ডাক্তার পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে সুমনা
নামের একজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন মেডিকেল এ্যাসিসটেন্ট ট্রেনিং স্কুল থেকে ডিগ্রী
নিয়ে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চাকরিরত ভুক্তভোগী মালিহা মাহজাবিন। এর প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার
(১৭ আগস্ট) অভিযুক্ত ডাক্তার সুমনার ডাক্তারি সনদ বাতিল পূর্বক তার বিরুদ্ধে আইনগত
ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানিয়ে বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল বরাবর আবেদন
করেছেন তিনি।
আবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, ডাঃ সুমনা ইসলাম
নামে একজন প্রতারক নারীর সাথে আমার পরিচয় হয়। সে রাশিয়ার পিপলস ফ্রেন্ডশিপ ইউনিভার্সিটি
থেকে ডিগ্রি নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ডাক্তার হিসেবে চাকরি করেন বলে পরিচয় দেন আমাকে।
সে সরকারি চাকরি নিয়ে দিতে পারবেন বলে আমাকে দেখা করতে বলতেন। আমি সরল বিশ্বাসে তার
সাথে দেখা করি। অনেক বড় বড় র্কমর্তাদের সাথে এবং প্রধানমন্ত্রীর একজন আত্মীয়ের সাথে
তার অনেক পরিচয় ও ঘনিষ্ঠতা আছে বলে সে জানায় এবং তাদের সাথে উনার ছবি দেখলে আমি বিশ্বাস
করি। আমাকে সীমান্ত স্কয়ারে রেস্টুরেন্টে দেখা করতে বলেন। তার সাথে অনেক ছেলে বন্ধু
থাকতো, আমাকেও সে তার বন্ধুদের সাথে ঘনিষ্ট হতে বলতেন।
সুমনা ডাক্তার পরিচয় দিলেও তার অনেক আচরণ
এবং বিলাসবহুল জীবনযাপন আমার কাছে খুব রহস্যজনক মনে হওয়ায় আমি খোঁজখবর নেওয়ার জন্যে
ঢাকা মেডিকেলে আমার পরিচিত জনদের মাধ্যমে খবর নিয়ে দেখি এই নামে কোন ডাক্তার নেই। পরবর্তীতে
তার একজন ঘনিষ্ট বন্ধু তরিকুল এর মাধ্যমে জানতে পারি তার মিথ্যাচার ও প্রচারণার মাধ্যমে
বিলাসী জীবন যাপনের কথা।
তিনি আবেদনে আরও উল্লেখ করেন, সুমনা ইসলাম
ডাক্তার পরিচয় বহন করে বিভিন্ন মানুষের সাথে প্রতারণা করে চলেছেন। তার মতো আরো ভুক্তভোগী
ছেলে ও মেয়ে রয়েছে যারা তার চক্রে আবদ্ধ হয়ে রয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সুমনা ইসলামের বাড়ি
পিরোজপুরের ইন্দুরকান্দি উপজেলার নলবুনিয়া গ্রামে। তার বাবার নাম নুরুল ইসলাম (মৃত)। তিনি
পেশায় ছিলেন একটি সরকারি অফিসের তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী। সুমনার বড় ভাই মৃত রেজাউল
ইসলাম পিরজপুর জেলা ছাত্রদলের নেতা ছিলেন।
জমি দখল ও ভাংচুরের অভিযোগে মামলাও
রয়েছে সুমনার বিরুদ্ধে। ২০১৫ সালে জিয়ানগরে মাদ্রাসার ভবন ভাংচুর ও শিক্ষার্থীদের ওপর
হামলার ঘটনার ৫ দিন পর ৭৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। সাঈদীর যুদ্ধাপরাধ মামলার সাক্ষী
উপজেলার নলবুনিয়া গ্রামের আ. হালিম খলিফ ওরফে বাবুল পণ্ডিত বাদী হয়ে পিরোজপুর চিফ জুডিসিয়াল
ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে রেজাউল ইসলাম ও সুমনা ইসলামসহ ১৬ এবং অজ্ঞাতপরিচয় ৫০-৬০ জনের
বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। ঘটনাটি তখনকার সময়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।
এ সকল অভিযোগের বিষয়ে জানতে ডাঃ সুমনার
সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ আনা হয়েছে সেগুলো মিথ্যা।
আমি এমন কোন কাজ করিনি। এছাড়া বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল এর সদস্যপদ আছে
জানিয়ে তিনি বলেন, আমার সদস্য পদ এবং কোথায় প্রাকটিস করি এ সম্পর্কে কোন তথ্য দিতে
চাই না।