চীনের বহুজাতিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আলিবাবার প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক মা ঝটিকা সফরে ঢাকা ঘুরে গেছেন। বেশ গোপনেই তিনি বাংলাদেশে আসেন। এত অল্প সময়ের জন্য কেন তিনি বাংলাদেশে এসেছেন, ঢাকায় এই অল্প সময়ে কী করেছেন তা জানা যায়নি। পরে পাকিস্তান হয়ে উজবেকিস্তানেও যান তিনি। নেপালি ও পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
আরও পড়ুন: ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলছে: ডিএমপি কমিশনার
জ্যাক মার এই
সফরকে ব্যক্তিগত বলা হলেও এ নিয়ে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ও প্রযুক্তি উদ্যোক্তাদের
মধ্যে জল্পনা তুঙ্গে উঠেছে। বিশেষ করে তার সফরসঙ্গীদের কারণেই এ সফরের প্রকৃত উদ্দেশ্য
নিয়ে জল্পনা বেশি হচ্ছে। চীনা, ড্যানিশ ও মার্কিনসহ সাতজন সঙ্গী ছিল তার সফরে।
ঢাকায় জ্যাক
মা উঠেছিলেন গুলশানের রেনেসাঁ হোটেলে। হোটেলটির অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর (সেলস) মো.
ওয়ালিদ শামীম রোববার (২ জুলাই) জ্যাক মার সঙ্গে একটি গ্রুপ ছবি তার ফেসবুকে পোস্ট করেছেন।
ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, ‘ঢাকা সফরে জ্যাক মাকে স্বাগত জানানো ছিল অত্যন্ত সম্মানের ব্যাপার।’
গণমাধ্যমকে তার দেওয়া তথ্যমতে, ২৬ জুন বিকেল ৬টার দিকে তিনি হোটেল থেকে বের হন এবং হোটেলের গাড়িতে করে দুই ঘণ্টা শহর ঘোরেন। পরদিন সকাল ১১টায় সকালের নাস্তা না করেই হোটেল ছাড়েন।
মো. ওয়ালিদ
শামীম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জ্যাক মার সঙ্গে একটি ছবি শেয়ার করার পরই কেবল সংবাদমাধ্যম
তার এ সফরের কথা জানতে পারে।
ই-কমার্স, রিটেইল, ইন্টারনেট ও প্রযুক্তি খাতে সুবিদিত জ্যাক মা-র মালিকানাধীন আলীবাবা গ্রুপ বাংলাদেশের বৃহত্তম মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) বিকাশে বিনিয়োগ করেছে। এছাড়া বাংলাদেশের বৃহত্তম ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম দারাজও অধিগ্রহণ করেছে আলীবাবা। দারাজ এখন দক্ষিণ এশিয়ার বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার ও নেপালে কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
আরও পড়ুন: ঝালকাঠিতে জাহাজে বিস্ফোরণে মৃত্যু বেড়ে ৪
এদিকে একজন
ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে কাঠমান্ডু পোস্ট বলেছে, নেপালের অল্প কয়েকজন
কর্মকর্তাই জ্যাক মার সফর সম্পর্কে জানতেন। তবে দেশটির প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর
ব্যক্তিগত সহকারীরা জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল এবং অর্থমন্ত্রী প্রকাশ
শরণ মাহাতোর সঙ্গে দেখা করার জন্য আগেই অনুরোধ জানিয়েছিলেন জ্যাক মা। সংবাদমাধ্যমে
মা-র কাঠমান্ডু সফরকে ‘বিজনেস ট্রিপ’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম পাকিস্তান অবজার্ভার ও দ্য
এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের প্রতিবেদনে বলা হয়, পরে জ্যাক মা ২৯ জুন পাকিস্তানের রাজধানী
ইসলামাবাদে পৌঁছান। সেদিনই তিনি লাহোর সফর করেন। জ্যাক মা ও তার দল পাকিস্তানে ব্যবসার
সুযোগ খতিয়ে দেখতে গেছেন এবং তারা অনেক প্রখ্যাত ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন চেম্বার অভ কমার্সের
কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করেছেন। পরের দিন (৩০ জুন) তিনি ব্যক্তিগত বিমানে করে উজবেকিস্তানের
উদ্দেশে রওনা হন।
নেপাল ও পাকিস্তানে যদি জ্যাক মার সফরের পেছনে ব্যবসায়িক সফরের উদ্দেশ্য থাকে, তাহলে বাংলাদেশ সফরের পেছনেও একই উদ্দেশ্য থাকাটা অস্বাভাবিক হবে না। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের সামনে সুযোগ আসতে পারে তার মতো বিজনেস টাইকুনের কাছ থেকে লাভবান হওয়ার।
আরও পড়ুন: নারীদের বিউটি পার্লার নিষিদ্ধ করল তালেবান
উল্লেখ্য, ২০২৩
সালের জুন পর্যন্ত জ্যাক মা চীনের চতুর্থ শীর্ষ এবং সারা বিশ্বে ৩৯তম শীর্ষ ধনী। তার
নিট সম্পদমূল্য সাড়ে ৩৪ বিলিয়ন ডলার।