ধর্ষণের ফলে জন্ম
নেয়া শিশুর পিতৃপরিচয়সহ ১২ বছর আগে নিজের ওপর হওয়া অপরাধের বিচার পেলেন এক নারী। ২০০৮
সালে রংপুরের পীরগাছা উপজেলায় ধর্ষণের শিকার হন তিনি।
সোমবার (০৮ ফেব্রুয়ারি)
বিকেলে ওই ঘটনায় দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি শফিকুল ইসলামকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
ও এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেন রংপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত-২ এর বিচারক রোকনুজ্জামান।
আদালত ওই রায়ে
তরুণীকে ধর্ষণের কারণে তার গর্ভে জন্ম নেয়া আসামি শফিকুলের ছেলেকে উত্তরাধিকারী হিসেবে
ঘোষণা করেন এবং ২১ বছর বয়স পর্যন্ত তার সমস্ত ব্যয়ভার প্রয়োজনে আসামির সহায় সম্পদ বিক্রি
করে প্রদান করার আদেশ দেন।
মামলার বিবরণে
জানা গেছে, ২০০৮ সালের ১ ডিসেম্বর পীরগাছা উপজেলার ওই নারীকে একই গ্রামের মজিবর রহমানের
ছেলে আসামি শফিকুল ইসলাম বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দিনের পর দিন ধর্ষণ করে। এতে মেয়েটি
গর্ভবতী হয়ে পড়লে আসামি শফিকুল তাকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে গর্ভের সন্তানকে নষ্ট
করার জন্য চাপ দেয়।
এ ঘটনায় নির্যাতিতা
রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে পিটিশন মামলা দায়ের করে। আদালত মেয়েটির গর্ভে
জন্ম নেয়া শিশুটির পিতৃপরিচয় নিশ্চিত করতে আদালতের নির্দেশে উভয়ের ডিএনএ পরীক্ষা করা
হলে গর্ভজাত শিশু ডিএনএ টেষ্টে শিশুটি আসামি শফিকুলের বলে প্রমাণিত হয়।
দীর্ঘ ১২ বছর
ধরে মামলার বিচারকালে ৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা গ্রহণ শেষে আসামি শফিকুল ইসলামকে
দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেন। মামলায় অপর
দুই আসামি মজিরন বেগম ও মজিবর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের বেকসুর
খালাসের আদেশ দেন আদালত।
বাদী পক্ষের মামলা পরিচালনাকারী আইনজীবী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত ২ এর বিশেষ পিপি অ্যাড জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আদালত ঐতিহাসিক রায়ের মাধ্যমে সন্তানের স্বীকৃতি ও তার ভরণপোষণের জন্য সম্পদ বিক্রি করার আদেশ দেবার মাধ্যমে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হল।