কক্সবাজার : কক্সবাজারে বিশাল সমুদ্রের সৌন্দর্য উপভোগ ছাড়াও আরও অনেক কিছু করার আছে। যেমন—প্যারাসেইলিং, ঘোড়ায় চড়া, বিচ বাইকিং, ওয়াটার বাইকিং। তা ছাড়া সৈকতে ঘণ্টায় ৩০ টাকায় চেয়ার ভাড়া করে সূর্যোদয়-সূর্যাস্ত উপভোগ করা যায়। তবে ঝুঁকিপূর্ণ অ্যাডভেঞ্চারের আগে চাইলে সেরে ফেলতে পারেন ট্রাভেল বীমা।
যাওয়ার সেরা সময় : নিঃসন্দেহে নভেম্বর থেকে জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারি। শীত শীত এ সময়ে সমুদ্র থাকে শান্ত। পরিবেশটাও চমৎকার। তবে হোটেলগুলোর ভাড়াও পড়বে তুনামূলক বেশি।
সেন্টমার্টিন : দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপটিতে খালি পায়ে হাঁটতে পারেন নীলাভ জল ধরে। সমুদ্রে যাবেন আর জলে ঝাঁপাঝাঁপি করবেন না, তা কি হয়? তাই সেন্টমার্টিনের নীল পানিতে সুইমিং করতে মোটেও ভুলবেন না। তবে অবশ্যই জেনে নেবেন সাঁতারের নিরাপদ স্পটগুলো। কাছেই ছেঁড়া দ্বীপ নামে আরও একটি ছোট দ্বীপ আছে। সেখানে গিয়ে বোট রাইডিং করতে পারেন। তবে যে জিনিসটি একদম মিস করবেন না তা হলো স্কুবা ড্রাইভিং। আর সেন্টমার্টিনের লোকাল খাবারের স্বাদ তো নিতেই হবে। বিশেষ করে সন্ধ্যার দিকে জমে ওঠে সেখানকার লোকাল বাজারগুলো।
যাওয়ার সেরা সময় : সেন্টমার্টিন যাওয়ার সেরা সময় হলো নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি। মার্চ থেকে জুলাই পর্যন্ত ঝড় হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সময়টা এড়িয়ে যাওয়া ভালো।
শ্রীমঙ্গল : চায়ের রাজধানীতে যাবেন আর চা খাবেন না, তা কী হয়। তাই শ্রীমঙ্গল গেলে সেখানকার সাত রঙের চায়ের স্বাদটি কমবেশি সবাই নিয়ে থাকেন। বোট রাইডের মাধ্যমে মাধবপুর লেক ও বাইক্কা বিল ঘুরে দেখতে পারেন। চাইলে দুর্দান্ত একটা ভ্রমণ শেষে হাম হাম ঝরনায় গোসল সারতে পারেন। লাউয়াছড়া রেইন ফরেস্ট এবং রেমা কালেঙ্গা রিজার্ভ ফরেস্ট দুটি ঘুরে দেখতে পারেন। তবে কোনো গাইড ছাড়া জঙ্গলের খুব বেশি ভেতরে না যাওয়াই ভালো।
যাওয়ার সেরা সময় : শ্রীমঙ্গল ঘুরে বেড়ানোর উপযুক্ত সময় মার্চ থেকে মে। এ সময় বর্ষাকাল থাকে। আর বর্ষাতেই চা বাগানের আসল সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। অবশ্য শীতেও বনভূমির সৌন্দর্যটা কম নয়।
সুন্দরবন : সুন্দরবনে প্রায় চার-পাঁচটি অভয়ারণ্য রয়েছে। বনের ভেতর দিয়ে অনেক মোহনা ও খাল বয়ে গেছে। সকালে এগুলোর মধ্য দিয়ে নৌকা ভ্রমণ আনন্দদায়ক অ্যাডভেঞ্চার হতে পারে। সুন্দরবনের ভেতরটা শান্তিপূর্ণ এবং নির্মল। জামতলা সমুদ্রসৈকতে হাঁটতে পারেন। জামতলা সমুদ্রসৈকত কক্সবাজার সৈকতের তুলনায় খালি, পরিষ্কার ও শান্ত থাকে।
যাওয়ার সেরা সময় : এখানে ভ্রমণের সেরা সময় হলো অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত। এ সময় সেখানকার তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি পর্যন্ত থাকে তাই এ পর্যটন স্থানটি দর্শনের সঠিক সময় এটি।
বান্দরবান : বান্দরবানে অসংখ্য ট্যুরিস্ট স্পট থাকায় অনেক কিছুই করা সম্ভব। বগা লেকে বোট রাইডিং, কেওক্রাডাংয়ে হাইকিং, আশপাশে ঘুরে দেখা এবং ঝরনার সৌন্দর্য উপভোগ করার পাশাপাশি জলকেলিতে মেতে উঠতে পারেন। বান্দরবান যেহেতু পাহাড়ি অঞ্চল তাই ঘোরাঘুরির পাশাপাশি হাইকিং ও ট্র্যাকিং করতে পারেন।
