চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প যানজট নিরসনে চট্টগ্রামের লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত প্রায় ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্পও শেষের পথে। ২০১৭ সালে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়।
বাণিজ্যিক রাজধানীতে রুপান্তরিত হতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম। সরকারের বিভিন্ন মেগা প্রকল্পের দ্রুত গতিতে নির্মাণ কাজও চলছে।চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের একাংশ খুলে দেওয়ার চিন্তা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে রেলওয়ের সাথে সৃষ্ট ভূমি সংক্রান্ত জটিলতার অবসান হয়েছে। বর্তমানে লালখান বাজার মোড়ে চলছে এক্সপ্রেসওয়ের কাজ। সেখানে একটি র্যাম্প নেমে আখতারুজ্জামান চৌধুরী ফ্লাইওভারের সাথে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের যোগসূত্র স্থাপন হবে।
লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ কাজ ৭৩ শতাংশের বেশি এগিয়েছে। শাহ আমানত বিমানবন্দর থেকে বন্দর এলাকার নিমতলা পর্যন্ত কাজ প্রায় শেষ। আগ্রাবাদ, দেওয়ানহাট, শেখ মুজিব সড়ক ও টাইগারপাস এলাকায় নির্মাণ কাজ চলমান আছে।টাইগারপাস ওভারব্রিজের পাশের কোনো কাজ করতে পারেনি সিডিএ। জায়গাটি নিয়ে সিডিএ’র সাথে রেলওয়ের জটিলতা তৈরি হওয়াতে সেখানে পাইলিং করতে পারেনি সংস্থাটি।
অবশেষে সেই জটিলতার অবসান ঘটেছে। জায়গাটির উপর দিয়ে এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ ও ল্যান্ডিং পয়েন্ট তৈরি করা হচ্ছে। লালখান বাজারের অংশের কাজ চলমান আছে। সেখানে একটি র্যাম্প যুক্ত হবে আখতারুজ্জামান চৌধুরী ফ্লাইওভারের সাথে।
সিডিএ প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের একটি র্যাম্প লালখান বাজারে নামবে, সেটি ফ্লাইওভারের সাথে যুক্ত হবে। এখন সে অংশের কাজ চলছে। ম্যাজিস্ট্রেট কলোনির সামনে থেকে শুরু করে টাইগারপাস পর্যন্ত অংশের কাজ চলছে। আগ্রাবাদ থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত কাজ এগিয়ে নেয়া হচ্ছে। অন্য কাজগুলো অনেকটা এগিয়েছে।আশা করছি, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ করা সম্ভব হবে।
শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত সাড়ে ১৬ কিলোমিটার দৈর্ঘের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটির র্যাম্প ও লুপসহ মোট দৈর্ঘ হবে ২০ কিলোমিটার। চার লেনের এই এক্সপ্রেসওয়ের প্রশস্ততা হবে ৫৪ ফুট। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ৯টি এলাকায় ২৪টি র্যাম্প (গাড়ি ওঠানামার পথ) থাকবে। নগরীর টাইগারপাসে চারটি, আগ্রাবাদে চারটি, বারিক বিল্ডিং মোড়ে দুটি, নিমতলী মোড়ে দুটি, কাস্টমস মোড়ে দুটি, সিইপিজেডে চারটি, কর্ণফুলী ইপিজেডে দুটি, কাঠগড়ে দুটি, পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত এলাকায় দুটি র্যাম্প থাকবে।
উল্লেখ্য, মূল শহর থেকে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের যাত্রাপথের দূরত্ব কমাতে সিডিএ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। ২০১৭ সালের ১১ জুলাই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটির অনুমোদন দেওয়া হয়। ব্যয় ধরা হয় ৩ হাজার ২৫০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। প্রকল্পটি যৌথভাবে বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স-র্যাঙ্কিনকে। ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকল্পের পিলার পাইলিং কাজের উদ্বোধন করেন।শুরুতে প্রকল্পের মেয়াদ ২০২০ সালের জুন থেকে বাড়িয়ে ২০২১ সালের জুন করা হয়।
তারপর আরও এক বছর বাড়ানো হয়। সবশেষ তা বাড়িয়ে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়েছে। একই সাথে এক্সপ্রেসওয়ের অ্যালাইনমেন্ট পরিবর্তন, নতুন করে ভূমি অধিগ্রহণ, টোল প্লাজা নির্মাণ, সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনসহ সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করে কন্ট্রোল টাওয়ার নির্মাণ, বিভিন্ন পয়েন্টে ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ, সাউন্ডপ্রুফ ব্যারিয়ার স্থাপন ও বৈদ্যুতিকপুল স্থানান্তরসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ধারণার চেয়ে খরচ বেড়ে যাওয়ায় প্রকল্প ব্যয় ৩৬ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে।