জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ইনস্টিটিউট অব বিজনেস এ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (আইবিএ) স্থায়ী ভবন নির্মাণের জন্য গাছ কাটার প্রতিবাদে দিনব্যাপী বিক্ষোভ মিছিল ও উপাচার্যকে পাঁচ ঘণ্টা অবরুদ্ধ রেখেছিলন শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করে পরিকল্পিত উন্নয়ন ও প্রাণপ্রকৃতি রক্ষার দাবিতে ট্রান্সপোর্ট থেকে মিছিল নিয়ে নতুন কলা ভবন, সমাজবিজ্ঞান অনুষদ, বটতলাসহ বিভিন্ন জায়গা প্রদক্ষিণ শেষে রেজিস্ট্রার ভবনে যায়। দুপুরে রেজিস্ট্রার ভবন অবরোধ ও উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে ছাত্র ইউনিয়নের নেতা কর্মীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে না জানিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রাতের আঁধারে গাছ কাটায় প্রশাসনকেই দায়ী করেন তারা। এসময় তারা অবিলম্বে সিন্ডিকেট ডেকে আইবিএ ভবনের স্থান পরিবর্তন, তদন্ত কমিটি গঠন, মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করে পরিকল্পিত উন্নয়নের দাবি জানান।
এদিকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে গাছ কাটার কারণ অনুসন্ধানে প্রো-ভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক শেখ মোঃ মনজুরুল হককে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।এরপর প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর রাত ৮.৩০ মিনিটের দিকে উপাচার্য গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে যান।
শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবির সুনির্দিষ্ট উত্তর না দিয়ে উপাচার্য বের হয়ে গেলে রাত ৯ টার দিকে মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান নতুন লাইব্রেরীতে যান ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।গাছ কেটে ফেলা আইবিএ-জেইউ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চলমান নতুন লাইব্রেরী প্রকল্পের ঠিকাদার হওয়ায় লাইব্রেরীর কাজ বন্ধ করে দেন ছাত্র ইউনিয়নের নেতা কর্মীরা।
এ সময় জাবি ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের সাধারণ সম্পাদক অমর্ত্য রায় বলেন, আমাদের দাবি বাস্তবায়নের জন্য ১৩ তারিখ পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলমান রাখবো।এর মধ্যে আমরা সংহতি সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করবো। আমাদের দাবি বাস্তবায়ন হলে পুনরায় লাইব্রেরীর কাজ চলবে।
এদিকে রাত ৯ টার দিকে স্থায়ী ভবনের দাবিতে মিছিল বের করেন আইবিএ-জেইউ এর শিক্ষার্থীরা। এ সম্পর্কে ছাত্র ইউনিয়নের নেতারা বলেন, আমরা আইবিএ শিক্ষার্থীদের বিরোধী না। তাদের দাবি অবশ্যই যৌক্তিক, কিন্তু মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের মাধ্যমে তাদের ভবন নির্মাণ করতে হবে। শুধু আইবিএ নয়, যেসকল ডিপার্টমেন্টের ক্লাসরুম সংকট আছে তাদের পরিকল্পিত ভাবে মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করে সংকট নিরসন করতে হবে।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ নূরুল আলম বলেন, ২০১৬ সালে সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে আইবিএর ভবন নিমার্ণের জন্য স্থান নিধার্রণ করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে চাইলে পুনরায় সিন্ডিকেটে উত্থাপন করতে হবে। বিষয়টি সময়সাপেক্ষ। তবে রাতের আঁধারে গাছ কেটে নিয়ে যাওয়ার ঘটনার তদন্ত করার আশ্বাস দেন তিনি।