স্বাগতিক অজিদের বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের
সর্বশেষ টেস্ট জয় ১৯৯৭ সালে। দীর্ঘ ২৭ বছর পর অস্ট্রেলিয়াকে তাদেরই মাটিতে হারানোর
স্বাদ পেলো তারা। সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে ৮ রানে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে দীর্ঘ দিনের
অধরা জয়ের পাশাপাশি সিরিজ ড্র কর ক্যারিবিয়রা।
অ্যাডিলেডে সিরিজের প্রথম টেস্টে তিন দিনের
মধ্যে হেরে যাওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্রিসবেনে দিবারাত্রির ম্যাচটিতেও সহজেই হেরে যাবে
বলে মনে করেছিলেন অনেকেই। প্রথম ইনিংসে ৩১১ রানে অলআউট হয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিন্তু
কেমার রোচ আর আলজারি জোসেফের অসাধারণ বোলিংয়ের পর অস্ট্রেলিয়া তাদের প্রথম ইনিংস ঘোষণা
করে ৯ উইকেটে ২৮৯ রান তুলে।
দ্বিতীয় ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ অলআউট হয়ে
যায় মাত্র ১৯৩ রানে, অস্ট্রেলিয়ার লক্ষ্য দাঁড়ায় ২১৬। ২ উইকেটে ৬২ রান তুলে তৃতীয় দিনের
খেলা শেষ করা অস্ট্রেলিয়া জয়ের পথেই ছিল। কিন্তু আজ চতুর্থ দিনে ৬৮ রানে ৭ উইকেট নিয়ে
জোসেফ পাশার দান পাল্টে দেন। স্টিভেন স্মিথের ঠান্ডা মাথার দারুণ ধৈর্য্যশীল ৯১ রানের
দুর্দান্ত ইনিংসটার পরও জয়োৎসব করতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। ২১৬ রানের জয়ের লক্ষ্যে খেলতে
নেমে ২০৭ রানে অলআউট হয়েছে প্যাট কামিনসের
দল।
১৯৯৭ সালের ১ ফেব্রুয়ারি, শামার জোসেফের
তখন জন্মও হয়নি। এর দুবছর পর পৃথিবীর আলো দেখেন জোসেফ। সেই জোসেফই ফাস্ট বোলিংয়ের অনন্য
প্রদর্শনীতে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ২৭ বছর পর টেস্ট ম্যাচে জয় এনে দিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে।
আগের দিন ব্যাটিংয়ের সময় ডান পায়ের আঙুলে চোট যাঁর বোলিং করাই অনিশ্চিত ছিল, সেই শামার
জোসেফ ৬৮ রানে নিয়েছেন ৭ উইকেট। অস্ট্রেলিয়ার শেষ উইকেটটি তুলে নিয়ে টেস্ট ম্যাচ শেষও
করে দিয়েছেন তিনি।
সিরিজের প্রথম টেস্টে দেশের হয়ে সাদা জার্সিতে
পথচলা শুরু হয়েছিল শামার জোসেফের। টেস্ট অভিষেকটা তিনি রাঙিয়েছিলেন ইনিংসে পাঁচ উইকেট
শিকার করে। ব্রিসবেনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সিরিজ হার এড়ানোর লড়াইয়ে আরও রূদ্ররূপে আবির্ভুত
শামার জোসেফ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ইনিংস: ৩১১, অস্ট্রেলিয়া
প্রথম ইনিংস: ২৮৯/৯ (ডিক্লেয়ার)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২য় ইনিংস: ৭২.৩ ওভারে ১৯৩
(ম্যাকেঞ্জি ৪১, অ্যাথানেজ ৩৫, গ্রিভস ৩৩, হজ ২৯, ব্রাফেট ১৬; হ্যাজলউড ১৪–২৩–৩, লায়ন ২২–৪২–৩, গ্রিন ১০–৩৭–১, স্টার্ক ১৪.৩–৪৫–১)
অস্ট্রেলিয়া ২য় ইনিংস: ৫০.৫ ওভারে ২০৭
(স্মিথ ৯১*, গ্রিন ৪২, স্টার্ক ২১, খাজা ১০, মার্শ ১০, লায়ন ৯; শামার ১১.৫–৬৮–৭, ১৭–৬২–২, গ্রেয়াভেস ১২–৪৬–১)
ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৮ রানে জয়ী।