আজঃ বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪
শিরোনাম

দেশের ৪০ ভাগ চাহিদা পূরণ করছে মানিকগঞ্জের গাজর

প্রকাশিত:শনিবার ০২ এপ্রিল 2০২2 | হালনাগাদ:শনিবার ০২ এপ্রিল 2০২2 | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

গাজর উৎপাদনে খ্যাতি রয়েছে মানিকগঞ্জের। প্রায় ৫০ বছর ধরে জেলার সিংগাইর উপজেলার কৃষকরা এই পুষ্টিকর খাদ্যশস্য উৎপাদন করে আসছেন। শুরুর দিকে চাষাবাদ কম হলেও সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে গাজরের চাষাবাদ। মাত্র তিন মাসের মধ্যে এই অর্থকরী ফসলে অধিক লাভবান হওয়ায় কৃষকরা ধরে রেখেছেন চাষাবাদ।

অনুকূল আবহাওয়া আর উত্তম পরিচর্যায় চলতি মৌসুমের জেলার সিংগাইর উপজেলায় গাজরের ফলন ভালো হয়েছে। এদিকে ফলন ও পাইকারি বাজারে এ বছর গাজরের দাম ভালো থাকায় কৃষক ও ব্যাপারীরা বেশ লাভবান হচ্ছেন।  অন্যদিকে স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে সারা দেশের ৩৫ থেকে ৪০ ভাগ গাজরের চাহিদা পূরণ করছে মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার উৎপাদিত গাজর। ঢাকার কারওয়ান বাজার, শ্যামবাজার, গাজীপুর, যাত্রাবাড়ি, কুমিল্লাসহ বিভিন্ন পাইকারি মোকামে (বাজারে) এসব গাজর বিক্রি করা হয়।

জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, সিংগাইর উপজেলার প্রায় ১০ হাজার কৃষক গাজর চাষাবাদের সঙ্গে যুক্ত। উপজেলার সদর ইউনিয়নের আজিমপুর, চরআজিমপুর, জয়মন্টপ, শায়েস্তা, জামির্ত্তা ইউনিয়নে গাজরের চাষাবাদ বেশি হয়। চলতি মৌসুমে সিংগাইর উপজেলায় কৃষকরা ১ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে কৃষকরা গাজরের আবাদ করেছেন। এ বছর চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১ হাজার ১০০ হেক্টর। গত বছর এক হাজারের কিছু বেশি জমিতে গাজরের আবাদ হয়েছিল আর উৎপাদন হয়েছিল ৪১ মেট্রিক টন গাজর। যা প্রতি হেক্টর জমিতে গাজর উৎপাদন হয়েছিল ৪১ মেট্রিক টন।

চলতি মৌসুমেও গাজরের ফলন ভালো হয়েছে। এ বছর প্রতি হেক্টর জমিতে গাজরের ফলন হয়েছে ৪২ মেট্রিক টন করে। যার গড় হিসাব অনুযায়ী চলতি মৌসুমে গাজরের উৎপাদন হয়েছে ৪২ হাজার মেট্রিক টন। কৃষকরা এক বিঘা জমির গাজর পাইকারি ব্যাপারীদের কাছে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকায় বিক্রি করে থাকেন বলে লাভবান কিছুটা কম হন। তবে কৃষকদের কাছ থেকে পাইকারিভাবে গাজর কিনে ব্যাপারীরা পাইকারি বাজারে বেশি দামে বিক্রি করায় লাভটা বেশি পান বলে জানায় কৃষি অধিদপ্তর।

সরেজমিন সিংগাইর উপজেলার নয়াডাঙ্গী এলাকায় জমি থেকে গাজর তোলার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক পিয়ার আলী খান (৫৭)। সরেজমিনে আলাপ হলে তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ৩২ বছর ধরে গাজরের আবাদ করছি। নিজের ১২ বিঘা জমিসহ অন্যের কাছ থেকে কটে রাখা আরও ২০ বিঘা জমিসহ মোট ৩২ বিঘা জমিতে এবার গাজরের আবাদ করেছি। এতে আমার প্রায় ১২ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। তবে ফলন ভালো হলে বিঘাপ্রতি ২০০ থেকে ২২০ মণ গাজর উৎপাদন হবে। এবার স্থানীয় বাজারসহ পাইকারি বাজারে গাজরের দাম ভালো পাওয়ায় মূলধন তোলার পরও বেশ লাভবান হব বলে আশা করছি।

রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বাসিন্দা সেন্টু প্রামাণিক বলেন, প্রতিবছরের তিন মাস মানিকগঞ্জের সিংগাইরে গাজর তোলার কাজ করছি প্রায় ১৫ বছর। প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত গাজর তুলে বস্তায় ভরি। এরপর জমি থেকে এসব গাজরের বস্তা ট্রাকে করে খোলায় (গাজর ধোঁয়ার জায়গা) নিই। সেখান সনাতন পদ্ধতিতে এসব গাজর পানি দিয়ে ধোয়ার পর আবার ট্রাকে তোলা হয়। এই কাজ করে প্রতিদিন আমাগো মজুরি হিসাবে ৭০০ টাকা থেকে ১০০০ হাজার টাকা পাই।

গাজরের সময় তিন মাস কাজ করে প্রায় লাখখানেক টাকা আয় করেন একই এলাকার শ্রমিক আবু বক্কর। তিনি বলেন, তিন মাস কাজ করে প্রায় লাখখানেক টাকা আসে। এ টাকা দিয়া সংসারের বিভিন্ন কাজ করি। হাড়ভাঙা পরিশ্রম করতে হয় গাজর তোলা, ধোয়ার কাজে। দীর্ঘদিন এই কাজের সঙ্গে যুক্ত আছি। তয় গাজর চাষাবাদে কৃষক তেমন দাম না পেলেও পাইকারি ব্যাপারীরা ভালোই দাম পায়। কৃষকের ফলন ভলো না হলে চালানই (মূলধন) তোলা কষ্টসাধ্য হয়।

কৃষক আক্কাস আলী বলেন, এবার পাঁচ বিঘা জমিতে গাজরের চাষ করেছি। জমিতে হালচাষ, বীজ, সার, কীটনাশক ও শ্রমিকের মজুরি নিয়ে খরচ হয়ে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা। গাজর বিক্রি করেছি ২ লাখ ২০ হাজার টাকার। এবার মূলধন তুলনায় কিছুটা লাভ হয়েছে। তবে এক কেজি গাজরের বীজ কিনতে হয়ে ২০ থেকে ২২ হাজার টাকায়। সরকার যদি বীজ, সারের দাম কমাইয়া দিত, তাহলে আমরা চাষাবাদ করে পরিবার নিয়া চলতে পারতাম।

ব্যাপারী নুরুল মিয়া বলেন, প্রায় ১৫ বছর ধরে গাজরের ব্যবসা করছি। আমরা ব্যাপারীরা কৃষকদের কাছ থেকে মুক্তাদরে প্রতি বিঘা গাজর কিনি ৩০ থেকে ৭০ হাজার টাকা করে। ফলন ভালো হলে কৃষকরা ভালো দাম পায় আর ফলন ভালো না হলে কৃষকরা কম দাম পায়। তবে একেবারে যে কৃষকরা গাজর চাষ করে লোকসানে থাকে, বিষয়টা এমন নয়।

পাইকারি ব্যবসায়ী মো. সোবাহান গাজী বলেন, আমাগো সিংগাইরের গাজরে খেতে অনেক সুস্বাদু। যে কারণে রাজধানী ঢাকাসহ দেশে বিভিন্ন অঞ্চলে এর চাহিদা রয়েছে। আমরা কৃষকদের কাছ থেকে গাজর কিনি প্রতি কেজি ১০ থেকে ১২ টাকা দরে। আর পাইকারি বাজারে বিক্রি করি ১৪ থেকে ১৬ টাকা কেজি দরে। এ বছর প্রায় ২০০ বিঘা জমির গাজর কিনেছি। ঢাকার কারওয়ান বাজার, শ্যামবাজার, গাজীপুর, যাত্রাবাড়ি, কুমিল্লাসহ বিভিন্ন পাইকারি মোকামে (বাজারে) এই গাজর বিক্রি করা হয়।

মানিকগঞ্জ কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের বিপণন কর্মকর্তা মো. ফয়জুল ইসলাম বলেন, এ জেলার উৎপাদিত গাজর খেতে মিষ্টি ও সুস্বাদু। এ জন্য দেশের বিভিন্ন এলাকায় এর চাহিদাও রয়েছে বেশ। যোগযোগব্যবস্থা ভালো থাকায় কৃষকরা ঢাকার বিভিন্ন পাইকারি বাজারে এসব গাজর বিক্রি করতে পারছে। এতে তাদের পরিবহন খরচও কম লাগছে।

