন বৃষ্টি হবে

বৃহস্পতিবার ০২ মে 2০২4




ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে রংপুরের মামলা হাইকোর্টে স্থগিত

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আদালত প্রতিবেদক

Image

শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে রংপুর শ্রম আদালতে দায়ের করা মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি এ মামলার বৈধতা নিয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে ড. ইউনূসের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার খাজা তানভীর আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায় ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আনিচ উল মাওয়া।

এর আগে, শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে গ্রামীণ কৃষি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে রংপুর শ্রম আদালতে দায়ের করা মামলা স্থগিত চেয়ে রিট দায়ের করা হয়।

২০২১ সালে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে গ্রামীণ কৃষি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে রংপুর শ্রম আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। গ্রামীণ কৃষি ফাউন্ডেশনের অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র খামার ব্যবস্থাপক গোলাম মোস্তফা এ মামলা দায়ের করেন।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন, গ্রামীণ কৃষি ফাউন্ডেশনের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান নুর জাহান বেগম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) শামসুদ দোহা, বোর্ড সদস্য ইমামুস সুলতান, রতন কুমার নাগ ও শাহ জাহান।

মামলার বিষয়ে বাদীপক্ষের আইনজীবী শামীম আল মামুন জানান, মামলার বাদী অবসর গ্র্যাচুইটি ও অর্জিত ছুটি বাবদ নয় লাখ ৭৫ হাজার ১২৫ টাকা ক্ষতিপূরণ বাবদ পাওনা আদায়ের লক্ষ্যে ড. ইউনূসসহ আরও ছয়জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন।

মামলার বাদী গোলাম মোস্তফা গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় গ্রামীণ কৃষি ফাউন্ডেশন ইউনিট কার্যালয়ের খামার ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সেই সময়ে বাদীর অবসর গ্র্যাচুইটি এবং অর্জিত ছুটি নগদায়ন বাবদ পরিশোধ না করে তাকে অবসরে যেতে বাধ্য করা হয়। এছাড়া, পাওনা পরিশোধ করতে প্রতিষ্ঠানটি টালবাহানা করে আসছে বলে অভিযোগ তোলেন তিনি।


আরও খবর



স্বামীর সাথে ঝগড়া করে শ্বশুরবাড়িতে বোমা হামলা

প্রকাশিত:বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

স্বামী-স্ত্রীর অশান্তি নিত্যদিনের। দাম্পত্য কলহ এমনই পর্যায়ে পৌঁছয় যে, স্বামী-স্ত্রীর চিৎকারে অতিষ্ঠ প্রতিবেশীরাও। সেই পারিবারিক অশান্তিতে বোমা হামলার অভিযোগ উঠছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে মুর্শিদাবাদের শমসেরগঞ্জে। বুধবার (১৭ এপ্রিল) আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মেয়ের সঙ্গে ঝগড়া করার জন্য জামাইয়ের বাড়ি লক্ষ্য করে বোমা হামলার অভিযোগ উঠছে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। বোমার আঘাতে আহত হয়েছেন কমপক্ষে চার জন। আহতদের প্রত্যেককে ভর্তি করানো হয়েছে স্থানীয় একটি হাসপাতালে।

স্থানীয় সূত্রে আনন্দবাজার জানায়, মুর্শিদাবাদের শমসেরগঞ্জ ব্লকের তিন পাকুরিয়া অঞ্চলের গোবিন্দপুর এলাকার বাসিন্দা রেহেনা খাতুন ও মেহেদী হাসানের বিয়ে হয় বছরখানেক আগে। প্রতিবেশীদের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই সাংসারিক অশান্তি শুরু হয় তাদের। মাঝেমধ্যেই সাংসারিক অশান্তি মাত্রা ছাড়িয়ে যেত। মঙ্গলবার মাঝরাতেই হঠাৎ বোমা বিস্ফোরণের শব্দে আতঙ্কিত হয়েও পড়েন স্থানীয়েরা। খোঁজ নিয়ে তিনি জানতে পারেন, রেহানার পরিবারের লোকজনই জামাইয়ের বাড়িতে বোমা হামলা করেছেন। বোমার আঘাতে রেহানার পরিবারের চার সদস্য জখম হন। যাঁদের মধ্যে তিন জনের আঘাত গুরুতর বলে জানা গিয়েছে।

