আজঃ মঙ্গলবার ১৪ মে ২০২৪
শিরোনাম

চিচেন ইতজা: হারিয়ে যাওয়া মায়ান শহর

প্রকাশিত:শনিবার ০৪ জুন ২০২২ | হালনাগাদ:শনিবার ০৪ জুন ২০২২ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

মেক্সিকোর ইয়ুকাতান পেনিনসুলাতে অবস্থিত মায়ান শহর চিচেন ইতজা। মেক্সিকোর গুরুত্বপূর্ণ টুরিস্ট অ্যাট্রাকশন হলেও সক্রিয় প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান হিসেবেও এর গুরুত্ব কম নয়। চিচেন ইতজা থেকে এখনও মায়ান সংস্কৃতি এবং সভ্যতা সম্পর্কে বিভিন্ন অজানা তথ্যের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে। মায়া সভ্যতা নিয়ে আগের লেখায় চিচেন ইতজার উল্লেখ থাকলেও এবার বিস্তারিত ভাবে জানবো চিচেন ইতজা সম্পর্কে।

কোথায় অবস্থিত চিচেন ইতজা?                                      

মেক্সিকোর ইউকাতান পেনিনসুলার রিসোর্ট শহর ক্যানকুন  থেকে ১২০ মাইল দূরে অবস্থিত ছিল চিচেন ইতজা। চিচেন ইতজা নামটির উৎপত্তি ঘটেছে মায়ান ভাষার পরিভাষা থেকে যার অর্থ ইতজাদের কুয়া মুখে। ইতজারা ছিল মায়ানদের এক আদিবাসী গোষ্ঠী যারা ছিল ইউকাতান পেনিনসুলার উত্তর অংশে, যেখানে শহরটি অবস্থিত ছিল, সেখানের শক্তিশালী এক জনগোষ্ঠী। শহরটির নামের মধ্যে যে কুয়ার কথা উল্লেখ আছে তা নির্দেশ করে ভূগর্ভস্থ কিছু নদীকে যেগুলো পুরো এলাকা জুড়ে প্রবাহিত হত এবং এই নদীগুলোই ছিল শহরের মূল পানির উৎস। এই পানির উৎসই চিচেন ইতজা শহরের অবস্থানকে যথাযথ করে তুলেছিল। চিচেন ইতজার প্রাচীন ইতিহাস এখনও স্পষ্ট না, তবে, এই বিষয়টি স্পষ্ট যে, ক্লাসিক পিরিয়ডের সময় ( ২৫০ খ্রিস্টাব্দ- ৯০০ খ্রিস্টাব্দ) এই শহর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তিওতিহুয়াকানের পতনের পর সেখানকার জনগণ মেসোআমেরিকাতে এসে বসতি স্থাপন করে বলে ধারণা করা হয়, এবং তখনই তারা মায়ান গোষ্ঠী ইতজাদের সংস্পর্শে আসে। দ্বিতীয় পর্যায়ে এই শহর গঠিত হয় যখন টোলটেক সভ্যতা দ্বারা ইতজা গোষ্ঠী প্রভাবিত হয়।

চিচেন ইতজা ইসলা ক্যারিটোস বন্দর যুক্ত একটি সমৃদ্ধশালী বাণিজ্যকেন্দ্র ছিল এবং এর প্রমাণ মেলে মধ্য আমেরিকায় অন্যান্য এলাকার পণ্যের সন্ধান পাওয়ার মাধ্যমে- উত্তরের টারকুইস, দক্ষিণ থেকে সোনার ডিস্ক এবং তেহুয়ান্তেপেক এর ইস্থমাস থেকে কাঁচের গোলক সদৃশ আগ্নেয়শিলা। চিচেন ইতজাতে কোকো চাষ হত এবং সম্ভবত উত্তর দিকের উপকূলবর্তী এলাকার লবণ তৈরির কেন্দ্রগুলোও এখান থেকে পরিচালিত হত।

কখন গড়ে উঠেছিল চিচেন ইতজা?