তিনি আরও বলেন, গাজর বিক্রির ক্ষেত্রে আমরা ঢাকার কারওয়ান বাজারসহ বিভিন্ন পাইকারি বাজারের পাইকার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কৃষকদের যোগাযোগের ব্যবস্থা করে দিই। যাতে কৃষকরা গাজর বিক্রি করে লাভ একটু বেশি করতে পারেন। তবে বেশির ভাগ কৃষক স্থানীয় ব্যাপারীদের কাছে গাজর মুক্তার দামে বিক্রি করে দেন। ফলে কৃষকরা ব্যাপারীদের তুলনায় কিছুটা লাভ কম পান।

নিউজ ট্যাগ: মানিকগঞ্জ

আরও খবর



তীব্র গরম থেকে রক্ষা পাওয়ার ১০ উপায়

প্রকাশিত:শনিবার ১৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ১৩ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জীবন ধারা ডেস্ক

Image

এ বছর বাংলা নতুন বছরের প্রথম মাস অর্থাৎ বৈশাখ শুরুর আগেই হয়েছে দাবদাহ। ইতোমধ্যে দেশের কোথাও কোথাও তাপমাত্রার পারদ ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়েছে। আবহাওয়া অফিস থেকেও জানানো হয়েছে আগামী দুই দিন বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই।

পূর্বাভাস বলছে, চলমান দাবদাহ আরও চার দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। এমন গরমে দীর্ঘ সময় রোদে থাকলে হিটস্ট্রোক হয়ে অসুস্থ হয়ে যেতে পারে লোকজন। শিশু ও বয়স্কদের জন্য এই ঝুঁকি আরও বেশি। তীব্র গরম থেকে রক্ষা পেতে যা করবেন

১. পাতলা ও হালকা রঙের পোশাক পরুন

২. বাড়ির বাইরে থাকার সময় সরাসরি রোদ এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন

৩. শরীরে পানিশূন্যতা এড়াতে অতিরিক্ত পানি ও শরবত পান করতে হবে

৪. স্যালাইন পানিতে থাকা সোডিয়াম, পটাশিয়াম ও চিনি শরীর সজীব রাখতে বিশেষভাবে কার্যকর। দীর্ঘ সময় গরমে থাকলে স্যালাইন পান করুন।

৫. গ্রীষ্মকালীন ফল দিয়ে তৈরি তাজা জুস পান করুন

৬. মাংস এড়িয়ে বেশি করে ফল ও সবজী খান

৭. প্রস্রাবের রঙ খেয়াল করুন। প্রস্রাবের গাঢ় রঙ পানি স্বল্পতার লক্ষণ।

৮. সব সময় ছাতা বা টুপি সাথে রাখুন

৯. ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে রক্ষা করতে সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন

১০. চেষ্টা করুন যেন দিনে কম বাইরে যেতে হয়


আরও খবর



ছুটির দিনেও আজ ব্যাংক খোলা যেসব এলাকায়

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৫ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
অর্থ ও বাণিজ্য ডেস্ক

Image

ঈদুল ফিতরের আগে সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটির মধ্যেও কিছু এলাকায় সীমিত পরিসরে ব্যাংক খোলা রয়েছে। তবে অন্যান্য দিনের তুলনায় গ্রাহকের উপস্থিতি তুলনামূলক কম। এর আগে গত রবিবার (৩১ মার্চ) বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফসাইট সুপারভিশন (ডিওএস) বিভাগ থেকে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ব্যাংক খোলা রাখার নির্দেশনা জারি করা হয়।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, তৈরি পোশাক শিল্পে কর্মরত শ্রমিক, কর্মচারী, কর্মকর্তাদের বেতন-বোনাসসহ অন্যান্য ভাতা পরিশোধ এবং রপ্তানি বিল বিক্রির সুবিধার্থে তিন দিন সীমিত পরিসরে তফসিলি ব্যাংকের কিছু শাখা খোলা থাকবে। শিল্পসংশ্লিষ্ট এলাকার এসব শাখা ৫, ৬ ও ৭ এপ্রিল খোলা থাকবে।