মেহেদীর পরিবারের সদস্য দিলরুবা বেওয়ার বলেন, রাত ১২টার দিকে হঠাৎ বোমার শব্দে ঘুম ভেঙে যায় আমাদের। আমাদের বাড়ির লোকজনকে খুন করার উদ্দেশে বোমা হামলা হয়। বৌয়ের বাপের বাড়ির লোকজন এই কাণ্ড ঘটিয়েছে।

এদিকে, সমস্ত অভিযোগই অস্বীকার করেছেন রেহানার বাপের বাড়ির লোকেরা।


আরও খবর



দুপুরের মধ্যে ঝড়ের পূর্বাভাস, ৬ জেলায় সতর্কসংকেত

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

দেশের ৬ অঞ্চলের ওপর দিয়ে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আজ শুক্রবার দুপুর ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য দেওয়া এক পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, বরিশাল, পটুয়াখালী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার জেলার ওপর দিয়ে দুপুর ১টার মধ্যে পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এ অবস্থায় এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এদিকে, আবহাওয়ার আরেক পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ঢাকা, ময়মনসিংহ, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

এ ছাড়া রাজশাহী, পাবনা, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। চাঁদপুর জেলাসহ ঢাকা, রংপুর, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগ এবং রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা দেশের কিছু জায়গায় প্রশমিত হতে পারে।


আরও খবর
আজ ঢাকায় কখন বৃষ্টি হবে

বৃহস্পতিবার ০২ মে 2০২4




মাথাপিছু ঋণ বেড়ে দেড় লাখ টাকা: সিপিডি

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৫ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
অর্থ ও বাণিজ্য ডেস্ক

Image

গত তিন বছরে মাথাপিছু বৈদেশিক ঋণ প্রায় ৫০ হাজার টাকা বেড়েছে বলে জানিয়েছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। সংস্থাটি বলেছে, তিন বছর আগে মানুষের মাথাপিছু ঋণের পরিমাণ ছিল এক লাখ টাকা। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে দেড় লাখ টাকা। শ্রীলঙ্কার মতো বাংলাদেশেও স্বল্পমেয়াদি ঋণ বাড়ছে, ফলে বাংলাদেশও শ্রীলঙ্কার মতোই বিপজ্জনক পথে আছে।

বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) গুলশানের একটি হোটেলে বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ ও ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডি ও এশিয়া ফাউন্ডেশন যৌথভাবে এই সেমিনারের আয়োজন করে।

সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিকবিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান। সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুনের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন সিপিডির চেয়ারম্যান ড. রেহমান সোবহান, সংস্থাটির সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য; মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান।

সিপিডির চেয়ারম্যান ড. রেহমান সোবহান বলেছেন, আশির দশকে অনেক আফ্রিকান ও লাতিন আমেরিকান দেশ স্বল্পমেয়াদি ঋণ নিয়ে বিপদে পড়েছিল। সম্প্রতি এর বড় উদাহরণ শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশেও স্বল্পমেয়াদি ঋণ বাড়ছে, শ্রীলঙ্কার মতোই বিপজ্জনক পথে আছে এ দেশ।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের ঋণের বড় বাধা এখন ঋণগুলোর শর্ত এবং এর সঠিক বাস্তবায়ন।

আমরা যদি আশির দশকে ওপেকের সময় ঋণের সংকটের দিকে তাকাই, সেখানে দুটি পরিস্থিতি ছিল। একটি, লাতিন আমেরিকায় খুব বেশি ঋণ নিয়ে বিপদে পড়া। তারা বিপদে পড়েছিল স্বল্পমেয়াদি ঋণে, সেগুলো তাদের খুব সস্তায় দেওয়া হয়েছিল। ফলে তারা একসময় গিয়ে ঋণসংকটে পড়েছিল। একই ঘটনা শ্রীলঙ্কার ঋণ সংকটের। শ্রীলঙ্কার অনেক ঋণ স্বল্পমেয়াদি। শ্রীলঙ্কার একই সময় অনেক আফ্রিকান দেশেও একই সমস্যা তৈরি হয়েছে।’