চিচেন ইতজার ইতিহাস নিয়ে যারা গবেষণা করছে, তাদের মধ্যে চিচেন ইতজা কবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং কিভাবে ধাপে ধাপে এই শহরের উন্নয়ন ঘটেছিল তা নিয়ে মতভেদ রয়েছে। কারো মতে, চিচেন ইতজা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে। কিছু গবেষণা বলে, চিচেন ইতজার প্রতিষ্ঠাকাল ৪০০ খ্রিস্টাব্দের শুরুর দিকে আর কিছু গবেষণা বলে এই শহরের সূচনা ঘটেছিল ৫ম শতাব্দীর মাঝখানে। আর যে বিষয়টি নিয়ে গবেষকদের মধ্যে খুব কম বিতর্ক হয় সেটা হল মায়ান সভ্যতার রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য চিচেন ইতজার গুরুত্ব। এই গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে চিচেন ইতজা উন্নীত হয় ৬০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে এবং সেই সময়ের মধ্যেই চিচেন ইতজা হয়ে ওঠে মায়ান বিশ্বের অন্যতম ক্ষমতাধর শহর। এই শহরের বিস্তার ছিল প্রায় দুই বর্গমাইল পর্যন্ত। শহরটি ব্যবসায়িক কেন্দ্র ও বাড়িঘরে পরিপূর্ণ ছিল এবং পাথরের তৈরি বিভিন্ন স্থাপনা ছিল। চিচেন ইতজা শহর থেকে কিছু দূরে এই শহরের নিজস্ব গ্রাম ছিল যেখানে অপেক্ষাকৃত ছোট ছোট বসতির অস্তিত্ব ছিল। চিচেন ইতজা শহরকে দুই অংশে ভাগ করা যায় এবং এই দুই অংশের উন্নয়ন ঘটে দুই সময়কালে। প্রথমাংশের অস্তিত্ব মেলে দক্ষিণ দিকে, যেখানে নেটিভ মায়াদের বসতি ছিল। এই বসতি স্থাপিত হয়েছিল এপিক্লাসিক সময়কালে (৮০০-১০০০ খ্রিস্টাব্দ)। মায়াদের এই বসতিতে যে সকল বাড়িঘর ছিল সেখানে পাক স্থাপত্যশৈলী এবং মায়ান হায়ারোগ্লিফ এর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। শহরটির নকশা অন্য অংশগুলোর থেকে উত্তর-দক্ষিণ অক্ষে বেশি বিস্তৃত ছিল যা সম্ভবত পানির উৎস জোটোলক সিনোটকে কেন্দ্র করে তৈরি করা হয়েছিল।      

শহরের দ্বিতীয় অংশের স্থাপনাকাল ধরা হয়েছে এপিক্লাসিক সময়ের পরে অর্থাৎ ১০০০-১২০০ খ্রিস্টাব্দ। শহরের এই অংশকে ঘিরে মেসো-আমেরিকান প্রত্নতত্ত্বে রহস্য এবং বিতর্কের অন্ত নেই। ফ্লোরেসেন্ট স্টাইলে নির্মিত এই শহর টলটেক সভ্যতার চিহ্ন বহন করে। গবেষকদের মতে, হয় টলটেক গোষ্ঠী চিচেন ইতজা দখল করেছিল, নয়তো ইতজারা তাদের সাম্রাজ্য রাজধানী টুলা থেকে আরও ১০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত করেছিল, অথবা দুই জাতির মধ্যে কোন ধরণের সমঝোতা হয়েছিল। শহরের দুই অংশের মধ্যে স্থাপত্যশৈলী এবং ভাস্কর্য শিল্পে মিল পাওয়া যায় যার মধ্যে রয়েছে ওয়ারিয়র স্তম্ভ, কুয়েতজাল সদৃশ পাখা যুক্ত র‍্যাটেল স্নেক, ভাস্কর্যের পোশাক, চাক্মুল (হেলান দেয়া ব্যক্তির আকারের বলির কাষ্ঠ), আটলান্টাইডস (দাঁড়িয়ে থাকা পুরুষের আকৃতির স্তম্ভ), নির্দিষ্ট কয়েকটি প্রাণীর আদলে নির্মিত স্তম্ভ, একটি যোম্পান্তিল (বলি দেয়া মানুষের খুলি রাখার তাক), ট্লালক (বৃষ্টি দেবতা) এর পূজা দেয়ার ধূপদানি, এবং গ্লিফে উল্লিখিত কিছু ব্যক্তিগত নাম যেগুলো দুই শহরেই খুঁজে পাওয়া গেছে কিন্তু যার কোনটিই মায়া সভ্যতার অংশ নয়।

