কোরিয়ান রাষ্ট্রদূত
পার্ক ইয়ং-সিক বলেছেন, কোরিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে রয়েছে দীর্ঘদিনের কৌশলগত সম্পর্ক।
কোরিয়ার ৫ম
বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার হচ্ছে বাংলাদেশ। এখানকার ম্যানুফ্যাকচারার, অটোমোবাইল, মোবাইল
ও হোম ইলেক্ট্রনিক্স খাতে বিনিয়োগ রয়েছে কোরিয়ান কোম্পানীর। এছাড়াও বাংলাদেশের বড় বড়
প্রকল্পে দক্ষতার সাথে কাজ করে যাচ্ছে কোরিয়ান কোম্পানীগুলো।
বৃহস্পতিবার
(১৬ মে) সকালে বাংলাদেশে নিযুক্ত কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক সাথে চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র পরিচালকদের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারস্থ চেম্বার কার্যালয়ে এক মতবিনিময়
তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন,
২০২৬ সালের মধ্যে বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উত্তোরণ করবে। তাই বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি
ধরে রাখতে হলে গুণগত অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রয়োজন। ম্যানুফ্যাকচারিং খাতসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে
বৈচিত্রতা আনতে হবে। বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে বিশ্বে পোশাক শিল্পের ৭৫ শতাংশ কটনবেইজড
পোশাক রপ্তানি হয়। কিন্তু বিশ্বব্যাপী ম্যান মেইড ফাইবার পোশাকের কদর রয়েছে। বাংলাদেশে ব্লু ইকোনমি, ট্যুরিজম, এগ্রো
ও ফুড প্রসেসিং সেক্টরে অনেক উন্নত ও আধুনিক প্রযুক্তি রয়েছে কোরিয়ার। বর্তমানে বাংলাদেশের
কোরিয়ান কোম্পানীগুলোর বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কাঁচামাল আমদানির উপর উচ্চ ট্যারিফ, ভিসা
জটিলতা এবং কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স বিলম্বজনিত সমস্যা একটি বড় প্রতিবন্ধকতা। বিনিয়োগের
এসব বাধাসমূহ সমাধান প্রয়োজন।
চেম্বার সভাপতি
ওমর হাজ্জাজ বলেন, বাংলাদেশের সাথে দক্ষিণ কোরিয়ার ভৌগোলিক দূরত্ব সত্ত্বেও দুই দেশের
মধ্যে দৃঢ় সম্পর্ক রয়েছে। বাংলাদেশের তৈরিপোশাক খাত আজকের এই অবস্থানের পেছনে রয়েছে
কোরিয়ার অবদান। কারিগরি শিক্ষার উন্নয়নেও রয়েছে কোরিয়ার অবদান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের
তৈরি পোশাকের ৮০ শতাংশ হচ্ছে কোরিয়ার বিনিয়োগ। বর্তমানে বৈশ্বিক বাজারে ম্যান মেইড
ফাইবার তৈরিপোশাকের চাহিদা বাড়ছে। তাই এই সেক্টরে কোরিয়ার বিনিয়োগ ও প্রযুক্তি প্রত্যাশা
করছি। বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সুবিধা কাজে লাগিয়ে লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং,
নবায়নযোগ্য জ্বালানী, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ব্লু ইকোনমি, শিপ বিল্ডিং ও শিপিং খাতে কোরিয়ান
বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে।
তিনি আরো বলেন,
বিশ্বের খাদ্য উৎপাদনকারী শীর্ষ ১০টি দেশের মধ্যে অবস্থান করছে বাংলাদেশ। কিন্তু সংরক্ষণের
অভাবে বাংলাদেশে এক-তৃতীয়াংশ খাদ্য অপচয় হচ্ছে। তাই আধুনিক এগ্রো প্রসেসিং সেক্টরে
প্রযুক্তি ও বিনিয়োগ করতে পারে। বঙ্গবন্ধু শিল্প নগরে কোরিয়ার অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন
মেঘনা নদী থেকে পানি সরবরাহ লাইন চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড তথা চট্টগ্রাম শহর পর্যন্ত
সম্প্রসারণ করতে হবে।
চেম্বার সহ-সভাপতি
রাইসা মাহবুব বলেন, বাংলাদেশে কোরিয়ান ফুডের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। এছাড়া কোরিয়ার কসমেটিক্স,
প্রসাধন ও ফুটওয়্যারের কদর রয়েছে বাংলাদেশে। বাংলাদেশের বাজার এবং বিদেশের চাহিদা মাথায়
রেখে বাংলাদেশের কোরিয়ান ব্যবসায়ীদের একক বা যৌথ বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে।
এসময় চেম্বার পরিচালক অঞ্জন শেখর দাশ, মাহফুজুল হক
শাহ, আখতার উদ্দিন মাহমুদ ও দূতাবাসের কনসুল কিম জেয়ং কি, চট্টগ্রামে কোরিয়ান এসোসিয়েশন
প্রেসিডেন্ট জিন হুক পিক, কোরিয়ান প্রতিষ্ঠান তাইয়ং প্রতিনিধিগণ বক্তব্য রাখেন। সভায়
অন্যান্যদের মধ্যে চেম্বার পরিচালক জহিরুল ইসলাম চৌধুরী (আলমগীর), বেনাজির চৌধুরী নিশান,
আলমগীর পারভেজ, মাহবুবুল হক মিয়া ও মোঃ রেজাউল করিম আজাদ উপস্থিত ছিলেন