সংরক্ষণের উদ্যোগ না থাকায় চট্টগ্রামের
দেয়াঙ পাহাড়ের চূড়ায় ফিরিঙ্গি বন্দর নামে পরিচিত বৃটিশ শাসনামলের জাহাজ নিয়ন্ত্রণ অফিসটি কয়েক যুগ ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায়
পড়ে আছে।
বৃটিশ শাসনামলের চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ন্ত্রণাধীন
জাহাজের নিয়ন্ত্রণ অফিসটি কালের বিবর্তনে কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেলেও এখনও স্বাক্ষী হলে
দাঁড়িয়ে আছে দেয়াং পাহাড়ে জরাজীর্ণ অবস্থায়। বিগত ২০ বছর আগে সরকারের কিছু লোকজন এখানে
আসা-যাওয়া করতে দেখা গেলেও এখন আর কারো আনাগোনা দেখা যায়নি বলেও জানান স্থানীয়রা।
মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে ও স্থানীয়দের
সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উত্তর বন্দর মেরিন একাডেমি এলাকায় পাহাড়ের চূড়ায় দ্বিতল ভবনটিতে
মুঘল ও পাশ্চাত্য যুগের অনন্য স্থাপত্য। দুই ফুট চওড়া দেয়াল ইট-চুন-সিমেন্ট দিয়ে
তৈরি করা হয়েছে। ভবনটিতে ১১টি কক্ষের পাশাপাশি সিঁড়ি রয়েছে। জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে
থাকা ভবনের ছাদ, কক্ষ ও সিঁড়ির প্রবেশদ্বার ভেঙে পড়েছে। বছরের পর বছর পরিত্যক্ত অবস্থায়
পড়ে থাকায় ভবনটি আগাছায় ছেয়ে গেছে। ভবনের প্রায় সব জায়গায় প্লাস্টার খসে পড়ছে।
দ্বিতীয় তলায় পরিত্যক্ত ভবনের কক্ষটি পরিণত
হয়েছে মাদক সেবনের নিরাপদ আস্তানায়। বিভিন্ন এলাকা থেকে মাদক সেবনকারীরা এখানে ছুটে
আসেন। বিকাল থেকে শুরু হয়ে গভীর রাত পর্যন্ত পরিত্যক্ত ভবনে আনাগোনা থাকে মাদক সেবনকারীদের।
তাদের ভয়ে স্থানীয়া মুখ খোলার সাহস করেন না।
বন্দর এলাকার মোহাম্মদ মোবারক হোসেন বলেন,
'বৃটিশ শাসনামলের জাহাজ নিয়ন্ত্রণ এ অফিসে এলাকার অনেকেই চাকরি করেছেন। এখান থেকে কর্ণফুলী
নদীতে জাহাজ প্রবেশ আর বাহিরের দৃশ্যটা পরিষ্কারভাবে দেখা যায় এখনও। এই ভবনের করুণ
দশা দেখে খারাপ লাগছে। ভবনটি রক্ষায় সরকারের উদ্যোগ নেওয়া উচিত।'
স্থানীয় বৈরাগ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নোয়াব
আলী বলেন, এটি রাষ্ট্রের সম্পদ। এটিকে সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া খুবই জরুরি। আমি প্রশাসন
ও কতৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।'
আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)
মো. ইশতিয়াক ইমন বলেন, 'সময়ের প্রেক্ষিতে বন্দরের আধুনিকায়ন ও কাজ প্রসারিত হওয়ার কারণে
বন্দরের দাপ্তরিক সব কাজ কর্ণফুলী নদীর অপর প্রান্তে স্থানান্তর করা হয়। বন্দরের পুরানো
এই ভবনটি প্রত্নতাত্ত্বিকবিদদের সঙ্গে পরামর্শ করে পুরাকৃতি হিসেবে সংরক্ষণের চেষ্টা
করা হবে।