চিচেন ইতজার পবিত্র কুয়া

চিচেন ইতজা শহরের উত্তর প্রান্তে বড় সিনোট (পবিত্র কুয়া) অবস্থিত আছে যা মায়ানদের আনুষ্ঠানিক এবং প্রত্নতাত্ত্বিক ক্ষেত্রে অপরিমেয় তাৎপর্য বহন করে। বহুল প্রচলিত আছে যে, সিনোটে নরবলি দেয়া হত। ১৯০০ সালের প্রথম দিকে সিনোটে ড্রেজিং করা হয় এবং ড্রেজিং করার পর সিনোট থেকে অসংখ্য মূল্যবান জিনিসপত্র পাওয়া যায় যেগুলো ছিল সোনা, টারকুইস এবং মূল্যবান পাথরের তৈরি। সেই কুয়াতে একই সাথে মানুষের দেহাবশেষও পাওয়া যায় যা সেই সময় নরবলি প্রথার উপস্থিতির প্রমাণ বহন করে। গবেষকেরা প্রাপ্ত দেহাবশেষে আঘাতের চিহ্ন পেয়েছে যা নির্দেশ করে যে, বলির শিকার মানুষগুলোকে কুপে ফেলে দেয়ার পূর্বে মেরে ফেলা হয়েছিল।

রাজধানী রূপে চিচেন ইতজা     

৯ম শতকের মধ্যে চিচেন ইতজা হয়ে ওঠে দে ফ্যাক্টো আঞ্চলিক রাজধানী এবং এর শাসক উত্তর এবং মধ্য ইউকাতান পেনিনসুলার বেশিরভাগ অংশ পরিচালনা করতো। উত্তর উপকূলের ইসলা ক্যারিটোস বন্দরের কারণে পুরো আমেরিকায় সোনা, মূল্যবান দ্রব্যাদিসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি-রপ্তানি করার জন্য চিচেন ইতজা হয়ে ওঠে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক কেন্দ্র। ধারণা করা হয়, ৫০,০০০ হাজারের বেশি মানুষ বাস করতো এই শহরে। তবে শহরের জনসংখ্যায় পার্থক্য হতে পারে কারণ ইউকাতান এর বাইরে থেকেও মানুষ চিচেন ইতজাতে আসতো বাস করার উদ্দেশ্যে।  

চিচেন ইতজার পতন

১৪৯২ সালে ক্রিস্টোফার কলোম্বাসের আমেরিকা আবিষ্কারের ঘটনার মধ্য দিয়ে মায়া সভ্যতার পতন হলেও গুরুত্বপূর্ণ শহর হিসেবে চিচেন ইতজা তার জৌলুস হারায় তারও অনেক আগে। প্রত্নতাত্ত্বিকদের মতে, চিচেন ইতজার রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপ  মায়াপান শহরে স্থানান্তরিত হয়। মায়াপান ছিল একটি নতুন শহর যা ১২০০ সালের মাঝামাঝি সময়ে চিচেন ইতজার দক্ষিণ এবং পশ্চিমে নির্মাণ করা হয়। কিছু প্রমাণ নির্দেশ করে যে, সম্ভবত সেই সময় চিচেন ইতজা লুঠতরাজের স্বীকার হয়েছিল যার ফলে চিচেন ইতজার পরিবর্তে মায়াপানকে রাজধানী করা হয়। তবে, যখন স্প্যানীয়রা ১৫২৬ সালে আমেরিকায় জাহাজ ভিড়ায়, তখনো শহরে এবং শহরের আশে পাশে বেশ কিছু বাড়ি ইতজা বাস করতো। আর এর ফলে স্প্যানীয়রা কিছুসময় চিচেন ইতজাকে রাজধানী হিসেবে ব্যবহারও করেছিল।

বর্তমানে চিচেন ইতজা   

১৮০০ শতকের মাঝামাঝিতে চিচেন ইতজা একটি অর্থপূর্ণ এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানে পরিণত হয় এবং আজ পর্যন্ত তেমনি রয়েছে। চিচেন ইতজা শহরের প্রথম দিককার বেশ কিছু নিদর্শন এখনও সগৌরবে দাঁড়িয়ে আছে। সেগুলো হল- এল ক্যাস্টিলো, দ্য গ্রেট বল কোর্ট, দ্য নর্থ টেম্পল, দ্য স্টিম বাথ, সেকবে নং-১, টেম্পল অব দ্য ওয়ারিওরস, গ্রুপ অব এ থাউজেন্ড কলামস, এল মারকেডো এবং এল ওসারিও। প্রতিবছর প্রায় ২০ লক্ষাধিক দর্শনার্থীদের পদচারনায় মুখরিত হয় চিচেন ইতজা। মায়ান ইতিহাস ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জানার জন্য চিচেন ইতজা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায়। গবেষকেরা এখনও চিচেন ইতজায় গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন মায়ান সভ্যতা সম্পর্কে নতুন কোন তথ্য আবিষ্কারের উদ্দেশ্যে।