ড. রেহমান সোবহান বলেন, একইভাবে বাংলাদেশও স্বল্পমেয়াদি ঋণ নিয়ে সংকটের পথেই আছে। এটা খুবই উল্লেখ করার মতো, এ ধরনের ঋণ এখন বাড়ছে। যেহেতু আমাদের রপ্তানি আফ্রিকার অনেক দেশের চেয়ে ভালো, তাই এ জায়গায় তেমন সংকট নেই।’

মূল প্রবন্ধে ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কয়েক বছর আগে পর্যন্ত আমাদের বিদেশি ঋণ ছিল সহনীয় পর্যায়ে। আমরা এখন যদি সতর্ক না হই, তাহলে বড় ধরনের সমস্যা হতে পারে। তবে সরকার যে সতর্ক তা আইএমএফের কাছে ৪.৭ বিলিয়নের জন্য যে গেল সেটা থেকেই বোঝা যাচ্ছে।’

প্রবন্ধ উপস্থাপনের সময় তিনি বলেন, বিদেশি ঋণ শুধু বাংলাদেশের সমস্যা না, ১৯৮০ সালের দিকে লাতিন আমেরিকার দেশগুলো বিদেশি ঋণ নিয়ে এ ধরনের বড় সমস্যায় পড়েছিল। সাম্প্রতিক ঋণ নিয়ে দেউলিয়া হয়ে পড়া গ্রিস বড় উদাহরণ। পাশাপাশি শ্রীলঙ্কা ও ঘানার মতো দেশের উদাহরণ তো আছেই।’

আন্তর্জাতিকভাবে এ প্রভাব পড়ার বৈশ্বিক কারণগুলো হলো—কভিড-১৯, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের নেতিবাচক প্রভাব, বিশ্বে মালামাল ও সেবার চাহিদা কমে যাওয়া। দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ কারণ—ঋণ ব্যবস্থাপনা অনেক দুর্বল, অনেক দেশ অদূরদর্শী ঋণ নিয়েছে। ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে কঠিন শর্তে ঋণ নেওয়া হয়েছে, মুদ্রার ওঠানামাও অনেক দেশে হয়েছে। এসব কারণ অভ্যন্তরীণ।’

গবেষণা প্রবন্ধে বলা হয়, জাতিসংঘের গ্লোবাল ক্রাইসিস রেসপন্স গ্রুপ বলেছে, উন্নয়নশীল দেশগুলো উন্নত দেশের তুলনায় অনেক দ্রুত ও বেশি বিদেশি ঋণ নিয়েছে। অনেক উন্নয়নশীল দেশেই এ কারণে তা উদ্বেগের কারণ হয়েছে। ঋণের চাপে অনেকে আছে, অনেকে খেলাপি হয়েছে।

উন্নয়নশীল এসব দেশের সরকারি ঋণ ২০১০ সালে জিডিপির তুলনায় ৩৫ শতাংশ ছিল, ২০২১ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০ শতাংশে। এর মধ্যে একই সময় দেশগুলোর বিদেশি ঋণ ১৯ শতাংশ থেকে বেড়ে ২৯ শতাংশ হয়েছে। এসব বিদেশি ঋণের মধ্যে ব্যক্তি খাতের ঋণও একইভাবে বেড়েছে। একই সময় ব্যক্তি খাতের ঋণ ৪৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ৬২ শতাংশ হয়েছে বলে উল্লেখ করেন এই অর্থনীতিবিদ।

বিশ্বব্যাংকের গবেষণার একটি অংশ তুলে ধরে ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে বিদেশি ঋণের স্থিতি বেড়েছে ১০৯ শতাংশ, যেটি দেশগুলোর জিডিপির ৩৩ শতাংশ। পাবলিক অ্যান্ড পাবলিকলি গ্যারান্টেড (পিপিজি) ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৪৩.৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি।

আইএমএফের সতর্কবাণী উল্লেখ করে তিনি বলেন, আইএমএফ এসব দেশকে সতর্ক করে একটি প্রতিবেদন বানিয়েছে। আমরা কি আরেকটি ঋণ সংকটের দিকে যাচ্ছি?

