ঢাকার ধামরাইয়ে প্রেমিকার বাড়ীতে নৃশংসভাবে খুন হয়েছে আমিনুর রহমান (১৮) নামে এক প্রেমিক। মোবাইল ফোনে তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে তার হাত-পা-মুখ বেঁধে অমানুষিক নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে ভুক্তভোগি পরিবারের অভিযোগ। তবে ওই প্রেমিকার পরিবার এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করতে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রেমিকা ও প্রেমিকার বাবাকে গ্রেফতার করেছে ধামরাই থানা পুলিশ।
শনিবার রাত দশটার দিকে উপজেলার কুল্লা ইউনিয়নের কুল্লা গ্রামের কফিল উদ্দিনের বাড়ি থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহতের পরিবারের অভিযোগ রাতে ডেকে নিয়ে প্রেমিক আমিনুর রহমানকে হত্যা করা হয়েছে।
নিহত আমিনুর রহমান ধামরাইয়ের সোমভাগ ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামের জহির উদ্দিনের ছেলে। সে পেশায় একজন অটোরিকশা চালক ছিলেন।
আরও পড়ুন: রেললাইনের পাশে মিলল নবজাতকের মরদেহ
নিহতের পারিবারিক সূত্র জানান, শনিবার দিনগত রাত ৯টার দিকে মোবাইল ফোনে তার বাড়ি থেকে ডেকে নেয় প্রেমিকা উর্মি আক্তার। এরপর তর্ক বিতর্কের একপর্যায়ে পরিবারের সদস্যরা মিলে আমিনুরকে হাত-পা-মুখ বেঁধে অমানুষিক জুলুম নির্যাতনের পর নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। এরপর খুন হওয়া ওই অটো চালকের ভাতিজা মো. সুজন আহাম্মেদকে রাত সাড়ে ১০টার দিকে ওই প্রেমিকা ফোন করে জানায় তাদের বাড়িতে এসে ওই অটোরিকশা চালক আত্মহত্যা করেছে। খবর পেয়ে অটোরিকশা চালক মো. আমিনুর রহমানের পরিবারের সদস্যরা এলাকার গণমান্য লোকজজনকে সঙ্গে করে ওই প্রেমিকার বাড়িতে যায়। আমিনুর রহমানের নিথর দেহ দেখে আবেগ আপ্লোত হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। এরপর তারা ধামরাই থানা পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করা হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই অটোচালকের মরদেহ উদ্ধার করে। সেইসঙ্গে প্রেমিকা উর্মি আক্তার (১৮) ও তার পিতা কফিল উদ্দিনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনের জন্য তাদেরকে ব্যাপক জিজ্ঞাসা বাদ চলছে।
আমিনুর রহমানের বাবা জহির উদ্দিন বলেন, সুজন আমাদের খবর দিলে আমরা জানতে পারি আমার ছেলে মারা গেছে। তাকে মোবাইল ফোনে রাত ১০টার দিকে ডেকে নিয়ে তাকে নির্মম নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করেছে। আমি আমার ছেলের ওই খুনিদের কঠোর বিচার ও দৃষ্ট্রান্তমূলক শাস্তি চাই। আমি এ ব্যাপারে থানায় মামলা দায়ের করেছি।
ধামরাই থানার এসআই মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, কুল্লা গ্রাম থেকে এক অটোরিকশা চালকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়নাতদন্তের জন্য রাজধানীর হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের প্রেমিকা ও প্রেমিকার বাবা আটক রয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের পর পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।