নিউজ ট্যাগ: চিচেন ইতজা

আরও খবর
ইতিহাসে আজকের এই দিনে

শুক্রবার ২৬ জানুয়ারী ২০২৪

২৫ জানুয়ারি : ইতিহাসে আজকের এই দিনে

বৃহস্পতিবার ২৫ জানুয়ারী ২০২৪




মির্জাপুরে রাজশাহী সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন ১০ যাত্রী আহত

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

Image

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে রাজশাহীগামী সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। আজ শুক্রবার বিকেল পাঁচটার দিকে বঙ্গবন্ধু সেতু রেল সংযোগ সড়কে মির্জাপুর উপজেলার মহেড়া রেলস্টেশনে হাইড্রলিক ব্রেক থেকে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে।

এ সময় যাত্রীরা ভয়ে ট্রেন থেকে নামার সময় অন্তত ১০ জন আহত হন বলে জানা গেছে।

গরমের কারণে ট্রেনের হাইড্রলিক ব্রেক থেকে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে বলে মহেড়া রেলস্টেশন মাস্টার সোহেল খান জানিয়েছেন। ঘটনার প্রায় ১ ঘণ্টা ২৫ মিনিট পর রাজশাহীর উদ্দেশে ট্রেনটি ছেড়ে যায়।

এলাকাবাসী জানায়, ওই স্থানে বিকেল পাঁচটার সময় ঢাকাগামী কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনের ক্রসিংয়ের জন্য সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেন থামানো হয়। বগির কয়েকজন যাত্রী নীচে নেমে হাইড্রোলিক ব্রেকের স্থানে আগুন দেখতে পান। খবর পেয়ে স্টেশনের ও ট্রেনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।

এদিকে আগুন লাগার খবরে আতঙ্কিত যাত্রীরা ভয়ে ট্রেন থেকে লাফিয়ে নামার চেষ্টা করলে কয়েকজন যাত্রী আহত হন।

মহেড়া রেলস্টেশন মাস্টার সোহেল খান বলেন, সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনটি থামানোর সময় গরমের কারণে ট্রেনের হাইড্রলিক ব্রেক থেকে আগুন লাগে। যাত্রীরা তাৎক্ষণিক জানতে পারায় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেনি। ট্রেন থেকে লাফিয়ে নীচে নামার কারণে আহত কয়েকজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আহতে সংখ্যা ১০ জনের মতো হবে।

এ ঘটনায় সিরাজগঞ্জগামী সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস মির্জাপুর রেলস্টেশন থেকে কিছুটা বিলম্বে ছাড়ে।


আরও খবর



চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার রায় ৯ মে

প্রকাশিত:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আদালত প্রতিবেদক

Image

চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই ওরফে আব্দুল আজিজসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে করা মামলার রায় আগামী ৯ মে ঘোষণার দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল। সোমবার (২৯ এপ্রিল) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক আলী আহমেদ রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে এদিন ধার্য করেন।

মামলার আসামিরা হলেন- ট্রাম্পস ক্লাবের মালিক আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম, ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই ওরফে আব্দুল আজিজ, তারেক সাঈদ মামুন, সেলিম খান, হারুন অর রশীদ ওরফে লেদার লিটন, ফারুক আব্বাসী, আদনান সিদ্দিকী, দুই শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন ও আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী।

১৯৯৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর রাজধানীর বনানীতে ট্রাম্পস ক্লাবের নিচে সোহেল চৌধুরীকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তার ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী গুলশান থানায় মামলা করেন। সোহেল চৌধুরী নিহত হওয়ার পরপরই এ হত্যাকাণ্ডে চলচ্চিত্র প্রযোজক ও ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সম্পৃক্ততার অভিযোগ ওঠে।

