ঈদের তৃতীয় দিনেও চরফ্যাশন উপজেলার পর্যটন স্পটগুলোতে পর্যটকের ঢল লক্ষ্য করা গেছে। প্রকৃতির এক অপরূপ নৈসর্গিক সৌন্দর্যের পর্যটন নগরী দ্বীপজেলা ভোলার চরফ্যাশন উপজেলা।এখানেই রয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সুউচ্চ দৃষ্টিনন্দন জ্যাকব ওয়াচ টাওয়ার,দর্শনীয় ফ্যাশন স্কয়ার, শেখ রাসেল শিশু ও বিনোদন পার্ক, খামার বাড়ি ,ম্যানোগ্রোভ বনাঞ্চলে মিনি সুন্দরবন খ্যাত চর কুকরী-মুকরী, লাল কাকড়ার দ্বীপ ঢালচরের তারুয়ায় সমুদ্র সৈকত ,খেজুর গাছিয়া মিনি কক্সবাজার এবং মেঘনার কোলঘেষা মনোরম পরিবেশে গড়ে ওঠা স্পট বেতুয়া প্রশান্তি পার্ক।
এ সব পর্যটন কেন্দ্রে ঈদের দিন থেকে আজ ইদের তৃতীয়দিনেও ছুটছে বিনোদন প্রেমী মানুষেরা। ঈদুল ফিতরের দীর্ঘ ছুটিতে গ্রামে আসা মানুষেরা এসব দর্শনীয় স্থানে ঘুরছে।ফলে পর্যটকদের ঢল বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে।
ঈদের ছুটিতে বিনোদনের আশায় এসব জায়গায় পরিবার-পরিজন, বন্ধুদের নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ভ্রমণপ্রিয় মানুষ। শুধু স্থানীয়রাই নন, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ পর্যটন স্পটগুলোতে আসছেন বলে জানা গেছে।
জেলা সদর থেকে প্রায় ৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণে চরফ্যাশন উপজেলা। এ উপজেলায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সর্বাধুনিক ও সু-উচ্চ জ্যাকব ওয়াচ টায়ার রয়েছে।
১৮ তলা বিশিষ্ট এ টাওয়ারটি দেশের মধ্যেও সবচেয়ে উঁচু টাওয়ার। দৃষ্টিনন্দন জ্যাকব টাওয়ারটি বারবার পর্যটকদের নজর কাড়ে।দৃষ্টিনন্দন এই টাওয়ার বর্তমানে জেলার সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিনোদন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।তাইতো এখানে এলেই মুগ্ধতা পায় বিনোদন ও ভ্রমণপ্রিয় মানুষেরা।
এই টাওয়ারের পাশেই ফ্যাশন স্কয়ার। এখানে রয়েছে আরেক দৃষ্টিনন্দন শেখ রাসেল শিশু ও বিনোদন পার্ক। ঈদ উপলক্ষ্যে এসব স্থাপনাকে সাজানো হয়েছে অপরূপ সাজে। ফলে মানুষ বাড়তি আনন্দ পাচ্ছেন।তাই ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের ঢল নেমেছে। দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন ভ্রমণপ্রিয় মানুষরা।
সৌন্দর্যে ঘেরা চরফ্যাশন শহর থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে গেলেই দেখা মিলবে প্রকৃতির এক মনোরম পরিবেশ বেতুয়া প্রশান্তি পার্ক। ছুটির দিন ছাড়াও ঈদের সময় মানুষের সমাগম হয়। তার ব্যতিক্রম হয়নি এবারও। পর্যটকদের ঢল খামার বাড়িতেও। সেখানেও ভ্রমণ পিপাসুদের ঢল।
বেতুয়া প্রশান্তি পার্কে দেখা যায়, কয়েক হাজার মানুষের ঢল। কেউ পরিবার-পরিজন,বন্ধু-বান্দব, কেউ বা প্রিয় মানুষটিকে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ছবি তুলছেন,স্পীড বোড যোগে সমুদ্রে আনন্দ উন্মাদনায় মেতে উঠতে দেখা গেছে। অন্যদিকে, পর্যটকদের জন্য মটর সাইকেল, বোরাক, নসিমন, মাইক্রোবাস,বাস, পিক-আপ ভ্যান গাড়ি যেন মুহুর্ত থেমে নাই এ প্রান্ত হতে ঐ প্রান্তে।
ঘুরতে আসা দর্শনার্থী মো.সাইফুল ইসলাম জানান, জ্যাকব টাওয়ারের উপড়ে উঠে বাইনোকুলারের মাধ্যমে বঙ্গোপসাগরের জেলেদের মাছ ধরার দৃশ্য, চরকুকরী-মুকরীর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সঙ্গে হরিণের দৃশ্য মনে হয় কাছে থেকেই উপভোগ করেছি। পরিবার-পরিজন নিয়ে চরফ্যাশন ঘুরতে এসে ভালোই লাগল।
বেতুয়া প্রশান্তি পার্কে ঘুরতে আসা নাইমুর রহমান বলেন, ‘পরিবার নিয়ে এখানে ঘুরতে এসেছি অনেক ভালো লাগছে।
বোরহানউদ্দিন থেকে আসা দর্শনার্থী তানজিলা রহমান (মাহি) বলেন, ‘আগে বেতুয়া প্রশান্তি পার্কের কথা শুনলেও কখনও আসা হয়নি। ঈদের ছুটিতে এবার প্রথম এসেছি বেতুয়া পার্কে, খুব ভালো লাগছে।
চরফ্যাশন থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মোরাম হোসেন বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দর্শনার্থীরা এখানে আসেন। দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা রক্ষায় পুলিশ প্রতিদিন টহল দিচ্ছে।
চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল নোমান রাহুল বলেন, ‘উপজেলার বিনোদন স্পটগুলোতে সকাল-বিকেল অনেক দর্শনার্থী ঘুরতে আসেন। বেতুয়া প্রশান্তি পার্কটি উন্মুক্ত থাকায় সেখানে দর্শনার্থীদের ভিড় একটু বেশি। দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা রক্ষায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।