তার মতে, বাংলাদেশের ঋণ ও পরিশোধের বাধ্যবাধকতা বাড়ছে, যা সরকারকে অপর্যাপ্ত রাজস্ব আদায়ের মধ্যে ঋণ পরিশোধের জন্য ক্রমাগত নতুন ঋণ নিতে বাধ্য করছে।

তিনি বলেন, প্রকৃতপক্ষে আমরা পাকলিক ও পাবলিকলি গ্যারান্টিযুক্ত ঋণের দায়বদ্ধতার একটি বড় অংশ পরিশোধের জন্য ঋণ নিচ্ছি। তাই দ্রুত অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহ বাড়ানো ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।’

সিপিডি জানিয়েছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বৈদেশিক ঋণ এবং ঋণ পরিশোধের বাধ্যবাধকতার হার বেড়েছে। ২০২৩ সালের জুনে বাংলাদেশের সরকারি ও বেসরকারি বিদেশি ঋণ ছিল ৯৮.৯ বিলিয়ন ডলার, যা একই বছরের সেপ্টেম্বরে ১০০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে।

অনুষ্ঠানে সিপিডি জানিয়েছে, ঋণ পোর্টফোলিওর গঠন দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। রেয়াতি ঋণের অনুপাত কমছে, অন্যদিকে রেয়াতি ও বাজারভিত্তিক ঋণের অংশ বাড়ছে। ঋণের শর্তাবলিও আরো কঠোর হচ্ছে।

বিশেষ করে জিডিপি, রাজস্ব আয়, রপ্তানি, রেমিট্যান্স ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের সঙ্গে তুলনা করলে বৈদেশিক ঋণ ও ঋণ পরিশোধের দায়বদ্ধতা দ্রুত বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান।

এই অর্থনীতিবিদ বলেন, এর সঙ্গে ঋণ বহনের সক্ষমতা ও ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা উদ্বেগ তৈরি করেছে। দিন শেষে অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহ গুরুত্বপূর্ণ, যা অভ্যন্তরীণ ও বিদেশি উভয় ঋণ পরিশোধের জন্য বিবেচনা করতে হবে।’

তিনি আরো বলেন, অভ্যন্তরীণ সম্পদের একটি ক্রমবর্ধমান অংশ দেশি ও বিদেশি ঋণের মূল ও সুদ পরিশোধে ব্যবহার করা হচ্ছে।

মেগাপ্রকল্প সংশ্লিষ্ট প্রতিটি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অর্থপাচারের সম্পর্ক আছে বলে মনে করেন সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, বড় আকারের অনেক প্রকল্পই অতিমূল্যায়িত করে খরচ বাড়ানো হয়েছে। আবার প্রকল্পের ভেতরে বাস্তবায়ন পর্যায়ে কোনো না কোনো স্বার্থগোষ্ঠীকে উৎসাহিত করা হয়েছে।

ড. দেবপ্রিয় বলেন, অন্যান্য দেশে জনগণের প্রাথমিক সঞ্চয়ের মাধ্যমে পুঁজি গড়ে উঠলেও বাংলাদেশে ব্যাংকের টাকা ফেরত না দিয়ে ও অব্যবস্থাপনার মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে জনসাধারণের টাকা লুটের মাধ্যমে পুঁজি গড়ে উঠেছে। বিদেশি ঋণ নেওয়া প্রকল্পগুলোর মাধ্যমেও ব্যক্তি খাতে পুঁজি গড়ে উঠেছে। এটা বিদ্যুৎ, জ্বালানিসহ বিভিন্ন খাতের জন্যই প্রযোজ্য।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে পুঁজি সঞ্চয়কারী অলিগার্ক তৈরি হয়েছে। এর ফলে রাজনৈতিক নেতারা যে আশায় এই প্রকল্পগুলো নিয়েছিলেন, সেটায় সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।