মামলায় অভিযোগ থেকে জানা যায়- হত্যাকাণ্ডের কয়েক মাস আগে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে সোহেল চৌধুরীর কথা কাটাকাটি হয়। এর প্রতিশোধ নিতে সোহেল চৌধুরীকে হত্যা করা হয়। ঘটনার রাতে সোহেল তার বন্ধুদের নিয়ে ট্রাম্পস ক্লাবে ঢোকার চেষ্টা করেন। তাকে ভেতরে ঢুকতে বাধা দেয়া হয়। রাত আড়াইটার দিকে আবারও তিনি ঢোকার চেষ্টা করেন। তখন সোহেলকে লক্ষ্য করে ইমন, মামুন, লিটন, ফারুক ও আদনান গুলি চালান।

মামলার তদন্ত শেষে ১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার আবুল কাশেম ব্যাপারী ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করেন। ২০০১ সালের ৩০ অক্টোবর ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এর দুই বছর পর মামলাটির বিচার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ঢাকার দুই নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়।

মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আসামি আদনান সিদ্দিকী ২০০৩ সালের ১৯ নভেম্বর হাইকোর্টে রিট করেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ২০০৪ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুলসহ আদেশ দেন।

বিচারপতি মো. রূহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর তৎকালীন ডিভিশন বেঞ্চ শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ৫ আগস্ট রায় দেন। রায়ে রুলটি খারিজ করে দেয়া হয় এবং হাইকোর্টের দেয়া স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হয়। মামলায় ১০ জনের সাক্ষ্য শেষ হয়েছে।


আরও খবর



গরমে ঘাম হওয়া ভালো না খারাপ, যা বলছেন চিকিৎসক

প্রকাশিত:রবিবার ২১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২১ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জীবন ধারা ডেস্ক

Image

ঋতু পরিক্রময়া এখন গ্রীষ্মকাল। স্বাভাবিকভাবেই এখন গরম পড়বে। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে এ সময় গরমের তীব্রতা যেন একটু বেশিই হচ্ছে। ফলে নাজেহাল জনজীবন। এ সময় বাইরে বের হলেও কিছুক্ষণ পরপর পানি তৃষ্ণা পায়। বেশিক্ষণ আবার থাকাও যায় না। আর ঘাম তো রয়েছেই।

গরমে ঘামের কারণে শরীর থেকে প্রচুর পানি ও লবণ বের হয়। শরীর থেকে প্রয়োজনীয় লবণ বের হওয়ায়র ফলে এর ঘাটতি দেখা দেয়ার সম্ভাবনা থাকে। আবার পানিশূন্যতারও আশঙ্কা থাকে। এ সময় সচেতন থাকা জরুরি। কারণ, গরমে ঘাম থেকে যেমন শরীর থেকে দুর্গন্ধ বের হয়, একই সঙ্গে ঘাম মুছে না ফেললে তা থেকে জীবাণুর মাধ্যমে সংক্রমণ হওয়ার ঝুঁকি থাকে। সম্প্রতি গরমে ঘাম হওয়ার ব্যাপারে দেশর একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. মতলেবুর রহমান।

এ চিকিৎসক জানিয়েছেন, গরমে যাদের ঘাম হয় তাদের পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে। ঘাম অতিরিক্ত হলে ওরস্যালাইন বা ডাবের পানি পান করতে হবে। এসবের বিকল্প হিসেবে লবণ মিশ্রিত পানীয় পান করা যেতে পারে। অনেকেই মনে করেন গ্লুকোজ বা চিনি মিশ্রিত পানি পানে লবণের ঘাটতি পূরণ হয়। এটি আসলে ভুল ধারণা। অতিরিক্ত চিনি বা গ্লুকোজ গ্রহণ মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়।

তিনি বলেন, যারা ব্লাড প্রেশার, দীর্ঘমেয়াদি কিডনির রোগ বা হৃৎপিণ্ডের বৈকল্যজনিত সমস্যায় আক্রান্ত, তাদের বাড়তি লবণ খাওয়া যাবে না। এমন রোগীদের ক্ষেত্র বিশেষ আবার পানি পানেও বিধিনিষেধ থাকে। তবে অতিরিক্ত ঘাম হলে ডাবের পানি, ওরস্যালাইন বা সামান্য লবণ মিশ্রিত পানি পান করতে পারেন। ঘামের মাধ্যমে বের হওয়া পানি ও লবণের শূন্যতা পূরণ করতে হবে।

