গত বছরের ২৩
জুন কসবা থানার অন্তর্গত রাজডাঙায় একটি টিকা-শিবির থেকে কোভিড প্রতিষেধক নিয়েছিলেন
কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও সাংসদ মিমি চক্রবর্তী। ভুয়া টিকা নেওয়ার তিন দিন পর থেকেই
তার শরীরে জলশূন্যতার সৃষ্টি হয়েছিল। রক্তচাপ নেমে যাওয়ার পাশাপাশি পেটে যন্ত্রণা শুরু
হয়। ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়েন এই সাংসদ।
পরে মিমি খেয়াল
করেন টিকা নিলেও তার ফোনে প্রতিষেধক প্রাপ্তি সংক্রান্ত কোনো তথ্য আসেনি। এরপরেই কসবা
থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।
মিমি জানান,
নিজেকে আইএএস অফিসার এবং কলকাতা পৌরসভা যুগ্ম-কমিশনার হিসেবে পরিচয় দিয়ে দেবাঞ্জন দেব
নামে এক ব্যক্তি প্রতিষেধকের জাল শিবির চালাচ্ছেন। মিমির অভিযোগের ভিত্তিতেই দেবাঞ্জন
দেবকে গ্রেপ্তার করে কসবা থানা।
অভিনেত্রীর
ভাষ্য, ভাগ্যিস সেদিন আমি টিকা নিতে গিয়েছিলাম! তা না হলে এই প্রতারক হয়তো ধরাই পড়ত
না। আমি তখন তৎপর না হলে হয়তো আজও সে (দেব) ওই শিবির চালিয়ে যেত। তখন সরব হয়েছিলাম
বলেই এত বড় প্রতারণা-কারবার প্রকাশ্যে এসেছে। বহু মানুষের প্রাণ বেঁচেছে।
এদিকে জাল টিকা
কারবারে প্রধান অভিযুক্ত দেবাঞ্জন দেব পুলিশি জেরার মুখে জানিয়েছেন, কসবার শিবিরে কোভিশিল্ড
কিংবা কো-ভ্যাকসিন টিকা দেওয়া হয়নি। সেখানে অ্যামিক্যাসিন ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে, যা
পৌরসভার নাম করে বাগরি মার্কেট থেকে কিনেছিলেন তিনি। তার কসবার অফিসেই কোভিশিল্ডের
নকল মোড়ক ছাপানো হতো। পরে ওই ইনজেকশনের ভায়ালে তা বসিয়ে দিতেন দেবের চার কর্মী! এমনকি
ভবিষ্যতে চড়া দামে বিক্রির জন্য প্রায় ২৫ লাখ রুপির মাস্ক, স্যানিটাইজার বেআইনিভাবে
মজুত করে রেখেছিলেন তিনি।
দেবের এমন স্বীকারোক্তির
পর তার অফিস এবং বাসা তল্লাশি করে ভুয়া পরিচয়পত্র, কলকাতা পৌরসভার নকল সিলমোহর, কাগজপত্র,
তার ব্যবহৃত টয়োটা গাড়ি উদ্ধার করা হয়। এমনকি নিজের প্রকৃত পরিচয় গোপন রাখতে গাড়িটিতে
নীল বাতি, পতাকা ব্যবহার করতেন তিনি। তার গাড়ির পেছনের কাঁচে লাগানো থাকত রাজ্য সরকারের
বিশেষ স্টিকার।