চট্টগ্রামের মোট ১৬টি আসনে মোট মনোনয়নপত্র জমা পড়েছিল ১৪৮টি। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ২ দিনে ৮৮টির মধ্যে বৈধ হয়েছে ৭৪টি এবং বাতিল হয়েছে ১৪টি।
অন্যদিকে, বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে ৬০টির মধ্যে বৈধ হয়েছে ৪৪টি এবং বাতিল হয়েছে ১৬টি মনোনয়নপত্র। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামে মনোনয়ন পত্র যাচাই বাছাইয়ের দ্বিতীয় দিনে ১২ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন। এতে বাতিল হওয়া ১২ জনের মধ্যে সাতজনই স্বতন্ত্র প্রার্থী।
চট্টগ্রামের ১৬ আসনে ২৩ জন স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ মোট ৩০ জনের মনোনয়ন অবৈধ ও ১১৮ জনকে বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে বাতিল হওয়া প্রার্থীরা তাদের মনোনয়ন বৈধতার জন্য আপিল করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।
সোমবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে দ্বিতীয় দিনের মতো চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় ও জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে মনোনয়ন যাচাই বাছাইয়ের কাজ শুরু হয়।
মনোনোয়ন অবৈধ ঘোষণা- চট্টগ্রাম মীরসরাই সংসদীয় আসনে একজন, ফটিকছড়িতে তিনজন, সন্দ্বীপে দুইজন, সীতাকুন্ডে চারজন, হাটহাজারীতে দুইজন, রাউজানে একজন, বোয়ালখালীতে পাঁচজন, ডবলমুরিংয়ে চারজন এবং বন্দর-পতেঙ্গায় একজন, পটিয়ায় তিনজন, সাতকানিয়াতে দুইজন এবং বাঁশখালীতে দুইজন আছেন।
সকালে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম ৭, ১২, ১৪, ১৫ ও ১৬ আসনের মনোনয়ন যাচাই বাছাইয়ে চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া) আসনের সাত জনের সকলের প্রার্থীতা বৈধ হয়।
চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনে তিন প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করা হয়। এর মধ্যে এক শতাংশ ভোটারের তথ্যে গরমিলের অভিযোগে স্বতন্ত্র প্রার্থী ইলিয়াস মিয়া ও গোলাম কিবরিয়া চৌধুরীর মনোনয়ন বাতিল করা হয়। বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের প্রার্থী এম এ মতিনের বিদ্যুৎ বিল বাকি থাকায় মনোনয়ন বাতিল হয়।
বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে চট্টগ্রাম-৯ ও ১০ আসনের মনোনয়ন বাছাইয়ের কাজ শুরু হয়। চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি-বাকলিয়া) আসনে নয়জনের সকলের প্রার্থীতা বৈধতা পেয়েছে। তবে মনোনয়ন যাচাই-বাছাইয়ে চট্টগ্রাম-১০ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও নগর যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ফরিদ মাহমুদের মনোনয়নপত্র বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এক শতাংশ ভোটারের নাম ও স্বাক্ষর জমা দিতে হয় মনোনয়নপত্রের সঙ্গে। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. ওসমান গনি ও ফয়সাল আমীন এবং বিএনএফের মঞ্জুরুল ইসলামের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।
চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনে ভোটারের তালিকায় গড়মিল থাকায় দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী এম এ মোতালেব ও আ ম ম মিনহাজুর রহমানের মনোনোয়ন অবৈধ ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মাহমুদুল ইসলামের বিরুদ্ধে ঋণখেলাপীর অভিযোগ থাকায় তার মনোনোয়ন বাতিল করা হয়। একই অভিযোগে ন্যাপের (মোজাফফর) প্রার্থী আশীষ কুমার সেনের মনোনোয়ন বাতিল করে রিটার্নিং কর্মকর্তা।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ও নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ‘গত দুইদিনে চট্টগ্রামের ১৬ জেলার প্রার্থীদের মনোনোয়ন যাচাই বাছাই করা হয়েছে। ৮৮ জনের মনোনোয়ন বাছাই করা হয়েছে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে। দুইদিনে ১৪ জনের মনোনোয়ন বাতিল বলে গণ্য হয়েছে। বাকি ৭৪ জনের মনোনোয়ন বৈধ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ভোটার সমর্থকদের তালিকায় গরমিল থাকায় মনোনয়নগুলো বাতিল করা হয়। এছাড়া রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের অনেকের ট্যাক্স রিটার্ন, বিদ্যুৎ বিলসহ বিভিন্ন কাগজের ঘাটতি দেখা যায়। যাদের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে তারা চাইলে নির্বাচন কমিশনে আপিল করতে পারবেন। ৫-৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ আপিল করা যাবে।