দেশি-বিদেশি ঋণ থেকে সরকারের দায় বৃদ্ধির প্রবণতা তুলে ধরে তিনি বলেন, বর্তমানে সরকারের মাথাপিছু বিদেশি ঋণ তিন হাজার ১০ ডলার। আর অভ্যন্তরীণ উৎসর ঋণ মিলে সরকারের মোট ঋণ দাঁড়ায় আট হাজার ৫০ ডলারে। স্বাধীনতার এত বছর পরে সরকারের মাথাপিছু ঋণ এক লাখ টাকায় উঠেছিল অথচ তা পরের তিন বছরেই দেড়গুণ হয়ে গেছে।

কভিড, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতার কারণে ঋণ বেড়েছে বলে অনেকে দাবি করলেও প্রকৃত কারণ ভিন্ন বলে মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ। ঋণ পরিশোধের চাপের বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, ২০১৮-১৯ সালেও সরকারের আদায় হওয়া রাজস্বের ২৬ শতাংশ ঋণ পরিশোধে ব্যয় হতো। অথচ এই হার এখন ৩৪ শতাংশে উঠেছে, যেখানে অভ্যন্তরীণ ঋণ যাচ্ছে ২৮ শতাংশ আর বিদেশি ঋণ সাড়ে ৫ শতাংশ।

বিদেশি ঋণ নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই বলে অনেকেই দাবি করলেও বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, ক্রেডিট রেটিং সংস্থা মোডি বা স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুওরস হিসেবে বাংলাদেশের ক্রেডিট রেটিং কমছে বলে দাবি করেন ড. দেবপ্রিয়। সামষ্টিক অর্থনীতির অস্থিরতাসহ বিভিন্ন ধরনের নেতিবাচক ফলাফলের মধ্যেও বিপুল পরিমাণ ঋণে নেওয়া মেগাপ্রকল্প প্রকৃত সুফল দিতে পারছে না বলে তিনি মন্তব্য করে বলেন, বিনিয়োগ না বাড়লে প্রকল্পের ফলাফল পাওয়া যাবে না।

ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ জিডিপির ২৩.৪ থেকে ২৩.৮ শতাংশে আটকে আছে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে। গত দেড় দশকের সাফল্য কেন বিনিয়োগে প্রতিফলিত হয়নি? এফডিআই কেন জিডিপির ১ শতাংশে আটকে আছে? প্রশ্ন রেখে ড. দেবপ্রিয় বলেন, ২০২৩ সালের ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ জিডিপির অনুপাতে সরকারের হিসেবেই কমেছে। এ ছাড়া শিক্ষা, ট্রেনিং বা কর্মে নেই এমন মানুষের হার বেড়েছে, বেকারের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি খাদ্য নিরাপত্তাহীন পরিবারের সংখ্যাও বেড়েছে। ২৫ শতাংশের বেশি মানুষ দৈনন্দিন প্রয়োজনে ঋণ করে চলে।

বড় প্রকল্পে অর্থায়ন করতে গিয়ে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের ক্ষতি হয়েছে মন্তব্য করে ড. দেবপ্রিয় বলেন, শিক্ষায় গত ১৫ বছরে কোনোভাবেই জিডিপির ২ শতাংশের বেশি এবং স্বাস্থ্যে ১ শতাংশের বেশি বরাদ্দ হয়নি। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যে অবহেলার প্রতিফলন এই এসভিআরএস প্রতিবেদনেও এসেছে বলে তিনি জানান। এই ধরনের সমস্যা সমাধানে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি যথাযথ কাজ করছে না বলে মন্তব্য করেন এই অর্থনীতিবিদ।

তিনি বলেন, স্বচ্ছতা নিশ্চিতের জন্য তিন মাস পর আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে অর্থমন্ত্রী বিবৃতি দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয় না। এ ছাড়া অর্থনৈতিক বিষয় নিয়ে কেবিনেটের সাব কমিটি ক্রয় কমিটিতে পরিণত হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।


আরও খবর