ত্বকের জন্য করণীয়: গরমের সময় ঘাম থেকে দুর্গন্ধ হয়। এ থেকে রক্ষা পেতে প্রসাধনী ব্যবহার করতে পারেন। তবে সেই প্রসাধনী অবশ্যই মানসম্মত হতে হবে। ঘামের সময় ঠান্ডা পানিতে কাপড় বা তোয়ালে ভিজিয়ে নিয়ে শরীর মুছতে পারেন। এমনটা সম্ভব না হলে যেকোনো শুকনা কাপড়, টিস্যু বা রুমাল দিয়েও ত্বক মুছতে পারেন। ভেজা কিছু দিয়ে শরীর মোছার পর আবার শুকনা কিছু দিয়ে ত্বক মুছা উচিত। কারণ, ত্বক যদি ভেজা থাকে তাহলে ত্বকে ছত্রাক সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

শরীরের কিছু কিছু জায়গায় লোম বেশি থাকে। সেসব স্থানে ঘামও বেশি হয়। এসব স্থান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। লোম ছোট রাখতে হবে। যে পোশাক পরিহিত অবস্থায় ঘাম হয়, ওই পোশাক যত দ্রুত সম্ভব বদলাতে হবে।

অতিরিক্ত ঘামলে করণীয়: ঘাম যদি অতিরিক্ত হয় তাহলে মাথাব্যথা, মাথা ঘোরানো, ক্ষুধামান্দ্য বা অবসন্নতার মতো উপসর্গ দেখা দেয়ার সম্ভাবনা থাকে। এমনটা হলে ঠান্ডা জায়গায় কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিন। যদি সম্ভব হয় ঠান্ডা পানি দিয়ে শরীর ধুয়ে নিন। মাথায়ও পানি ঢালতে পারেন। যদি এসব সম্ভব না হয় তাহলে পানি দিয়ে শরীর ও মাথা মুছে নিতে পারেন। আর এ অবস্থায় তরল খাবার বেশি খেতে পারেন।

নির্দিষ্ট কিছু হরমোনের তারতম্য থেকে ঘাম অতিরিক্ত হতে পারে। কখনো এমনটা মনে হলে একই তাপমাত্রায় আগের থেকে বেশি ঘাম ও বা ঘামের কারণে যদি লাইফস্টাইল ব্যাহত হয়, তাহলে অবশ্য বিশেষজ্ঞ কোনো চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। আবার যদি ঘাম হওয়ার কোনো কারণ না থাকার পরও ঘাম হয়, তাহলে হঠাৎ ঘেমে যাওয়া বা অতিরিক্ত ঘাম হওয়া অন্য কোনো অসুখের উপসর্গ হতে পারে। কারণ, রক্তে সুগার কমে যাওয়া বা হার্ট অ্যাটাক হলেও ঘাম হতে পারে। ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তের সুগার কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাদের অতিরিক্ত ঘাম হলে তাৎক্ষণিক চিনি মিশ্রিত পানি পান করাতে হয় এবং সুগার মাপতে হয়। এছাড়াও যেকোনো কারণে ঘামকে অস্বাভাবিক মনে হলে কালক্ষেপণ না করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।


আরও খবর



গাজীপুরে ফ্ল্যাট থেকে স্বামী-স্ত্রীর মৃতদেহ উদ্ধার

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
গাজীপুর প্রতিনিধি

Image

গাজীপুর শ্রীপুরের একটি বহুতল ভবনের ফ্ল্যাট থেকে স্বামী-স্ত্রীর মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সকালে উপজেলার মুলাইদ গ্রামের মো. ফারুক খানের বহুতল ভবনের নিচ তলার এক কক্ষ থেকে মৃতদেহগুলো উদ্ধার করা হয়।

নিহত মো. ইসরাফিল (১৭) শেরপুরের ঝিনাইগাতি থানার হলদি গ্রামের মো. মফিজুল হকের ছেলে ও মোছা. রোকেয়া খাতুন (১৫) ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ থানার পস্তারি গ্রামের আবুল কাশেমের মেয়ে।

জানা যায়, প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে গত ৭/৮ মাস আগে তারা পরিবারের অমতে বিয়ে করেন। শ্রীপুরের মুলাইদ গ্রামের মো. ফারুক হোসেনের বহুতল ভবনে ভাড়া থেকে ইসরাফিল স্থানীয় একটি ওয়ার্কশপে ও রোকেয়া স্থানীয় একটি কারখানায় কাজ করতেন।