এতে আরও বলা হয়, আসন্ন ঈদুল ফিতরের আগে তৈরি পোশাক শিল্পসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রপ্তানি বিল বিক্রয় ও শিল্পে কর্মরত শ্রমিক, কর্মচারী, কর্মকর্তাদের বেতন, বোনাসসহ অন্যান্য ভাতাদি পরিশোধের সুবিধার্থে ঢাকা মহানগরী, আশুলিয়া, টঙ্গী, গাজীপুর, সাভার, ভালুকা, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামে অবস্থিত তফসিলি ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট শাখা খোলা রাখতে হবে।

এ ছাড়া পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এসব এলাকায় ৫, ৬ এবং ৭ এপ্রিল সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটির দিন সীমিতসংখ্যক লোকবলের মাধ্যমে সীমিত পরিসরে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালিত হবে।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়, ৫ এপ্রিল ব্যাংক লেনদেন চলবে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত। ব্যাংক খোলা থাকবে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকেল ৩ পর্যন্ত। তবে মাঝে জুমার নামাজের জন্য বিরতি থাকবে দুপুর ১টা থেকে দুপুর ১টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত।

আর ৬ ও ৭ এপ্রিল ব্যাংক লেনদেন চলবে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত। ব্যাংক খোলা থাকবে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত।


আরও খবর



মৌসুমের আগেই চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গু

প্রকাশিত:সোমবার ১৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ১৫ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

সাধারণত বর্ষার ঠিক আগে আগে শুরু হয় ডেঙ্গুর প্রকোপ। বছরের মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়টাকে ডেঙ্গুর মৌসুম ধরা হয়। তবে গত কয়েক বছর ধরে সারা বছরই কম-বেশি ডেঙ্গু রোগী পাওয়া যাচ্ছে। এ বছর ৯ এপ্রিল পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২২ জন। এ সময়ের মধ্যে ১ হাজার ৭৮৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন। ফলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, সামনে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।  

ডেঙ্গু এডিস মশাবাহিত রোগ। এ রোগের ভাইরাসের একমাত্র বাহক স্ত্রী এডিস মশা। এ মশার মাধ্যমে ভাইরাস মানবদেহে সংক্রমিত হলে ডেঙ্গু হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তিকে এডিস মশা কামড়ালেও মশার মধ্যে ভাইরাস সংক্রমিত হয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ডেঙ্গু আক্রান্ত বাহক অন্য জায়গায় ভ্রমণের মাধ্যমে রোগটি ছড়িয়ে পড়ে। অর্থাৎ একজন আক্রান্ত ব্যক্তি যখন অন্য জায়গায় ভ্রমণ করেন, সেখানে তাকে এডিস মশা কামড়ালে সেই মশার ভেতরেও ডেঙ্গুর জীবাণু ছড়িয়ে পড়ে, আর সেসব মশা যাদের কামড়ায় তাদের ডেঙ্গুরোগ হতে পারে।

বর্ষা মৌসুমে এডিস মশার প্রজনন বৃদ্ধি পায় বলে এ সময় ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয় এমন ধারণা প্রচলিত থাকলেও বিগত কয়েক বছরে দেখা গেছে, উপযুক্ত পরিবেশ পেলে বছরের যেকোনও সময় এ মশার বংশবিস্তার ঘটে এবং ডেঙ্গুরোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এ বছরের জানুয়ারি থেকে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ৭৮৯ জন এবং মারা গেছেন ২২ জন। এর মধ্যে জানুয়ারিতে রোগী ছিল ১ হাজার ৫৫ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩৩৯ জন এবং মার্চে ৩১১ জন। এপ্রিলের ৯ দিনে রোগী পাওয়া গেছে ৮৪ জন।

গত বছর এযাবৎকালের সর্বাধিক ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন ডেঙ্গুরোগী শনাক্ত হয়। তবে তখন রোগী বেশি ছিল মে থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত। এ বছর জানুয়ারিতেই হাজারের বেশি রোগী পাওয়া গেছে, যা আগে কখনও পাওয়া যায়নি। ২০২২ সালের জানুয়ারিতে রোগী পাওয়া যায় ১২৬ জন, ২০২১ সালের জানুয়ারিতে রোগী ছিল ৩২ জন।

