জনগণকে চকচকে
চাল বর্জন করে পুষ্টিগুণসম্পন্ন চাল খাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র
মজুমদার। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘বাংলাদেশে ফোর্টিফাইড চালের বাণিজ্যিক
যাত্রা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
খাদ্যমন্ত্রী
বলেন, বাংলাদেশ সরকার পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পরিকল্পনা নিয়েছে। অষ্টম পঞ্চবার্ষিক
পরিকল্পনা থেকে শুরু করে আরও যে নীতিগুলো আছে, তার সবকটিতেই পুষ্টি নিশ্চিত করার বিষয়টি
অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন,
‘কৃষি
গবেষকরা উন্নতজাতের জাত উদ্ভাবন করায় দানাদার খাবারসহ মাছ-মাংসে বাংলাদেশ এখন স্বয়ংসম্পূর্ণ।
দেশের চাল থেকে আগে প্রয়োজনীয় ভিটামিন পাওয়া যেত। তখন মাছ-মাংসে স্বয়ংসম্পূর্ণ ছিলাম
না। এখন কেন চালে অনুপুষ্টি মেশাতে হচ্ছে, তা ভেবে দেখতে হবে।’
মানুষ পুষ্টিহীন
সিল্কি চাল খেতে পছন্দ করছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এর ফলে মানুষের মধ্যে পুষ্টিহীনতা
লক্ষ করা যাচ্ছে। চকচকে চাল না খেতে সচেতনতা বাড়াতে হবে। চকচকে চালকে না বলতে হবে।
চাল চকচকে করতে গিয়ে বছরে প্রায় ১৬/১৭ লাখ টন ঘাটতি হয়। আবার চাল হয়ে যায় পুষ্টিহীন।
তিনি বলেন,
পুষ্টি চাল যাতে সাধারণ মানুষ বাজার থেকে কিনতে পারে, সে জন্য পুষ্টি চাল উৎপাদন ও
বাজারজাত করার জন্য বেসরকারিভাবে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ও চালকল মালিকদের উদ্যোগী হওয়া
প্রয়োজন। তাদের উদ্যোগ ও বিনিয়োগ ছাড়া পুষ্টি চাল ভোক্তা পর্যায়ে সহজলভ্য করা সম্ভব
হবে না।
ওই সময় তিনি
বেসরকারি চাল ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ও চালকল মালিকদের পুষ্টিচাল উৎপাদন ও বাজারজাতকরণে
উদ্যোগী হওয়ার এবং দাম ভোক্তার নাগালের মধ্যে রাখার আহ্বান জানান তিনি।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের
সচিব মো. ইসমাইল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী
কমিটির সদস্য মো. আতিউর রহমান আতিক, খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. শাখাওয়াত হোসেন
ও জাতিসংঘ বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি বাংলাদেশের রেসিডেন্ট রিপ্রেজেনটেটিভ ও কান্ট্রি ডিরেক্টর
ডম স্কেলপেলি বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন। উদ্বোধন ঘোষণার পরে খাদ্যমন্ত্রী পুষ্টিচালের
বিভিন্ন স্টলে ঘুরে দেখেন।
প্রসঙ্গত, পুষ্টি
চালে যুক্ত করা হয়েছে আয়রণ, জিঙ্ক, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি-১, ফলিক অ্যাসিড। সাধারণ
ভোক্তা পর্যায়ে এই চাল সহজলভ্য করার জন্য আপাতত পাঁচটি প্রতিষ্ঠান ঢাকা, খুলনা, রাজশাহী,
চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিক্রয়কেন্দ্র ও সুপার শপে সরববরাহের উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে তারা
ঢাকা মহানগরের মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, কারওয়ান বাজার, আগোরা ও স্বপ্ন সুপারশপ, চালডাল
ও মেট্রিক্স বাজার অনলাইন মার্কেটসমূহে পরীক্ষামূলক বাজারজাত করেছে।