নিহত রোকেয়ার ভাই মো. বোরহান উদ্দিন বলেন, ৭-৮ মাস আগে পরিবারের অমতে তারা বিয়ে করে। তাদের সম্পর্ক ভালোই চলছিল। সম্প্রতি ইসরাফিল তার বাবা-মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে বাড়ি থেকে চলে গিয়েছিল। পরে বৃহস্পতিবার তাদের বুঝিয়ে বাসায় আনা হয়েছিল। সকালে তাদের মৃত্যুর খবর পাই।

নিহত ইসরাফিলের বাবা মফিজুল হক জানান, পাশাপাশি ফ্লাটে বসবাস করতেন তারা। পরিবারের রান্নার কাজ তারা ইসরাফিলের ফ্লাটে করতেন। শুক্রবার সকালে ইসরাফিলের ফ্লাটের দরজা খোলা দেখতে পেয়ে ভেতরে যান এবং ইসরাফিলকে ওড়নায় পেঁচানো ঝুলন্ত অবস্থায় এবং রোকেয়ার মৃতদেহ খাটের ওপর বিছানায় দেখতে পান। পরে পাশ থেকে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে।

চিরকুটে লেখা ছিল, মা-বাবা আমাকে মাফ করে দিও, আমি তোমাদের সাথে থাকতে পারলাম না। আমার জান আমার জন্য ফাঁসিতে ঝুলেছে। তাই আমি থাকতে পারলাম না। আমি কাউকে দোষারোপ করি না। কারও কোনো দোষ নাই। আমার জান আমার জন্য অপেক্ষা করতাছে। সবাই ভালো থাকবা। মো. ইসরাফিল।

মা আমার পাশে রোকেয়ার কবর দিও মা। মা আমি জানি না আমার জান কেন ফাঁস দিল। তার জন্য সম্পন্ন আমি দায়ী। এতে কারও কোনো দোষ নাই।’

শ্রীপুর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সাখাওয়াত হোসেন জানান, খবর পেয়ে স্বামী-স্ত্রীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে প্রথমে স্ত্রী আত্মহত্যা করে। স্ত্রীর আত্মহত্যার বিষয়টি স্বামী সইতে না পেরে তিনিও আত্মহত্যা করেন। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।


আরও খবর



তীব্র গরমে ঢাবিতে অনলাইন ক্লাসের সিদ্ধান্ত

প্রকাশিত:রবিবার ২১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২১ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

Image

চলমান তাপপ্রবাহের কারণে অনির্দিষ্টকালের জন্য অনলাইন ক্লাসের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কর্তৃপক্ষ। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত অনলাইন ক্লাস চলবে।

আজ রবিবার (২১ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আদিষ্ট হয়ে জানাচ্ছি যে, সারাদেশের ওপর দিয়ে প্রবহমান তীব্র তাপদাহ (হিট ওয়েভ)-এর কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন ক্লাস অনুষ্ঠিত হবে।

উল্লেখ্য, বর্তমানে প্রচলিত ১০% অনলাইন ক্লাসের পরিবর্তে শতভাগ অনলাইন ক্লাস অনুষ্ঠিত হবে এবং পরীক্ষাসমূহ চলমান থাকবে।

এতে আরও বলা হয়, এক্ষেত্রে কোনো শিক্ষার্থী হল অথবা বাসার বাইরে আসতে চাইলে স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে নিম্নোক্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে সতর্কতার সাথে চলাফেরার জন্য পরামর্শ দেওয়া হলো।

সাদা বা হালকা রঙের ঢিলেঢালা সুতির পোশাক পরিধান করা, যথাসম্ভব ছায়াযুক্ত স্থানে থাকা, বাইরে যেতে হলে মাথার জন্য চওড়া কিনারাযুক্ত টুপি, ক্যাপ বা ছাতা ব্যবহার করা, বিশুদ্ধ পানি পান করা; প্রয়োজনে লবণযুক্ত তরল যেমন- খাবার স্যালাইন ইত্যাদি পান করা, তাপমাত্রা বৃদ্ধিকারী পানীয় যেমন- চা ও কফি পান থেকে বিরত থাকা।


আরও খবর