বিগত দিনগুলোর তুলনায় এ বছর মৃত্যুও বেড়েছে। এ বছরের জানুয়ারিতে মারা গেছেন ১৪ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩ জন এবং মার্চে ৫ জন। গত বছরের জানুয়ারিতে মারা যান ৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩ জন এবং মার্চে কোনও মৃত্যু ছিল না। ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত ডেঙ্গুতে কেউ মারা যায়নি। তার আগে ২০২১ সালেও এই সময়ের মধ্যে এই রোগে মৃত্যুর কোনও ঘটনা ঘটেনি।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, কীটতত্ত্ববিদ ও চিকিৎসকরা বলছেন, এবারে পরিস্থিতি গতবারের চেয়ে নাজুক হতে পারে। সংক্রমণ ও মৃত্যু সেই পূর্বাভাস দিচ্ছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ বলেন, বিভাগীয় ও জেলা শহরে স্বাস্থ্য অবকাঠামো যথেষ্ট আছে। কিন্তু প্রান্তিক পর্যায়ে বেশি রোগী হলে তা সামলানো কঠিন হয়ে যাবে।

রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) এক কীটতত্ত্ববিদ বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতামূলক কার্যক্রম বছরজুড়ে চালাতে হবে। গত বছর আমরা গ্রামাঞ্চলে রোগী পেতে শুরু করেছি। এ বছর এই পরিমাণটা আরও বাড়তে পারে। বাড়লে আমাদের চিকিৎসা সক্ষমতার ওপর অনেক চাপ পড়বে।

কীটতত্ত্ববিদ ড. জি এম সাইফুর রহমান বলেন, ২০১৩ সালের আগ পর্যন্ত আমরা দেখেছি, মার্চ-এপ্রিলে ডেঙ্গুরোগী পাওয়া যায়। ২০১৩ সালের পর থেকে ২০১৬ পর্যন্ত দুই-এক মাস বাদ দিয়ে প্রায় সব মাসেই ডেঙ্গুরোগী পাওয়া গেছে। ২০১৬ থেকে আজ পর্যন্ত প্রতি মাসেই একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রোগী পাওয়া যাচ্ছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, এডিস মশার উপদ্রব বন্ধ করতে হবে। চিকিৎসা পরের কথা। চিকিৎসার জন্য যা যা দরকার সেটা নিয়ে আমরা এরইমধ্যে একটা মিটিং করেছি। এখন আবার বসবো যেন চিকিৎসায় কোনও ঘাটতি না হয়।


আরও খবর



তরমুজের পর ফেসবুকে চলছে গরুর মাংস বয়কটের ডাক

প্রকাশিত:রবিবার ৩১ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ৩১ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

ফেসবুকে চলছে গরুর মাংস বয়কটের হিড়িক। মূলত বাজারে গরুর মাংসের অতিরিক্ত দামের কারণে অনেকে এটিকে বয়কটের ঘোষণা দিয়েছেন। এতে দাম কমবে বলে ধারণা তাদের। বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট ফেসবুক পেজ এবং গ্রুপে এ বয়কটের স্ট্যাটাস দিচ্ছেন অনেকেই।

এর আগে রমজানের শুরুতে রাজধানীতে তরমুজের কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হয়। তখন থেকে এর প্রতিবাদ জানিয়ে ফেসবুকে এ পণ্য কিছুদিনের জন্য বয়কটের ঘোষণা দিয়ে অনেকে পোস্ট দেন। তবে রোজার মধ্যেই তরমুজ নেমে এসেছে ২০-২৫ টাকা কেজি দরে। এটিকে প্রতিবাদ বা বয়কটের ফল হিসেবে দেখছেন নেটিজেনরা।

তরমুজ বয়কটের দাম নিয়ে কারসাজি বন্ধ হওয়ার পর এবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে গরুর মাংস বয়কটের ডাক দিয়েছে সাধারণ মানুষ। রোজার শুরু থেকেই গরুর মাংসের দাম বেড়েই চলেছে। গত ১৫ মার্চ গরুর মাংসের দাম ৬৬৪ টাকা বেঁধে দেয় সরকার। তবে শুক্রবারও বাজারে গরুর মাংস বিক্রি ৭৮০-৮০০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।

