দেশের সব অবৈধ ইটভাটা ও ইটভাটার জ্বালানি হিসেবে কাঠের ব্যবহার বন্ধে সাত দিনের মধ্যে কার্যকর নির্দেশনা জারির নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। মন্ত্রিপরিষদ সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সচিবকে এ নির্দেশ পালন করতে বলা হয়েছে।
একইসঙ্গে দেশের সব জেলার অবৈধ ইটভাটা বন্ধে ও জ্বালানি হিসেবে কাঠের ব্যবহার বন্ধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তাকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং অবৈধ ইট প্রস্তুত, ভাটা স্থাপন ও ভাটায় কাঠ ব্যবহার বন্ধে বিবাদীদের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানাতে রুল জারি করেছেন আদালত। মামলার বিবাদীদের আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এ সংক্রান্ত রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রবিবার (১৩ নভেম্বর) বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম এবং বিচারপতি মো. সোহরাওয়ার্দীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাইনুল হাসান।
পরে মনজিল মোরসেদ বলেন, হাইকোর্টের আদেশে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সচিবকে বাংলদেশের সব জেলার জেলা প্রশাসকদের কার্যকর নির্দেশনা দিতে বলা হয়েছে। আগামী সাত দিনের মধ্যে অবৈধ ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধ ও জ্বালানি হিসেবে ইটভাটায় কাঠের ব্যবহার বন্ধ করে দুই সপ্তাহের মধ্যে আদালতে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
তিনি বলেন, আদালত অপর এক আদেশে পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক, পরিচালক ও বিভাগীয় কমিশনারদের এক সপ্তাহের মধ্যে তাদের নিজ নিজ দায়িত্বপ্রাপ্ত এলাকায় মনিটরিং টিম গঠন করে অবৈধ ইটভাটার কার্যক্রম ও জ্বালানি হিসেবে ইট ভাটায় কাঠের ব্যবহার স্থগিতকরণের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন এবং আদালতে দুই সপ্তাহের মধ্যে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছেন।
জানা গেছে, ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩ অনুসারে লাইসেন্স ছাড়া কোনও ইটভাটা স্থাপন ও পরিচালনা করা যায় না। একইসঙ্গে জ্বালানি হিসেবে ইটভাটায় কাঠের ব্যবহার নিষিদ্ধের বিধান থাকলেও বাংলাদেশের বেশিরভাগ জেলায় শীত মৌসুমকে সামনে রেখে অবৈধ ইটভাটাগুলো কার্যক্রম শুরু করছে। এমনকি জ্বালানি হিসেবে কাঠ ব্যবহারের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে বলে দৈনিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। পরে প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে গত ১৩ নভেম্বর রিট দায়ের করে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি)। ওই রিটের শুনানি আদালত আদেশ দিলেন।