জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের শেষ তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে ১০৫ রানের দাপুটে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। এ ম্যাচ জিতে সিরিজে হোয়াইটওয়াশও এড়িয়েছে টাইগাররা। জিম্বাবুয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছে।
বুধবার হারারে স্পোর্টস ক্লাবে ম্যাচটি বাংলাদেশ সময় দুপুর সোয়া একটায় মাঠে গড়ায়। যেখানে প্রথমে ব্যাট করা বাংলাদেশ এনামুল হক বিজয় ও আফিফ হোসেনের হাফসেঞ্চুরিতে ভর করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৫৬ রান করে। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৩২.২ ওভারে ১৫১ রানে অলআউট হয় জিম্বাবুয়ে।
২৫৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারেই উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। তাকুদজোয়ানাশে কাইতানোকে শূন্য রানে এলবি করেন হাসান মাহমুদ। পরের ওভারে ফের উইকেট হারায় তারা। এবার তাদিওয়ানাশে মারুমানিকে বোল্ড করেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
দলীয় ষষ্ঠ ও নিজের দ্বিতীয় ওভারে এসে চমক দেখান বাংলাদেশের অভিষিক্ত পেসার এবাদত হোসেন। ওভারের তৃতীয় ও চতর্থ বলে দুই উইকেট নিয়ে তিনি হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও জাগান। ওয়েসলি মাধেভেরেকে মেহেদী হাসান মিরাজের ক্যাচ বানানোর পর দুর্দান্ত ফর্মে থাকা সিকান্দার রাজাকে শূন্য রানে বোল্ড করেন।
জিম্বাবুয়ের পঞ্চম উইকেটের পতন ঘটান তাইজুল ইসলাম। ইনোসেন্ট কাইয়াকে ব্যক্তিগ ১০ রানে ফেরান। নিজের পরের ওভারে টনি মুনিয়োঙ্গাকে ১৩ রানে বিদায় করেন এই স্পিনার।
বোলিংয়ে এসে উইকেট দখলের তালিকায় যোগ দেন মোস্তাফিজুর রহমানও। নিজের দ্বিতীয় ও তৃতীয় ওভারে তিনটি উইকেট লুফে নেন কাটার মাস্টার। তিনি লুক জঙ্গুয়ে (১৫), ক্লাইভ মাদান্দে (২৪) ও ব্র্যান্ড ইভান্সকে ফেরান।
তবে শেষ উইকেট জুটিতে ঝড় তোলেন নিয়াউচি ও এগারাভা। ৫৮ বলে তারা ৬৮ রান তোলেন। অবশেষে এই জুটি ভাঙেন মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি ৩১ বলে ২৬ রানে থাকা নিয়াউচিকে বোল্ড করেন। অপরপ্রান্তে ২৭ বলে ৩৪ রানে অপরাজিত থাকেন এগারাভা।
বাংলাদেশ বোলারদের মধ্যে ৪টি উইকেট পান মোস্তাফিজুর রহমান। দুটি করে উইকেট পান এবাদত ও তাইজুল।
এর আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ উদ্বোধনী জুটিতে ৮.৩ ওভারে ৪১ রান তোলে। তবে রান আউটের শিকার তামিম ইকবাল ব্যক্তিগত ১৯ রানে ফেরেন। বাংলাদেশ অধিনায়ক ৩০ বলে ৩টি চার হাঁকান। পরের ওভারেই নাজমুল হোসেন শান্তকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। শূন্য রানে এই ব্যাটার ব্র্যাড ইভান্সের বলে মাঠ ছাড়েন। একই ওভারে মুশফিকুর রহিমও শূন্য রানে ফেরেন।
চতুর্থ উইকেট জুটিতে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে পার্টনারশিপ গড়েন এনামুল হক। এই ওপেনার ৪৮ বলে হাফসেঞ্চুরির দেখা পান। এরপর দলীয় শতকের দেখা পায় বাংলাদেশ।
এই জুটিতে তারা ৯০ বলে ৭৭ রান তোলেন। অবশেষে এনামুল হক আউট হন। ডানহাতি এই ব্যাটার ৭১ বলে ৬টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৭৬ করে লুক জঙ্গুয়ের বলে বিদায় নেন। তবে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই ধীর ব্যাটিং করতে থাকেন অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ। শেষ পর্যন্ত তিনি ৬৯ বলে ৩৯ করে রিচার্ড এনগারাভার বলে বোল্ড হন।
মেহেদী হাসান মিরাজকে নিয়ে ষষ্ঠ উইকেটে রান তোলার চেষ্টা করেন আফিফ হোসেন। ৪৭ বলে তারা ৩৩ রান করেন। তবে ২৪ বলে ১৪ রান করে মিরাজ সিকান্দার রাজার বলে এলবি হন। শেষদিকে দ্রুত কিছু উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তবে উইকেটে অবিচল থাকেন আফিফ। তিনি ৮১ বলে ৬টি চার ও ২টি ছক্কায় ৮৫ রানে অপরাজিত থাকেন। এটি তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের তৃতীয় হাফসেঞ্চুরি।
জিম্বাবুয়ে বোলারদের হয়ে দুটি করে উইকেট নেন ব্র্যাড ইভান্স ও লুক জঙ্গুয়ে।