মহম্মদপুর (মাগুরা) প্রতিনিধি:
চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় জাহাজ ডুবির ঘটনায় স্থানীয় কোস্ট গার্ড মাগুরার মহম্মদপুরের নিখোঁজ ছয়জনের মধ্যে চারজনের লাশ উদ্ধার করে পরিবারের কাছে দিয়েছেন। শনিবার সকালে মহম্মদপুর উপজেলার নিজ নিজ এলাকায় নিহত চারজনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। বাকী দুইজনের লাশ এখনো পাওয়া যায়নি। তারা হলো- উপজেলার মন্ডলগাতি গ্রামের নূরুল হোসেন মোল্যার ছেলে জাহিদুল ও গোলাম রসূল মোল্যার ছেলে নূর মোহাম্মদ।
উদ্ধার হওয়া চার জনের মধ্যে একজন উপজেলার বাবুখালী ইউনিয়নের দাতিয়াদাহ গ্রামের আকরাম মোল্যার ছেলে মো: নাজমুল হাসান। বাকী তিনজনের দুইজন হচ্ছে উপজেলার পলাশবাড়ীয়া ইউনিয়নের মন্ডলগাতী গ্রামের নূরুল হোসেন মোল্যার ছেলে শিমুল এবং মো. খসরু বিশ্বাসের ছেলে সুরুজ। অন্যজন খলিশাখালী গ্রামের কামাল মোল্যার ছেলে মনির হোসেন।
গত (১১ অক্টোবর) মঙ্গলবার এমভি সুলতান সানজার নামের একটি পাথর বোঝাই জাহাজ বন্দরের বহিঃনোঙ্গরে আসার সময় এমভি আকিজ লজিস্টিক -২৩ নামের অপর একটি লাইটার জাহাজকে ধাক্কা দেয়। এতে এম ভি সানজার নামের জাহাজটি ঘটনাস্থলেই ডুবে যায়।
এ জাহাজে থাকা মহম্মদপুর উপজেলার মন্ডলগাতী, খলীশাখালী ও দাতিয়াদাহ গ্রামের ছয়জন নিখোঁজ হয়। এদের মধ্যে চারজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত পরিবারগুলোতে চলছে শোকের মাতম। সন্তান, স্বামী ও ভাইকে হারানোর আহাজারীতে এলাকা জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
জাহাজে কর্মরত উপজেলার যশোবন্তপুর গ্রামের মৃত্যু লুলু মিয়ার ছেলে রুবেল এবং খলিশাখালী গ্রামের কামাল মোল্যার ছেলে রবিউল ইসলাম সাঁতরে তীরে এসে প্রাঁণে বেঁচে যায়। তবে রবিউল ইসলাম নিজের ভাই মনিরকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছে।
অপরদিকে যশোবন্তপুরের রুবেল বলেন, আমরা পাথর বোঝাই জাহাজ নিয়ে পতেঙ্গা থেকে কর্ণফুলির দিকে যাচ্ছিলাম। কিন্তু পেছন থেকে অন্য একটি লাইটার জাহাজ আঘাত করে। সে সময় আমাদের জাহাজে মধ্যে মহম্মদপুরের ৮জন ছিলাম। আমার সঙ্গে রবিউল কুঁলে উঠলেও অন্য ৬জন আসতে পারেনি।
শনিবার সকালে সরেজমিনে উপজেলার মন্ডলগাতী ও খলিশাখালী গ্রামে নিহতদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তাঁদের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। সন্তান, স্বামী ও ভাইকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ছেন অনেকেই।
মন্ডলগাতি গ্রামের নিখোঁজ শিমুল ও জাহিদের মা ফাতেমা বেগম বলেন, 'আমার ছেলেরা বুধবার সকালে মোবাইল ফোনে কথা বলে কাজে গেছে। পরে কথা বলবে জানালেও আর কথা হয়নি। পরে জানলাম তাদের জাহাজ ডুবে গেছে। আমার এক মনির লাশ পায়ছি, আরেক মনিকে পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা এখন কি করে বাঁচবো।
একইভাবে অন্যান্যদের পরিবারে গিয়েও দেখা যায় প্রতিটি পরিবার শোকাগ্রস্থ। তাদের আহাজারীতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।