যাওয়ার সেরা সময় : বান্দরবান যাওয়ার সেরা সময় হলো নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি। এ সময় অবশ্য জিনিসপত্রের দাম একটু বেশি থাকে। যা বর্ষা মৌসুমে অনেকটাই কমে যায় এবং ট্যুরিস্ট স্পটগুলোতেও ভিড় অনেক কম থাকে।
রাঙামাটি : রাঙামাটিতে যখনই যান না কেন, কাপ্তাই লেকে কায়াকিং একদম মিস করবেন না। এ ছাড়া শেখ রাসেল ইকো পার্কে কেবল রাইড, রাজবন বিহার প্যাগোডা, শুভলং জলপ্রপাতের সৌন্দর্যটাও উপভোগ করতে পারেন।
যাওয়ার সেরা সময় : নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। কারণ এ সময় ঠান্ডা মৌসুম থাকে। রাঙামাটি যেহেতু পাহাড়ি এলাকা তাই বর্ষাকালে সেখানকার রাস্তাঘাট বন্ধ থাকে। যার কারণে সে সময় সেখানকার লোকাল ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
কুয়াকাটা : কুয়াকাটার মূল আকর্ষণ সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত। কোনোটাই মিস করবেন না। এ ছাড়া আশপাশে অবস্থিত জায়গাগুলো ঘুরে দেখতে পারেন।
যাওয়ার সেরা সময় : বছরের যে কোনো সময় কুয়াকাটা ভ্রমণ করা যায়। কিন্তু অন্যান্য মৌসুমের তুলনায় শীতকালে বেশি ভালো লাগে। গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালে সমুদ্রের ঢেউ মোটামুটিভাবে সৈকতে আছড়ে পড়ে। তাই আপনি যদি কুয়াকাটার প্রশান্তি উপভোগ করতে চান, তাহলে শীতকালে কুয়াকাটা ভ্রমণের পরিকল্পনা করা উচিত।
সাজেক : সাজেক ভ্যালি পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় এখানে হাইকিং ও ট্র্যাকিং করতে পারেন। তা ছাড়া রিসাং জলপ্রপাতের মধ্য দিয়ে ট্র্যাক, রহস্যময় আলুটিলা গুহা এবং পাহাড়ের চূড়া থেকে সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর দৃশ্য পেতে কংলাক পাহাড় পর্যন্ত যেতে পারেন।
যাওয়ার সেরা সময় : শীতকালে সাজেকের রিসোর্টগুলোর ভাড়া কম থাকে। তাই আপনি যদি অল্প খরচে সাজের ভ্রমণ করতে চান তাহলে শীতকাল বেছে নিন। যেমন নভেম্বরের মাঝামাঝি।
পতেঙ্গা সি-বিচ : কর্ণফুলী নদী ও সাগরের মোহনায় পতেঙ্গায় সূর্যোদয় বা সূর্যাস্তের দৃশ্য খুবই সুন্দর। বিশেষ করে বিকেলে এখান থেকে সূর্যাস্ত দেখা এবং সন্ধ্যার সময়টা খুবই উপভোগ্য। পতেঙ্গায় স্পিডবোটে চড়ে সাগরে ঘুরে বেড়ানো এক দারুণ মুহূর্ত তৈরি করে। বার্মিজ মার্কেট থেকে কেনাকাটা করতে পারেন। পাশাপাশি সব জায়গায় খাওয়ার জন্য রয়েছে সুস্বাদু স্ট্রিট ফুড। চাইলে সেসবের স্বাদও নিতে পারেন।
যাওয়ার সেরা সময় : শীতকাল পতেঙ্গার সৌন্দর্য উপভোগ করার সেরা সময়। এ সময় চাইলে পরিবার সঙ্গে নিয়ে সেখানে পিকনিক করতে পারেন।
চন্দ্রনাথ পাহাড় : চন্দ্রনাথ পাহাড়ের চূড়ায় রয়েছে একটি মন্দির। হাইকিং শেষে সুন্দর এ মন্দিরটি দর্শন করতে পারেন। মন্দিরের পাশেই ছোট টং দোকান আছে। সেগুলোতে হালকা খাবার পাওয়া যায়, তবে ভালো হয় ওঠার সময় সঙ্গে পর্যাপ্ত পানি ও কিছু শুকনো খাবার রাখলে।
যাওয়ার সেরা সময় : বর্ষা মৌসুম বাদে যে কোনো সময় যেতে পারেন। তবে গ্রীষ্মকালে গরমের বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে।