দক্ষিণ চট্টগ্রামের কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি। তিন দিন ধরে বিদ্যুৎ না থাকায় ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। এদিকে, দুদিনেও সচল হয়নি পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে থাকা চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক। এতে বান্দরবান ও কক্সবাজারের সঙ্গে চট্টগ্রামের যোগাযোগ এক প্রকার বন্ধ।
একদিকে তিনদিন ধরে বিদ্যুৎ নাই, অন্যদিকে নেটওয়ার্ক সমস্যায় চরম দুর্ভোগে দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষ। ফসলি জমি, মাছের প্রকল্প, পুকুর পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় ব্যাপক আর্থিক ক্ষতিও হয়েছে।
কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে চন্দনাইশ, সাতকানিয়া ও লোহাগাড়ার বিস্তীর্ণ এলাকা এখনও তলিয়ে। তিন উপজেলার মধ্যে সাতকানিয়ার কেরানীহাট, কেঁওচিয়া, বাজালিয়া, ঢেমশা, লোহাগাড়ার পদুয়া ও আমিরাবাদ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা এবং চন্দনাইশের ধোপাছড়ি, কসাইপাড়া, বড়পাড়া ও দোহাজারী পৌরসভার আশপাশের এলাকা সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত।
এসব এলাকার বিভিন্ন আঞ্চলিক সড়ক ডুবে যাওয়ায় যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। ফলে চট্টগ্রামের সঙ্গে বান্দরবান ও কক্সবাজারের যোগাযোগ একপ্রকার বিচ্ছিন্ন। এতে পানিবন্দি লক্ষাধিক মানুষ।
পানির কারণে দুদিন ধরে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ। ফলে বাধ্য হয়ে ভ্যানে করেই যাতায়াত করছে মানুষ।
রাজশাহী থেকে আসা ট্রাক ড্রাইভার সেলিম বলেন, ‘দুই দিন হয়ে গেল। পানির মধ্যে বসে আছি। কখন কক্সবাজার যাব কিছুই বুঝতে পারছি না। পানির কারণে সব দোকান বন্ধ। সেই কারণে খুব কষ্ট হচ্ছে।’
স্থানীয় কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘পানিতে ঘর-বাড়ি সব তলিয়ে গেছে। পরিবার নিয়ে স্কুলে আশ্রয় নিয়েছি। তাই মাছ ধরার চেষ্টা করছি।’
তিনদিন ধরে বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকা এবং নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে চরম ভোগান্তিতে এলাকার মানুষ। দেখা দিয়েছে সুপেয় পানি ও খাদ্য সংকটও।
চট্টগ্রাম শহর থেকে সাতকানিয়ায় পানিবন্দি পরিবারে খোঁজে যাওয়া সুমন বলেন, ‘তিন দিন ধরে নেটওয়ার্ক না থাকায় পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না। কোনো খবর না পেয়ে হাঁটা পথেই সাতকানিয়া যাচ্ছি।
এদিকে, বন্যায় তলিয়ে গেছে ফসলের ক্ষেত, মৎস্য প্রকল্প ও পুকুর। অবশ্য পাঁচ দিন পর বৃষ্টির প্রকোপ কিছুটা কমে আসায় বিভিন্ন জায়গা থেকে উপচেপড়া পানি নামতে শুরু করেছে। সেই সঙ্গে পুরো চট্টগ্রাম - কক্সবাজার সড়কে ভারী গাড়ি চলাচল শুরু না হলেও পানি কমতে থাকায় কিছু হালকা গাড়ি চলাচল শুরু করেছে।