পদ্মা সেতুর
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কারও বিরুদ্ধে আমার কোনো অনুযোগ
নেই। আমরা নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা দেশবাসীকে নিয়ে সব সমস্যা মোকাবিলা
করে যাচ্ছি। আমি দেশবাসীকে স্যালুট জানাই।
বহুলকাঙ্ক্ষিত
পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করতে সেতুর মাওয়া প্রান্তে পৌঁছে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা। বক্তব্যের শুরুতে তিনি দেশবাসীকে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানান। তিনি পদ্মা
সেতু নির্মাণে জড়িতদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
প্রধানমন্ত্রী
বলেন, ‘ষড়যন্ত্রের কারণে সেতু নির্মাণে বেগ পেতে হয়েছে। তবে, থেমে যায়নি। আমাদের
কেউ দাবায়ে রাখতে পারেনি।’
শেখ হাসিনা
বলেন, ‘পদ্মা সেতুর গুণগত মান বজায় রাখতে কোনো কার্পণ্য করা হয়নি। আন্তর্জাতিক
বাণিজ্যে বিশেষ ভূমিকা রাখবে এ সেতু। দেশের অর্থনীতি আরও গতিশীল হবে। এ দেশের মানুষই
আমার সাহসের ঠিকানা।’
পদ্মা সেতু
নির্মাণের গল্প তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটি শুধু ইট, রড, সিমেন্ট ও কংক্রিটের সেতু নয়, বাংলাদেশের সম্মান আর
সক্ষমতার প্রতীক। এই সেতুর নির্মাণ ঠেকাতে ষড়যন্ত্র হয়েছে।’
আওয়ামী লীগের
সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘পদ্মা সেতু নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র হয়েছে। টাকা ছাড় না হতেই দুর্নীতির কথা
বলা হলো। মামলা হলো। সব কিছু পেরিয়ে আমরা আজ এ সেতু উদ্বোধন করতে যাচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী
বলেন, ‘১৯৯৬ সালে আমি জাপানে গিয়েছিলাম। ওই সময় জাপান সরকারকে বলেছিলাম। সে
অনুযায়ী পদ্মা সেতুর কাজ এগিয়ে যায়। কিন্তু, ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসতে পারিনি। বিএনপি
সরকার ক্ষমতায় এসে কাজ এগিয়ে নিতে পারেনি। আমরা ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর পুনরায় কার্যক্রম
শুরু করি। কিন্তু, বাংলাদেশের একজন স্বনামধন্য লোক একটি ব্যাংকের পদে থাকার জন্য ষড়যন্ত্র
শুরু করে। বিশ্বব্যাংক অর্থায়নে এগিয়ে এলেও
পরে ষড়যন্ত্রের কারণে তারা ফিরে যায়। কানাডার আদালতে মামলা করা হলেও সেখানে বিশ্বব্যাংকের
অভিযোগের বিষয়ে প্রমাণ করতে পারেনি। বরং, আদালতে দুর্নীতির অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত
হয়।’
শেখ হাসিনা
বলেন, ‘আমার কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। যারা আত্মবিশ্বাসের অভাবে ভুগেছিল,
এখন তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়বে।’
প্রধানমন্ত্রী
আরও বলেন, ‘আমি সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছিলাম, নিজের অর্থায়নে পদ্মা সেতু করব। জনগণ আমাদের
পাশে দাঁড়িয়েছে। আজকের পদ্মা সেতু মানুষের সহযোগিতায় করাতে সক্ষম হয়েছি। বাংলাদেশের
অর্থনীতি ধসে পড়েনি। সমগ্র বিশ্বের কাছে আজ বাংলাদেশ প্রমাণ করেছে আত্মমর্যাদাশীল বাংলাদেশের।
বাংলাদেশের জনগণকে আমি স্যালুট জানাই।’
আওয়ামী লীগ
সভাপতি বলেন, ‘পদ্মা সেতুর কাজের গুণগত মানে আপস করা হয়নি। এটা আশ্চর্য্যজনক সৃষ্টি।
ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এ সেতুর সৃষ্টি থেকে অনেক কিছু শিখতে পারবে। যেহেতু খরস্রোতা নদী,
তাই যান চলাচল যেন নির্বিঘ্ন করা যায়, সে ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।’