শিক্ষামন্ত্রী
ডা. দীপু মনি সংসদে জানিয়েছেন, জাতিসংঘের গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে দক্ষিণ এশিয়ায় মাধ্যমিক
শিক্ষার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে।
এছাড়া আমাদের
উচ্চশিক্ষার শিক্ষার্থীরা বিশ্ব বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যায়কে হারিয়ে
চাম্পিয়ন হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
জাতীয় সংসদে মুজিবনগর
বিশ্ববিদ্যালয়- মেহেরপুর বিল, ২০২৩ পাসের জন্য উপস্থাপনের পর জনমত যাচাইয়ে প্রস্তাবের
আলোচনায় দেশের শিক্ষার মান নিয়ে বিরোধী দলের সদস্যরা সামালোচনা করলে তার জবাবে শিক্ষামন্ত্রী
এসব কথা বলেন। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
শিক্ষামন্ত্রী
ডা. দীপু মনি বলেন, ‘দক্ষতা বাড়ানোর
জন্য আমরা কাজ করছি। শিক্ষকের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। ডিপ্লোমা এবং শর্ট কোর্সগুলো
বহির্বিশ্বে বর্তমান যে বাজার চাহিদা সে অনুযায়ী করা হচ্ছে। আমাদের উচ্চশিক্ষায় ৭০
ভাগ যেখানে আছে সেখানে আমাদের প্রচেষ্টাগুলোর মাধ্যমে মানে একটা ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত
হবে।’
তিনি আরো বলেন,
‘মান পড়ে যাওয়া তো এক দিনের ব্যাপার না।
একটা লম্বা সময় আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে অস্ত্রের ঝনঝনানি ছিলো। শিক্ষক নিয়োগে
পুরোপুরি দলীয় বিবেচনায় একসময় নিয়োগ দেওয়া হয়েছিলো। শিক্ষকের কোনো যোগ্যতা দেখা হয়নি।
শিক্ষায়, গবেষণায় কোনো বিনিয়োগ ছিলো না। কিন্তু বর্তমানে আমাদের উচ্চশিক্ষার শিক্ষার্থীরা
বিশ্বে যে ডিভেড কমপিটিশন আছে সেখানে প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যায়কেও হারিয়ে চাম্পিয়ন হচ্ছে।
নাসার রোবটিক্স এ চাম্পিয়নশিপে চাম্পিয়ন হয়ে আসছে আমাদের শিক্ষার্থীরা। আমাদের শিক্ষার
মান নেই এটি বোধহয় বলা সঠিক না।’
শিক্ষামন্ত্রী
বলেন, ‘ইতোমধ্যেই মাধ্যমিক শিক্ষায় আমরা যে পরিবর্তনগুলো
নিয়ে এসেছি, জাতিসংঘের গবেষণাও বেরিয়ে এসেছে দক্ষিণ এশিয়ার মাধ্যমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে
বাংলাদেশ সবচেয়ে এগিয়ে আছে।’
মাধ্যমিক পর্যায়ের
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ২০ হাজার ৩১৬টি :
টেবিলে উপস্থাপিত
প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারদলীয় সদস্য মো. মামুনুর রশীদ কিরনের লিখিত প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী
ডা. দীপু মনি সংসদে জানান, বর্তমানে সারাদেশে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অধীনে
মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা মোট ২০ হাজার ৩১৬টি। এর মধ্যে প্রত্যেকটি
উপজেলায় একটি করে কলেজ ও একটি করে বিদ্যালয় সরকারিকরণ করার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।’
সংসদে দেওয়া শিক্ষামন্ত্রীর
তথ্য অনুযায়ী সারাদেশে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অধীন মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের
মধ্যে নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় (৬ষ্ঠ-৮ম) ২,০৫৭টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয় (৬ষ্ঠ-১০ম) ১৬,৫১৬টি
এবং স্কুল অ্যান্ড কলেজ ১৪৪৩ টি। বর্তমানে সারাদেশে ৩৫৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে সরকারিকরণ
করা হয়েছে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের
টিউশন ফি যৌক্তিক পর্যায়ে রাখা হবে:
জাতীয় পার্টির
মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর লিখিত প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সংসদে
জানান, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফি যৌক্তিক পর্যায়ে রাখার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে
সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফি কাঠামো সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কাঠামোগুলো পর্যালোচনা
শেষে “টিউশন ফি” যৌক্তিক পর্যায়ে রাখার লক্ষ্যে
একটি সমন্বিত নীতিমালা/ গাইডলাইন প্রণয়ন করা হবে।
এসময় তিনি আরো
জানান, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ এর ৯ (৪) ধারা অনুযায়ী শতকরা তিনভাগ আসনে
মেধাবী ও দরিদ্র শিক্ষার্থীরা স্বল্প বেতনে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে লেখাপড়া করছে।