গরুর মাংস বয়কটের ডাক দিয়ে অনেকের স্ট্যাটাসই ভাইরাল হয়েছে। এদের মধ্যে একজন লিখেছেন, তরমুজের ভাব বেড়েছিল আমাদের আমজনতার বয়কটে তার দাম এখন হাতের নাগালে। এভাবে গরুর মাংসও খাওয়া বাদ দিন, বয়কট করুন ১ বা ২ বা ৩ মাস। দেখবেন, সেটাও হাতের নাগালে চলে আসবে। ক্রেতা না কিনলে দাম বাড়িয়ে কয়দিন কাটা গরুর মাংস রাখবে ফ্রিজে! কম দামে ক্রেতা না কিনলে কত দিন চড়া দাম হাকাবে! ক্রেতাই যদি না থাকে কিসের সিন্ডিকেট! আমরা সব চাইলেই পারি! লাগবে শুধু একতা! চলেন, তরমুজের পরে এবারে গরুর মাংসের দাম কমাই।

অন্য একজন একটি গ্রুপে লিখেছেন, আমি গরুর মাংস কিনলাম। বললো যে, দেশের মানুষ ভাত পায় না, গরুর মাংস কেনে। গরুর মাংসের ম্যালা দাম, আসুন গরুর মাংস বয়কট করি।

ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া অন্য একটি স্ট্যাটাসে গরুর মাংস বয়কটের ডাক দিয়ে বলা হয়েছে, আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় দেশবাসী আপনারা তরমুজকে বয়কট করেছেন, এখন বর্তমানে তরমুজের দাম ১০০ টাকা কেজির পরিবর্তে ৩০ টাকা ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে, এবার আপনাদের পালা, গরুর মাংস কে বয়কট করুন, দেখবেন ৮০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা কেজিতে চলে এসেছে গরুর মাংস। ধন্যবাদ।


আরও খবর
হঠাৎ উধাও হয়ে গেল ফেসবুক!

মঙ্গলবার ০৫ মার্চ ২০২৪




ইসরায়েলকে সন্তুষ্ট করতে কোরআনের আয়াত সরাচ্ছে সৌদি

প্রকাশিত:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্ততায় ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার দিকে এগোতে শুরু করে সৌদি আরব। তবে মুসলিম বিশ্বের প্রতিক্রিয়ার ভয়ে সে কার্যক্রম চলে একেবারেই গোপনে।

গেল বছরের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে সেই প্রক্রিয়া থেমে গেলেও থেমে নেই ইহুদিবাদী দেশটির সঙ্গে সহযোগিতা প্রতিষ্ঠায় সৌদি প্রচেষ্টা।

এমন লক্ষ্যে গত কয়েক বছর ধরেই সৌদি আরবের পাঠ্যবইতে পরিবর্তন আসছে। এবার দেশটির পাঠ্যপুস্তক থেকে কুরআনের বিভিন্ন আয়াত বাদ দেয়ার অভিযোগ করেছেন ইয়েমেনে ইরান সমর্থিত গোষ্ঠির নেতা আব্দুল মালেক আল-হুতি। শনিবার ইরানের আধাসরকারি বার্তাসংস্থা মেহের নিউজ এজেন্সির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

আব্দুল মালেক আল-হুতি বলেন, কোরআনের যেসব আয়াতে ইহুদিদের নেতিবাচক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছে সে আয়াতগুলো সৌদি আরবের পাঠ্যপুস্তক থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে।

এ ধরনের পদক্ষেপ ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য একটি বড় অবিচার উল্লেখ করে হুতি নেতা বলেন, সম্ভবত ইসরাইলি সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য সৌদি সরকার এই পদক্ষেপ নিয়েছে।

এ সময় ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনকারী আরেক আরব দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতও পাঠ্যপুস্তক থেকে কোরআনের শিক্ষা বাদ দেয়ার এই নীতি অনুসরণের কথা ভাবছে বলে অভিযোগ করেন আল হুতি।

সিএনএন এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের মে মাসে ইসরাইল ও লন্ডনভিত্তিক ইনস্টিটিউট ফর মনিটরিং পিস অ্যান্ড কালচারাল টলারেন্স ইন স্কুল এডুকেশন প্রকাশিত একটি গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, সৌদি পাঠ্যপুস্তকের সর্বশেষ সংস্করণগুলোতে ইহুদি ও খ্রিষ্টানদের সম্পর্ককে নেতিবাচক হিসেবে উপস্থাপন করার প্রচলিত ধারা থেকে বের হয়ে এসেছে কর্তৃপক্ষ। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ধারাবাহিকভাবে এই পরিবর্তন আনা হয়েছে।


আরও খবর